অনেক বিপদে আছি, চাপে আছি, রাতে আমার ঘুম হয় না: কাদের মির্জা

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি আবদুল কাদের মির্জা বলেছেন, ‘১৯৮২ সাল থেকে আমি জেল খেটে এসেছি। সুতরাং আমাকে জেলের ভয় দেখিয়ে কোন লাভ নেই।’
তবে তিনি চাপে আছেন জানিয়ে বলেন, ‘আমি অনেক বিপদে আছি, অনেক চাপে আছি, রাতে আমার ঘুম হয় না।’
বৃহস্পতিবার দিনভর কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট পৌরসভায় নির্বাচনী গণসংযোগের পথসভায় এসব কথা বলেন বসুরহাট পৌরসভার মেয়র।
এসময় তার সম্পদ ও আয়ের উৎস নিয়ে একটি দৈনিক সংবাদপত্রের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমার সম্পদের হিসাব নিতে হলে আগে শেখ হাসিনার সম্পদের হিসাব নিতে হবে। শেখ হাসিনার কি কোন ব্যবসা আছেনি? আমার সম্পদ ও আয়ের উৎস এলাকার হাজার হাজার জনগণ।’
আবদুল কাদের মির্জার এ বক্তব্যের একটি ভিডিও দ্য ডেইলি স্টার এর কাছে এসেছে।
পথসভায় তার সঙ্গে ছিলেন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খিজির হায়াত খান, সাধারণ সম্পাদক নূরনবী চৌধুরী, পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি জামাল উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক আজম পাশা চৌধুরী রোমেলসহ দলীয় নেতা কর্মীরা।
আবদুল কাদের মির্জা বলেন, 'নির্বাচন সামনে রেখে আজ আমার বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র চলছে। আমার প্রথম ও প্রধান লক্ষ্য আগামী ১৬ জানুয়ারির বসুরহাট পৌরসভা নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করা। এ নির্বাচনকে আমি আন্দোলনের অংশ হিসাবে নিয়েছি। আমার বিরুদ্ধে যতই ষড়যন্ত্র হোক না কেন আমি পিছপা হব না।’
তিনি নিজের মৃত্যুর আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ‘নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের এক নেতা টেন্ডারবাজি করে হাজার হাজার কোটি টাকা কামাচ্ছেন। এগুলো বলতে গেলে আমি খারাপ।’
এসময় টাকার বিনিময়ে অনুপ্রবেশকারীদের জেলা আওয়ামী লীগের বড় বড় পদে বসানো হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
বলেন, ‘আবু নাছের চৌধুরী একজন ভালো নেতা। ১৯৭৫ এর পর আওয়ামী লীগের আশ্রয়স্থল ছিল চৌধুরী বাড়ী। মুজিববাদী ছাত্রলীগ টিকিয়ে রেখেছিলেন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান সাহাব উদ্দিন। আজ সাহাব উদ্দিনকে জেলা আওয়ামী লীগের কোন পদ-পদবী না দিয়ে উপদেষ্টা করে রাখা হয়েছে। অথচ টাকার বিনিময়ে অনুপ্রবেশকারীদের জেলা আওয়ামী লীগের বড় বড় পদে বসানো হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘কোম্পানীগঞ্জ আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি বসুরহাট এলাকার বাসিন্দা প্রয়াত আলী ইমাম চৌধুরী লেবু বিক্রি করে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেছেন। কিন্তু জীবনে তিনি কিছুই পাননি। তার ছেলে শাহাদাৎ হোসেন চৌধুরী আজ নির্বাচন কমিশনার। বসুরহাট পৌরসভার ১৬ জানুয়ারির নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য আমি তাকে অনুরোধ করেছি। তিনি আগামী ১২ জানুয়ারি থেকে বসুরহাটে অবস্থান করবেন। ত্যাগী নেতাদের কথা না বললে ত্যাগী নেতার সৃষ্টি হবে না।’
গতকাল বুধবার বিকেলে বিভিন্ন পথসভায় তিনি বলেন, 'আমি ওয়াদা ভঙ্গের রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না। ওয়াদা ভঙ্গের সংস্কৃতি বন্ধ করতে চাই।'
তিনি অভিযোগ করেন, ‘আরও ২ বছর আগে বসুর হাট পৌরবাসীর ঘরে ঘরে গ্যাস পৌঁছে যাওয়ার কথা ছিল। এ নিয়ে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের পেট্রো বাংলার চেয়াম্যানের সঙ্গে কথা বলে গ্যাস সংযোগ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার মওদুদ আহম্মদের স্বজন (ভায়রা) প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক-ই এলাহী এ গ্যাস সংযোগ দিতে দেননি।'
তিনি বলেন, 'সেতুমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন আগামী ৩ মাসের মধ্যে বসুর হাট পৌর এলাকায় গ্যাস সংযোগ দেওয়া হবে।’
আরও পড়ুন-
ডেইলি স্টারকে যা বললেন ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই কাদের মির্জা
দল করলে সবাইকে দলের শৃঙ্খলা মেনে চলতে হবে: ছোট ভাইয়ের বক্তব্য প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের
Comments