আন্তর্জাতিক

মধ্যপ্রাচ্য সংকট: ইরানের ইউরেনিয়াম মজুত ও ট্যাংকার আটক

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের মাত্রা বাড়ানো ও দক্ষিণ কোরিয়ার পতাকাবাহী ট্যাংকার আটক উপসাগরীয় অঞ্চলে নতুন সংকট সৃষ্টি করেছে।
পারস্য উপসাগরে দক্ষিণ কোরিয়ার পতাকাবাহী একটি ট্যাংকার আটক করে ইরান। ৪ জানুয়ারি ২০২০। ছবি: রয়টার্স

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের মাত্রা বাড়ানো ও দক্ষিণ কোরিয়ার পতাকাবাহী ট্যাংকার আটক উপসাগরীয় অঞ্চলে নতুন সংকট সৃষ্টি করেছে।

আজ মঙ্গলবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরান গতকাল সোমবার দেশটির ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের মাত্রা ২০ শতাংশে উন্নীত করার ঘোষণা দিয়েছে, যা ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তিতে উল্লেখিত মাত্রার চেয়ে অনেক বেশি।

একই দিনে পারস্য উপসাগরে পরিবেশ দূষণের অভিযোগে দক্ষিণ কোরিয়ার পতাকাবাহী রাসায়নিক পদার্থবাহী একটি ট্যাংকার আটকের কথাও জানিয়েছে দেশটির সংবাদমাধ্যম।

দুটি ঘটনাই ঘটেছে মার্কিন হামলায় ইরানের বিপ্লবী গার্ডের প্রধান জেনারেল কাশেম সোলাইমানি নিহতের এক বছর পূর্তির একদিন পর ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রেসিডেন্সি শেষ হওয়ার তিন সপ্তাহের কম সময়ের মধ্যে।

পারস্য উপসাগরে উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাম্প পেন্টাগনকে মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। এই রণতরীটি গত সপ্তাহেই সেই অঞ্চল ছাড়ার কথা ছিল।

ইরান সরকারের এক মুখপাত্র আলি রাবেই গতকাল রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ইরনাকে বলেছেন যে বিশেষজ্ঞরা ভূ-গর্ভস্থ ফোরদো পরমাণু কেন্দ্রে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধিকরণ ২০ শতাংশ করার কাজ শুরু করেছেন।

ইরান বর্তমানে ইউরেনিয়ম সমৃদ্ধ করছে ৪ দশমিক ৫ শতাংশ মাত্রায়। যা ২০১৫ সালের চুক্তিতে উল্লেখ করা ৩ দশমিক ৬৭ শতাংশ মাত্রার চেয়ে বেশি।

পরমাণু বোমা বানাতে ইউরেনিয়াম ৯০ শতাংশ সমৃদ্ধ করতে হয়। ইরান সব সময়ই বলে আসছে, পরমাণু বোমা বানানোর কোনো ইচ্ছা তাদের নেই।

জাতিসংঘের পরমাণু শক্তি সংস্থা আইএইএ’র মুখপাত্র ফ্রেড্রিক দাহল গত শুক্রবার সিএনএন’কে বলেছেন, ইরান ইউরেনিয়াম ২০ শতাংশ সমৃদ্ধ করার ইচ্ছার কথা সংস্থাটিকে জানিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের মাত্রা বাড়ানো ও ট্যাংকার আটকের নিন্দা করে বলেছে, ইরান গোপনে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করে আসছে। অতীতে তাদের বোমা বানানোর কর্মসূচির রেকর্ড রয়েছে।

ইরানের ছোড়া চ্যালেঞ্জ

ইরানের ঘটনাগুলো জো বাইডেনের জন্যে চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারে বলে সিএনএন প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। বাইডেন আগামী ২০ জানুয়ারি ক্ষমতা গ্রহণের পর ইরানের সঙ্গে বিশ্বশক্তির সই করা পরমাণু চুক্তিতে ফিরে আসার যে ঘোষণা দিয়েছিলেন তা ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে বলেও প্রতিবেদনে মন্তব্য করা হয়েছে।

ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর ২০১৮ সালে পরমাণু চুক্তি থেকে সরে আসেন এবং ইরানের ওপর নতুন করে অবরোধ আরোপ করেন।

এরপর, ইরানের পার্লামেন্ট ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের মাত্রা বাড়িয়ে দেওয়া এবং অবরোধ তুলে না নেওয়া হলে আন্তর্জাতিক পরিদর্শকদের পরমাণু কেন্দ্র পরির্দশন বন্ধ রাখার বিষয়ে আলোচনা হয়।

গত নভেম্বরে আততায়ী হামলায় ইরানের প্রধান পরমাণু বিজ্ঞানী মোহসেন ফখরিজাদাহ নিহত হওয়ার প্রেক্ষাপটে সেই বিল পাস হয়।

ইরানের মেহের নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, ‘বিলটিতে বার্ষিক অন্তত ১২০ কেজি ২০ শতাংশ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম উৎপাদন করার এবং তা ইরানেই মজুদ রাখার কথা বলা হয়েছে।’

বাইডেনের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান গত রোববার সিএনএন’কে বলেছেন, নতুন প্রশাসন চুক্তিতে ফিরে আসবে যদি ইরান চুক্তির শর্ত মেনে চলে।

এরপর বাইডেন প্রশাসন ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র বিষয়ে ‘আলোচনা’ করবে বলেও তিনি জানিয়েছেন।

কিন্তু, গত মাসে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি গণমাধ্যমকে বলেছেন, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি নিয়ে কারো সঙ্গে আলোচনার কিছু নেই।

Comments

The Daily Star  | English

Cyber Security Agency exists only in name

In December 2018, when the Digital Security Agency was formed under the Digital Security Act, it was hoped that the cybersecurity of important government sites with critical citizen data such as the Election Commission’s national identity database and the Office of the Registrar of Birth and Death  would be robust.

8h ago