৩ প্রতিষ্ঠানের ভ্যাকসিন ট্রায়ালের প্রস্তাব বিবেচনা করছে সরকার
দেশে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন সহজলভ্য করতে সরকার আরও তিনটি কোভিড ভ্যাকসিন উদ্ভাবক প্রতিষ্ঠানকে ট্রায়ালের অনুমতি দিতে পারে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা।
স্বাস্থ্য সচিব আবদুল মান্নান গতকাল বুধবার দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, ভ্যাকসিনের আরও উৎস পেতে সরকারের উদ্যোগের একটি অংশ হিসেবেই ভ্যাকসিন উদ্ভাবনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে ক্লিনিকাল ট্রায়ালের অনুমতি দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, ‘যদি কোনো ভ্যাকসিন উত্পাদক প্রতিষ্ঠান আমাদের বিস্তারিত (গবেষণা) তথ্য দেয়, তাহলে আমরা তার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেব।’
বর্তমানে তিনটি বিদেশি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে তাদের ভ্যাকসিনের শেষ পর্যায়ে ট্রায়ালের পরিকল্পনা করেছে। এর মধ্যে রয়েছে- ভারত বায়োটেক, চীনের আনহুই ঝিফেই লংকম বায়োলজিক ফার্মাসি এবং মেডিকেল বায়োলজি চাইনিজ একাডেমি অব মেডিকেল সায়েন্সেস ইনস্টিটিউট।
এছাড়াও বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান গ্লোব বায়োটেক লিমিটেড তাদের ভ্যাকসিনের প্রথম পর্যায়ের ট্রায়াল করতে বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিলের (বিএমআরসি) কাছে প্রস্তাব জমা দেবে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা।
তিন ভ্যাকসিন ট্রায়াল প্রার্থী
বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিলের কাছে ভারত বায়োটেকের ‘কোভ্যাক্সিন’ এর তৃতীয় পর্যায়ের ক্লিনিকাল ট্রায়াল পরিচালনার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছে আইসিডিডিআর, বি।
যোগাযোগ করা হলে বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিলের পরিচালক ড. মাহমুদ-উজ-জাহান এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
তিনি বলেন, ‘এ ধরনের গবেষণা-সংক্রান্ত বিষয়ে মন্তব্য করা নৈতিকভাবে ঠিক না। যখন সবাইকে জানানো হবে তখন আপনিও জানতে পারবেন।’
ইতোমধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) এবং আনহুই ঝিফেই লংকম বায়োলজিক ফার্মাসি কর্তৃপক্ষ ভ্যাকসিনের শেষ পর্যায়ের ট্রায়ালের পরিকল্পনা চূড়ান্ত করতে কাজ করছে। গত সপ্তাহে এই দুই পক্ষ ট্রায়াল পরিচালনায় সম্মত হয়।
বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক কনক কান্তি বড়ুয়া সম্প্রতি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমরা তাদেরকে (আনহুই ঝিফেই) জানিয়েছি। আমরা ট্রায়াল করব… প্রক্রিয়া শেষ করতে সময় লাগবে।’
মেডিকেল বায়োলজি চাইনিজ একাডেমি অব মেডিকেল সায়েন্সেস ইনস্টিটিউট তাদের ভ্যাকসিনের শেষ পর্যায়ের ট্রায়ালের পরিকল্পনা করছে। বাংলাদেশের একটি বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এই ট্রায়ালের পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত দুটি উত্স থেকে কোভিড ভ্যাকসিন কেনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের তিন কোটি ডোজ এবং কোভ্যাক্স সুবিধার আওতায় ছয় কোটি ৮০ লাখ ডোজ।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের মতে, সরকার বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে দেশের বাজারে বিক্রি করার জন্য ভ্যাকসিন আমদানির অনুমতি দেওয়ার বিষয়েও চিন্তাভাবনা করছে।
নিউইয়র্ক টাইমস করোনাভাইরাস ভ্যাকসিন ট্র্যাকারের তথ্য অনুযায়ী, ফাইজার-বায়োএনটেক, মডার্না এবং অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকাসহ আটটি করোনা ভ্যাকসিন এখন পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং অন্যান্য বেশ কয়েকটি দেশে জরুরি ব্যবহারের জন্য অনুমোদিত হয়েছে।
এছাড়াও ২০টি প্রতিষ্ঠান তাদের ভ্যাকসিন ট্রায়ালের চূড়ান্ত পর্যায়ে এবং আরও ২১টি প্রতিষ্ঠান ট্রায়ালের দ্বিতীয় পর্যায়ে রয়েছে।
Comments