বিস্কুট রপ্তানির সাফল্যে বাংলাদেশ

করোনাভাইরাস মহামারিতে বেশিরভাগ ব্যবসায়ীরা যেখানে টিকে থাকার চেষ্টায় ব্যস্ত, সেখানে সম্পূর্ণ বিপরীত চিত্র দেশের বিস্কুট প্রস্ততকারকদের।

করোনাভাইরাস মহামারিতে বেশিরভাগ ব্যবসায়ীরা যেখানে টিকে থাকার চেষ্টায় ব্যস্ত, সেখানে সম্পূর্ণ বিপরীত চিত্র দেশের বিস্কুট প্রস্ততকারকদের।

দেশ ও দেশের বাইরে চাহিদা বেড়েছে বিস্কুটের। গৃহবন্দি থাকাকালীন সময়টাতে সর্বস্তরের মানুষের কাছে এটি নিরাপদ ও মজাদার খাবার হিসেবেই গৃহীত হচ্ছে।

করোনা মহামারির মধ্যেই ২০১৯-২০ অর্থবছরে আগের অর্থবছরের চেয়ে ১০ শতাংশ বেশি বিস্কুট রপ্তানি হয়েছে। চলতি অর্থবছরে এখন পর্যন্ত এই প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ২০১৯ সালের একই সময়ের চেয়ে গত বছর জুলাই থেকে ডিসেম্বরে বিস্কুট রপ্তানি প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। ২০১৯ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বরে রপ্তানি হয় ১৬ দশমিক ছয় মিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং ২০২০ সালের একই সময়ে রপ্তানি হয়েছে ৩১ দশমিক পাঁচ মিলিয়ন ডলারের বিস্কুট।

গত জুলাই থেকে ডিসেম্বরে অন্যান্য বাণিজ্যিক পণ্যের রপ্তানি আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে শূন্য দশমিক ৩৬ শতাংশ কমে ১৯ দশমিক ২৩ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।

জাতীয় রপ্তানিতে ৮০ শতাংশেরও বেশি অবদান রাখে দেশের পোশাক খাত। এই খাতে রপ্তানি দুই দশমিক ৯৯ শতাংশ কমে ১৫ দশমিক ৫৪ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।

অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক (অপারেশন) মাদাদ আলী ভিরানি বলেন, ‘ভোক্তাদের মধ্যে ভাইরাসের উদ্বেগের কারণে রেস্তোরাঁ ও রাস্তার খাবার কেনার প্রবণতা উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। কম মূল্যে বিকল্প হিসেবে বিস্কুটের চাহিদা বেড়ে গেছে।’

দেশের বিস্কুটের বাজারের ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ দখলে রয়েছে এনার্জি প্লাস, টিপ এবং নাটি বিস্কুটের।

বিদেশে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশি স্থানীয়ভাবে তৈরি বিস্কুটগুলোর মূল ক্রেতা।

সরকার রপ্তানিতে ২০ শতাংশ ইনসেনটিভ দেওয়ায় তা বিদেশের বাজারে বিক্রি বাড়াতে অবদান রেখেছে জানিয়ে ভিরানি আরও বলেন, ‘তারা আমাদের ব্যবসা বাড়াতে সহায়তা করছে।’

দেশের বিস্কুট শিল্প বছরে প্রায় ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই শিল্পের বাজার মূল্য দাঁড়িয়েছে প্রায় পাঁচ হাজার থেকে ছয় হাজার কোটি টাকায়।

বেঙ্গল গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান রোমানিয়া ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের প্রধান বিক্রয় কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম জানান, এপ্রিলের অল্প কয়েকদিন ছাড়া লকডাউনে কোনো বিস্কুট কারখানা বন্ধ ছিল না।

লকডাউনের প্রস্তুতি হিসেবে মানুষ শুকনো খাবারের মজুত করতে থাকে। ফলে বিস্কুটের চাহিদা বেড়ে যায়। এই অবস্থা পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি দেশেই।

তিনি আরও জানান, দেশের বাজারে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে বিস্কুটের চাহিদা। আর রপ্তানি বেড়েছে ৬০ শতাংশেরও বেশি।

পারটেক্স স্টার গ্রুপের মালিকানাধীন ড্যানিশ বিস্কুটের রপ্তানি বিভাগের প্রধান দেবাশীষ সিংহ জানান, সংক্রমণের ভয়ে রেস্তোরার খাবারে মানুষের অনীহার কারণে রপ্তানিকারকরা মহামারির সময় বিশ্ব বাজারে বেশ কিছু জায়গা দখল করতে পেরেছে।

তিনি বলেন, ‘এই মহামারি বাংলাদেশের ড্রাই ফুড রপ্তানিকারকদের জন্য একটি সুযোগ তৈরি করেছে।’

সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব, ভারত, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, নেপাল, ওমান, কাতার, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিস্কুটের প্রধান ক্রেতা।

প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের বিপণন পরিচালক কামরুজ্জামান কামাল বলেন, ড্রাই ফুডের ওপর মানুষের আস্থা তৈরি হওয়ায় দেশে ও বিদেশে এর চাহিদা বেড়েছে।

বাংলাদেশ অটো বিস্কুট অ্যান্ড ব্রেড ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন থেকে জানা যায়, বাংলাদেশ প্রতি বছর প্রায় চার লাখ ৭৫ হাজার টন বিস্কুট উত্পাদন করে।

Comments

The Daily Star  | English
government changed office hours

Govt office hours 9am-3pm from Sunday to Tuesday

The government offices will be open from 9:00am to 3:00pm for the next three days -- from Sunday to Tuesday -- this week, Public Administration Minister Farhad Hossain said today

1h ago