মেয়েকে উত্যক্তের প্রতিবাদ: মাকে পিটিয়ে হাসপাতালে, এসিড নিক্ষেপের হুমকি
নোয়াখালীতে মেয়েকে উত্যক্তের প্রতিবাদ করায় মাকে প্রকাশ্যে মারধর করে আহত করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক ব্যক্তি ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে।
গত শনিবার বিকাল ৩টার দিকে নোয়াখালী পৌরসভার উত্তর মাইজদি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
আহত নারীকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় সুধারাম মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করা হলেও পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ তার।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, নোয়াখালী পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ওই নারীর এক মেয়েকে (২৫) দীর্ঘদিন ধরে উত্যক্ত করে আসছিলেন উত্তর মাইজদি গ্রামের মৃত নুরুল হকের ছেলে আবদুল কাইয়ুম।
শনিবার বিকাল ৩টার দিকে মা ও মেয়ে কেনাকাটার উদ্দেশ্যে বাড়ির সামনের রাস্তায় গেলে আবদুল কাইয়ুম ওই মেয়েকে উদ্দেশ্য করে অশালীন মন্তব্য করেন এবং তার ওড়না ধরে টান দেন। এতে মা প্রতিবাদ করেন।
এ নিয়ে উত্যক্তকারীর সঙ্গে মা-মেয়ের বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। সেসময় আবদুল কাইয়ুমের সহযোগী মো. জুয়েল মোবাইল ফোনে আরও ৭-৮ জনকে ডেকে ঘটনাস্থলে আনেন। পরে আবদুল কাইয়ুম ওই নারীকে প্রকাশ্যে মারধর করেন। এসময় আসামিরা তার মেয়ের শ্লীলতাহানি করেন। মা-মেয়েকে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে হামলাকারীরা পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় তারা মা-মেয়েকে এসিড নিক্ষেপের হুমকি দিয়ে যান। এ ঘটনায় পরিবারটি আতঙ্কের মধ্যে আছে।
আহত নারীর মেয়ে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেছেন, ‘স্বামী সৌদি প্রবাসী হওয়ায় আমি মায়ের সঙ্গে থাকি। দীর্ঘদিন ধরে প্রতিবেশী আবদুল কাইয়ুম আমাকে উত্যক্ত করে আসছিলেন। তার প্রস্তাবে সাড়া না দেওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে মা ও আমার ওপর সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে আমাদের তুলে নেওয়ার চেষ্টা করেন তিনি।’
তিনি জানিয়েছেন, এ ঘটনায় পুলিশ শনিবার বিকালে উত্যক্তকারী আবদুল কাইয়ুমকে আটক করে থানায় নিয়ে গেলেও রহস্যজনকভাবে তিনি ছাড়া পেয়ে যান। এ অবস্থায় তারা নিরাপত্তারহীনতায় ভুগছেন।
তবে আবদুল কাইয়ুম অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘রায়হান নামের এক যুবকের সঙ্গে পানি সেচ দেওয়াকে কেন্দ্র করে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। আমি কোনো নারীর গায়ে হাত তুলিনি।’
পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. রফিকুল বারী আলমগীর দ্য ডেইলি স্টারকে বলেছেন, ‘দুপক্ষের মধ্যে জায়গা-জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। ওই বিরোধকে কেন্দ্র করে হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটে।’
সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহেদ উদ্দিন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘নারীকে মারধর কিংবা শ্লীলতাহানির কোনো ঘটনা ঘটেনি। এটা জমি সংক্রান্ত বিরোধ। এ ঘটনায় উভয়পক্ষ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। পুলিশ অভিযোগগুলো তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’
Comments