‘সাঈদ খোকনের ব্যক্তিগত অভিমত কোনো গুরুত্ব বহন করে না’
সাবেক মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকনের তোলা দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেছেন, ‘উনার ব্যক্তিগত অভিমত কোনো গুরুত্ব বহন করে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘কেউ যদি ব্যক্তিগত আক্রোশের বশবর্তী হয়ে কোনো কিছু বলে থাকেন, সেটার জবাব আমি দায়িত্বশীল পদে থেকে দেওয়াটা সমীচীন মনে করি না।’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আজ রোববার সকালে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
গতকাল দুপুরে হাইকোর্টের পাশে কদম ফোয়ারার সামনে আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে সাঈদ খোকন বলেন, দুর্নীতির কারণে শেখ ফজলে নূর তাপস মেয়র পদে থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, ‘তাপস মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করার পর থেকেই দুর্নীতির বিরুদ্ধে গলাবাজি করে চলেছেন। আমি তাকে বলবো রাঘব বোয়ালের মুখে চুনোপুঁটির গল্প মানায় না। দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন গড়তে হলে সর্বপ্রথম নিজেকে দুর্নীতিমুক্ত করুন। তারপর চুনোপুঁটির দিকে দৃষ্টি দিন। তাপস দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের শত শত কোটি টাকা তার নিজ মালিকানাধীন মধুমতি ব্যাংকে স্থানান্তরিত করেছেন। এই শত শত কোটি টাকা বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা লাভ হিসেবে গ্রহণ করেছেন এবং করছেন। এ ধরনের কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে মেয়র তাপস সিটি করপোরেশন আইন ২০০৯, দ্বিতীয় ভাগের দ্বিতীয় অধ্যায়ের অনুচ্ছেদ ৯(২) (জ) অনুযায়ী মেয়র পদে থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন’
‘অর্থের অভাবে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের গরিব কর্মচারীরা মাসের পর মাস বেতন পাচ্ছেন না। সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প অর্থের অভাবে বন্ধ হয়ে গেছে’— সাঈদ খোকনের এমন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তাপস বলেন, ‘এটা নিছক ভ্রান্ত কথা। এর বাস্তবিক কোনো ভিত্তি নেই।’
সাঈদ খোকনের দুর্নীতি নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। আপনি দায়িত্ব নেওয়ার এক বছরের মাথায় আপনার বিরুদ্ধে তিনি দুর্নীতির অভিযোগ আনলেন। এ বিষয়কে আপনি কীভাবে দেখছেন— জানতে চাইলে শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, ‘যদি কেউ উৎকোচ গ্রহণ করে, যদি কেউ ঘুষ গ্রহণ করে, যদি কেউ কোনো কাজ পাইয়ে দেওয়ার জন্য কমিশন-বাণিজ্য করে, যদি কেউ সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করে, বিল দেওয়ার জন্য কমিশন বাণিজ্য করে এবং সরকারি প্রভাব কাজে লাগিয়ে কারো থেকে জিম্মি করে অথবা কোনো কিছু দেওয়ার প্রতিশ্রুতিতে কিছু অর্থ নিয়ে থাকে, অর্থ আত্মসাৎ করে থাকে, সেই ক্ষেত্রে দুর্নীতি হয়। এ ছাড়া, যে অভিযোগ আনা হয়েছে, সেটা কোনোভাবেই বস্তুনিষ্ঠ বক্তব্য না।’
এর আগে তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা দেশে ফিরে না আসলে স্বাধীনতা পূর্ণাঙ্গ রূপ পেত না। তাই আজকের দিনটা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।’
আজ দুপুরে নগর ভবনে শেখ ফজলে নূর তাপস জানান, দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় রিকশার জন্য লাইসেন্স দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ওই অনুষ্ঠানে মধুমতি ব্যাংকে সিটি করপোরেশনের টাকা কেন গেল— সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তাপস বলেন, ‘দেশের সকল বেসরকারি ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা এবং সরকারি নীতিমালা পরিপালনপূর্বক সকল সরকারি সংস্থা থেকে আমানত সংগ্রহ করে থাকে। সেটা করপোরেশন হোক, সেটা কর্তৃপক্ষ হোক, সেটা সরকারি কোম্পানি হোক সেখান থেকে বেসরকারি ব্যাংক আমানত সংগ্রহ করে। মধুমতি ব্যাংকও তেমন একটি ব্যাংক যারা সরকারি আমানত সংগ্রহ করে। সুতরাং এখানে আইন লঙ্ঘনের কিছু নেই, দুর্নীতিরও অবকাশ নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা অভিযান শুরু করেছি— দুর্নীতির বিরুদ্ধে, অবৈধ দখলের বিরুদ্ধে। আমাদের অভিযান চলমান আছে। কেউ তা বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না।’
আরও পড়ুন
রাঘব বোয়ালের মুখে চুনোপুঁটির গল্প মানায় না: তাপসকে সাঈদ খোকন
Comments