সংসদ সদস্যের ভাই বলে কথা!
পটুয়াখালীর বাউফলে হাজী শহিদ মার্কেটের সামনের অংশ দখল করে দেয়াল নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আ স ম ফিরোজের ছোট ভাই এ কে এম ফরিদ মোল্লার বিরুদ্ধে। এতে ওই বিপণিবিতানের ২৮টি দোকান অবরুদ্ধ হয়ে গেছে, বন্ধ হয়ে গেছে বেচাকেনা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, হাজী শহিদ মার্কেটের সামনে উত্তর-দক্ষিণে দেয়াল নির্মাণ করছেন কয়েকজন শ্রমিক। তারা জানান, ফরিদ মোল্লা এই দেয়াল নির্মাণ করাচ্ছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কালাইয়া লঞ্চঘাট সড়ক সংলগ্ন পশ্চিম পাশের ৬৫ শতাংশ জমির ক্রয় সূত্রে মালিক স্থানীয় মো. শহিদ আলম। পূর্ব পাশের সমান অংশের মালিক সংসদ সদস্য আ স ম ফিরোজের স্ত্রী মোসা. দেলোয়ারা রুনুর।
২০১৩ সালে সড়ক সংলগ্ন উত্তর-দক্ষিণে লঞ্চঘাট পর্যন্ত প্রায় পৌনে চারশ ফুট লম্বা বিপণিবিতান নির্মাণ করেন তিনি। সেখানে মুদিমনোহরী, ওয়ার্কশপ, হার্ডওয়ার, ওষুধ ও ফলেরসহ ২৮টি দোকান আছে। পূর্বপাশে দেলোয়ারা রুনুর মালিকাধীন জমিতেও বিপণিবিতান রয়েছে।
শহিদ আলম অভিযোগ করেন, ‘ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে সংসদ সদস্যের ভাই ফরিদ মোল্লা সরকারি সড়কের পাশে আমার নিজস্ব সম্পত্তিতে নির্মিত বিপণিবিতানের সামনে দেয়াল নির্মাণ করে আমার বিপণিবিতান বন্ধ করে দিয়েছে। প্রভাবশালী হওয়ায় প্রতিবাদ করেও কোনো লাভ হচ্ছে না। এতে ২৮টি পরিবার পথে বসার উপক্রম হয়েছে।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভুক্তভোগী এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘দেখলেই বুঝা যায় যারা এই দেয়াল দিচ্ছেন তাদের কোনো উপকারে আসবে না। একমাত্র বিপণিবিতান বন্ধ করে দেওয়ার জন্যই এই দেয়াল নির্মাণ করা হচ্ছে। তারা প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ প্রতিবাদ করতে পারছে না।’
এ ব্যাপারে এ কে এম ফরিদ মোল্লার সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তাদের জমির ওপর দিয়ে সরকার সড়ক নির্মাণ করেছে। ওই সড়কের পশ্চিম পাশে তাদের আরও আট ফুট জমি আছে। সেই জমিতে দেয়াল নির্মাণ করছেন।
দেয়ালের কারণ কী? আর সরকারিভাবে নির্মিত সড়কের পাশে অন্য ব্যক্তির বিপণিবিতানের সামনে দেয়াল নির্মাণ করে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারেন কিনা? এমন প্রশ্নের জবাব না দিয়ে সামনাসামনি কথা হবে বলে ফোন কেটে দেন তিনি। পরে আর ফোন ধরেননি।
বাউফল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, ‘সরকারিভাবে নির্মিত সড়কের পাশে দেয়াল নির্মাণ করে কারো যাতায়াতে বাধা কিংবা বিপণিবিতানে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা অন্যায়। এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এ বিষয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য আ স ম ফিরোজের সঙ্গে মোবাইলে ফোনে একাধিকবার কল করলেও ধরেননি, এসএমএসের উত্তর দেননি।
Comments