‘সৌভাগ্যবান’ লাবুশেনের সেঞ্চুরিতে অস্ট্রেলিয়ার দিন
অস্ট্রেলিয়ার স্কোর তখন ৩ উইকেটে ৯৩ রান। অনভিজ্ঞ বোলিং আক্রমণ নিয়েই তাদের পরীক্ষায় ফেলছিল ভারত। সেসময় অজিদের আরও চেপে ধরার সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করেন ভারতীয় অধিনায়ক আজিঙ্কা রাহানে। গালিতে মারনাস লাবুশেনের ক্যাচ ফেলে দেন তিনি। পরে আরেকবার জীবন পান তরুণ এই ব্যাটসম্যান। ভাগ্য পক্ষে থাকায় আর পেছনে তাকাননি লাবুশেন। থামার আগে পূরণ করেন সাদা পোশাকে ক্যারিয়ারের পঞ্চম সেঞ্চুরি।
ব্রিসবেন টেস্টের প্রথম দিনটা গেছে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার ঝুলিতে। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ৮৭ ওভারে ৫ উইকেটে ২৭৪ রান তুলেছে তারা। ক্রিজে আছেন ক্যামেরন গ্রিন ২৮ ও অধিনায়ক টিম পেইন ৩৮ রানে।
চোটে জর্জরিত সফরকারী ভারত একাদশ সাজিয়েছে পাঁচ বিশেষজ্ঞ বোলার নিয়ে। তাদের মধ্যে চারজন পেসার ও একজন স্পিনার। চমকপ্রদ ব্যাপার হলো, তাদের সম্মিলিত টেস্ট ম্যাচের সংখ্যা মাত্র চারটি! এদিন অভিষেকের স্বাদ মেলে দুজনের- বাঁহাতি পেসার থাঙ্গারাসু নটরাজন ও অফ স্পিনার ওয়াশিংটন সুন্দরের। অভিজ্ঞতার ঘাটতি থাকলেও তাদের নিবেদনে কোনো ঘাটতি দেখা যায়নি। তবে অজি ব্যাটসম্যানদের পাশাপাশি ভারতীয়দের কপালে চিন্তার ভাঁজ বাড়িয়েছেন নবদ্বীপ সাইনি। মাত্র ৭.৫ ওভার বল করেই কুঁচকির চোটে মাঠের বাইরে চলে যেতে হয় তাকে। পরে সেবা-শুশ্রূষা নিয়ে মাঠে ফিরলেও বোলিং করেননি এই পেসার। কিছুক্ষণ ফিল্ডিং করেই অবশ্য ফের মাঠ ছাড়েন তিনি।
তিনে নামা লাবুশেন সাইনির শেষ ডেলিভারিতেই প্রথমবার বেঁচে যান। তখন তার রান ছিল ৩৭। এরপর ব্যক্তিগত ৪৮ রানের মাথায় আবার ভাগ্যদেবী মুখ তুলে তাকায় তার দিকে। নটরাজনের বলে স্লিপে হাতে বল জমাতে ব্যর্থ হন চেতেশ্বর পূজারা। এরপর লাবুশেন হয়ে ওঠেন আগ্রাসী। পরের ৬০ রান তিনি যোগ করেন ৬২ বলেই। ওই নটরাজনের শর্ট বলে টাইমিংয়ে গড়বড় করে উইকেটরক্ষক রিশভ পান্তের গ্লাভসবন্দি হওয়ার আগে তিনি করেন ১০৮ রান। তার ২০৪ বলের ইনিংসে ছিল ৯ চার।
দলীয় ২১৩ রানের লাবুশেনকে ফেরানোর পর আর কোনো সাফল্য পায়নি ভারত। নতুন বলও ভালোভাবেই সামাল দেন গ্রিন ও পেইন। তাদের ১২৮ বলে ৬১ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি দিনশেষে এগিয়ে রেখেছে অস্ট্রেলিয়াকে।
দিনের শুরুটা অবশ্য হয়েছিল ভারতীয়দের মনমতো। প্রথম ওভারেই মোহাম্মদ সিরাজের শিকার হন ছন্দের অভাবে থাকা ডেভিড ওয়ার্নার। উইল পুকোভস্কির চোটে একাদশে জায়গা পাওয়া আরেক ওপেনার মার্কাস হ্যারিসকে থিতু হতে দেননি শার্দুল ঠাকুর। ১৭ রানে ২ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়া অজিরা তৃতীয় উইকেটে পায় ৭০ রানের কার্যকর জুটি। ৩৬ রান করা স্মিথকে শর্ট মিডউইকেটে রোহিত শর্মার ক্যাচে পরিণত করে টেস্টে নিজের প্রথম উইকেট তুলে নেন ওয়াশিংটন।
চতুর্থ উইকেটে ১৭৯ বলে ১১৩ রান যোগ করে দলকে বড় রানের ভিত তৈরি করে দেন লাবুশেন ও ম্যাথু ওয়েড। এই জুটি ভেঙে সাদা পোশাকে প্রথমবার উইকেট শিকার করেন নটরাজন। শর্ট বলে কুপোকাত হওয়া ওয়েডের সংগ্রহ ৪৫ রান। সঙ্গী হারানোর পর লাবুশেনও টেকেননি। তবে তার সেঞ্চুরির কল্যাণে বড় সংগ্রহের হাতছানি রয়েছে ক্যাঙ্গারুদের সামনে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
(প্রথম দিন শেষে)
অস্ট্রেলিয়া প্রথম ইনিংস: ৮৭ ওভারে ২৭৪/৫ (ওয়ার্নার ১, হ্যারিস ৫, লাবুশেন ১০৮, স্মিথ ৩৬, ওয়েড ৪৫, গ্রিন ২৮*, পেইন ৩৮*; সিরাজ ১/৫১, নটরাজন ২/৬৩, শার্দুল ১/৬৭, সাইনি ০/২১, ওয়াশিংটন ১/৬৩, রোহিত ০/১)।
Comments