সিরাজের ৫ শিকার, সিরিজ বাঁচাতে ভারতের সামনে সহজ সমীকরণ
দ্বিতীয় ইনিংসে দ্রুত রান আনার দিকে থাকা অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসে বারবার হানা দিলেন মোহাম্মদ সিরাজ, প্রথমবার পেলেন ৫ উইকেট। চ্যালেঞ্জিং রান তাড়ায় নামার পরই ভারতের ইনিংস থামালো বৃষ্টি। শেষ দিনে তাই ম্যাচ ও সিরিজ বাঁচানোর সুযোগ বেড়েছে ভারতের।
ব্রিসবেনে চতুর্থ দিন শেষে অস্ট্রেলিয়ার জয় কিংবা ভারতের ড্র, এই দুই সম্ভাবনাই বেশি। ৩২৮ রান তাড়া করতে নেমে চতুর্থ দিনে ২৫ ওভার পেয়েছিল ভারত। কিন্তু বৃষ্টি বাগড়ায় তাদের ইনিংসে খেলা হয়েছে কেবল ১১ বল। তাতে বিনা উইকেটে ৪ রান করেছে তারা।
শেষ দিনে তাই সবগুলো উইকেট নিয়ে পুরো দিন টিকে থাকার চ্যালেঞ্জ সফরকারীদের। আর তা করতে পারলেই বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফি ধরে রাখবে আজিঙ্কা রাহানেরা। গ্যাবার উইকেটে ১৯৮৮ সালের পর আর হারেনি অজিরা। পঞ্চম দিনে কোন দল যেকোনো উইকেটে ৩২৪ রান করে জেতাটাই বাড়াবাড়ি। গ্যাবার উইকেটের হিসেবে সেটা আরও কঠিন। ভারতের সামনে ম্যাচ ড্র করে দেওয়াটাই তাই সহজ সমীকরণ।
সোমবার চা-বিরতির পর দ্বিতীয় ইনিংসে ২৯৪ রানে অলআউট হয় অস্ট্রেলিয়া। সর্বোচ্চ ৫৫ রান করেন স্মিথ। ৭৩ রানে ৫ উইকেট নিয়ে ভারতের হিরো সিরাজ।
আগের দিনের বিনা উইকেটে ২১ রান নিয়ে নামা অস্ট্রেলিয়ার ছিল সহজ হিসাব। বাড়াতে হবে দ্রুত রান। দুই ওপেনারের কাছ থেকে তাতে ভালো সাড়া পায় দল। সিরিজে এই প্রথম ওপেনিংয়ে একটা ভাল জুটি পায় তারা।
ডেভিড ওয়ার্নার ছিলেন কিছুটা ইতিবাচক, মার্কাস হ্যারিস ছিলেন ধরে রাখার দায়িত্বে। দলের ৮৯ রানে দুজনের জুটি ভাঙ্গেন ভারতের ব্যাটিং হিরো শার্দুল ঠাকুর। ৮২ বলে ৩৮ করে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন হ্যারিস। পরের ওভারেই ওয়ার্নারকে ছেঁটে ফেলেন আরেক ব্যাটিং হিরো ওয়াশিংটন সুন্দর। সুন্দরের অফ স্পিনে এলবিডব্লিও হওয়ার আগে ২ রানের জন্য ফিফটি হাতছাড়া করেন ওয়ার্নার।
তিনে নেমে আগ্রাসী ব্যাট চালাচ্ছিলেন মারনাস লাবুশানে। ৫ বাউন্ডারিতে দ্রুত থিতু হয়ে গিয়েছিলেন। তার ২২ বলে ২৫ রানের ইনিংস থামে সিরাজের পেসে। টেস্টে নিজের পাঁচ উইকেটের প্রথমটি নিতে লাবুশানেকে স্লিপে ক্যাচ বানান তিনি।
ওই ওভারেই কোন রান না করেই তার বলে উইকেটের পেছনে ধরা পড়েন ম্যাথু ওয়েড। দ্রুত উইকেট হারিয়ে থতমত খাওয়া অজিরা ঘুরে দাঁড়ায় স্টিভ স্মিথের ব্যাটে।
ক্যামেরন গ্রিনকে একপাশে রেখে দ্রুত রান বাড়ানোর চেষ্টায় যান তিনি। ফিফটি পরার পর অস্ট্রেলিয়ার সেরা ব্যাটসম্যানকেও আউট করেছেন সিরাজ। তবে স্মিথকে আউটের দুটো সুযোগ আগে নষ্ট করেন তিনিই। ৩৭ রানে থাকা স্মিথ সুন্দরের বলে ক্যাচ উঠিয়েছিলেন। লং অনে তা ছেড়ে দেন সিরাজ। পরে নিজে বল করতে এসেও সুযোগ মিলেছিল। স্মিথের ফিরতি ক্যাচ রাখতে পারেননি হাতে।
অবশেষে আচমকা লাফানো এক বলে গালিতে ধরা পড়ে শেষ হয় স্মিথের ৫৫ রানের ইনিংস। এতে ভাঙ্গে পঞ্চম উইকেটে ৭৩ রানের জুটি।
পরে ধীরে খেলতে থাকা গ্রিনের সঙ্গে যোগ দিয়ে ওয়ানডে মেজাজ নিয়ে নেমেছিলেন টিম পেইন। ৯০ বলে ৩৭ করে গ্রিন ফেরার পরও চলেছে তার লড়াই। ৩৭ বলে ২৭ করা অজি কাপ্তানকে ফেরান শার্দুল।
শেষ দিকে অস্ট্রেলিয়ার রান বাড়ানোর নায়ক প্যাট কামিন্স। এক পাশে অপরাজিত থেকে ৫১ বলে ২৮ রান করেছেন তিনি। অন্য দিকে মিচেল স্টার্ক, জস হ্যাজেলউডদের ছেঁটে ৫ উইকেট তুলে ইনিংস মুড়ে দেন সিরাজ।
ভারতের দুই ওপেনার নেমে খেলেছেন ১১ বল। তাতে রোহিত শর্মার দৃষ্টিনন্দন এক কাভার ড্রাইভের বাউন্ডারিতে রানের খাতা খুলে ভারত। এরপরই বৃষ্টিতে আর খেলা হতে পারেনি। আগেভাগেই দিনের খেলার সমাপ্তি ঘোষণা করতে হয় আম্পায়ারদের। শেষ দিনে তাই সবগুলো উইকেট হাতে রেখেই অস্ট্রেলিয়া থেকে চওড়া হাসি নিয়ে ফেরারর বড় সুযোগ তাদের।
Comments