অস্ত্র তাক করে রেখেছে, আমাকে মেরে ফেলতে পারে: কাদের মির্জা

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই আবদুল কাদের মির্জা বলেছেন, চারিদিকে বারুদের গন্ধ, অস্ত্র তাক করে রেখেছে, আমাকে মেরে ফেলতে পারে।
আবদুল কাদের মির্জা। ছবি: সংগৃহীত

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই আবদুল কাদের মির্জা বলেছেন, চারিদিকে বারুদের গন্ধ, অস্ত্র তাক করে রেখেছে, আমাকে মেরে ফেলতে পারে।

তিনি বলেন, ‘যে যে দল করেন, শেখ হাসিনাকে অপছন্দ করেন, আওয়ামী লীগকেও অপছন্দ করেন সমস্যা নেই, কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে হৃদয়ে ধারণ করবেন, না হলে আমরা অকৃতজ্ঞ জাতি হিসেবে বিশ্বে দরবারে পরিচিতি পাব।’

আজ শুক্রবার নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট পৌরসভার নির্বাচনী পথসভায় বক্তৃতা দেওয়ার সময় তিনি এসব কথা বলেন। সম্প্রতি দলীয় নেতাদের নানা অনিয়ম নিয়ে বক্তব্য দিয়ে আলোচিত হয়েছেন তিনি।

বসুরহাট পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের এই মেয়র প্রার্থী প্রশাসনের সমালোচনা করে বলেন, ‘গত নির্বাচনে শেখ হাসিনা প্রশাসনের লোকজনের কাছে ফল চেয়েছেন। অতি উৎসাহী প্রশাসনের লোকজন গাছসহ নেত্রীকে দিয়েছেন। এতে নেত্রীর ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে। প্রশাসনের লোকজন বেশি উড়তেছে, তাদের বিচার হওয়া উচিত।’

তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা ভাতের অধিকার নিশ্চিত করেছেন, কিন্তু ভোটের অধিকার এখনও নিশ্চিত হয়নি। আমি নেত্রীকে অনুরোধ করব, আপনি সিদ্ধান্ত নিন, মাদক ও নারী কেলেঙ্কারির সঙ্গে আওয়ামী লীগের কোনো নেতা জড়িত থাকতে পারবে না। নেত্রীকে বলব, মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করুন।’

নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি আবদুল কাদের মির্জা বলেন, ‘আমাদের পোষ্টার মাইজদি ও ফেনীর ষড়যন্ত্রকারীরা ছিঁড়ে ফেলেছে। বিএনপি ও জামায়াত আমার পোষ্টার ছিঁড়ে নাই। আমি আবারও বলছি, বৃহত্তর নোয়াখালীতে সুষ্ঠু নির্বাচনে হলে আওয়ামী লীগ ৩-৪টি আসন পাবে। বাকী আসনগুলোতে আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা হেরে যাবে, পালানোর পথ খুঁজে পাবে না।’

তিনি বলেন, ‘আমাকে এ কথাগুলো বলতে হবে, না বললে তারা সংশোধন হবে না। অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলতে হবে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলতে হবে, এগুলো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জানতে হবে। শেখ হাসিনা সাহসী নেত্রী, ১৭ বার তাকে মেরে ফেলতে চেয়েছিল। আল্লাহ তাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন।’

‘বিএনপি পিন্টুর মতো দুর্নীতিবাজ নেতাদের বিচার করেনি, আমার নেত্রী নিজের দলের দুর্নীতিবাজদের বিচার করে দেশবাসীকে দেখিয়ে দিয়েছেন। বিএনপি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে ১৯৯১ সালে ক্ষমতায় এসেছে, আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ ও ২০০৮ সালে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় এসেছে’, যোগ করেন তিনি।

আবদুল কাদের মির্জা বলেন, ‘আমাদের নেতা মো. শাহাব উদ্দিন দুই মেয়াদে উপজেলা চেয়ারম্যান। অথচ তিনি সরকারের সম্মানী ভাতা নেননি, সরকারি বাড়িতেও থাকেননি। এ সৎ ও নিষ্ঠাবান নেতাকে জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা বানিয়ে রাখা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আগামী তিন মাসের মধ্যে বসুরহাট পৌরসভায় গ্যাস সংযোগ দেওয়া হবে। সিরাজপুর ইউনিয়নের শাহজাদপুর ও হাবিবপুর থেকে সাড়ে সাত বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে দেওয়া হয়। তিনি মাস পর আমরা গ্যাস না পেলে শাহজাদপুর ও হাবিবপুরে গিয়ে গ্যাস বন্ধ করে দেব। আমি প্রথমে আমার কোম্পানীগঞ্জের স্বার্থ দেখব, বাকিটা পরে দেখা যাবে।’

তিনি বলেন, ‘এদেশে সোজা আঙুলে ঘি ওঠে না, আঙুল বাঁকা করতে হয়।’

আবদুল কাদের মির্জা আরও বলেন, ‘আমার নেতা ওবায়দুল কাদেরের ভাষায় বলতে চাই- যদি কাগজে লেখ নাম সে নাম মুছে যাবে, পাথরে লেখ নাম পাথর ক্ষয়ে যাবে, হৃদয়ে লেখ নাম সে নাম রয়ে যাবে। আগামী ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত আমার নাম আপনাদের হৃদয়ে লিখে রাখবেন।’

আসন্ন ১৬ জানুয়ারি বসুরহাট পৌর নির্বাচন উপলক্ষে আজ সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত পৌরসভার ৫, ৬, ৭ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডে নির্বাচনী পথসভা করেন আবদুল কাদের মির্জা।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহাব উদ্দিন, কোম্পানীগঞ্জ আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা খিজির হায়াত খান, সিনিয়র সহ-সভাপতি ইস্কান্দার হায়দার চৌধুরী বাবুল, সাধারণ সম্পাদক নুর নবী চৌধুরী, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক নাজিম, বসুরহাট পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি জামাল উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক আজম পাশা চৌধুরী রুমেলসহ দলীয় নেতা-কর্মীরা।

আরও পড়ুন:

অনেক বিপদে আছি, চাপে আছি, রাতে আমার ঘুম হয় না: কাদের মির্জা

ডেইলি স্টারকে যা বললেন ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই কাদের মির্জা

Comments

The Daily Star  | English

Labour bill put on the shelf

In an almost unheard-of move, President Mohammed Shahabuddin has sent a labour law amendment back to parliament for reconsideration, expressing concern over the proposed punishment of workers for wrongdoings.

6h ago