ভারতের স্তুতিতে ওয়াসিম-ইনজামাম-শোয়েবরা
রাজনৈতিক অঙ্গনের মতো ক্রীড়াঙ্গনেও ভারত-পাকিস্তানের সম্পর্ক বৈরিতার। তবে বিরোধ-দ্বন্দ্ব পাশে রেখে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ভারতের স্মরণীয় সিরিজ জয়ের পর পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটাররা আজিঙ্কা রাহানেদের স্তুতি গেয়েছেন। সেই তালিকায় আছেন বিশ্বকাপজয়ী ওয়াসিম আকরাম, ইনজামাম উল হক থেকে শুরু করে শোয়েব আখতারের মতো তারকা।
গতকাল মঙ্গলবার অজিদের দুর্গ ব্রিসবেনে সিরিজের শেষ টেস্টে ৩ উইকেটে জিতে ইতিহাস গড়ে ভারত। নিয়মিত অধিনায়ক বিরাট কোহলির অনুপস্থিতি ও এক ঝাঁক তারকা খেলোয়াড় চোটে ছিটকে যাওয়া সত্ত্বেও তরুণ ও আনকোরা দল নিয়ে বোর্ডার-গাভাস্কার সিরিজ তারা ধরে রাখে ২-১ ব্যবধানে।
রোমাঞ্চকর ম্যাচের শেষে নিজের ইউটিউব চ্যানেলে একটি ভিডিওতে ভারতকে বিশ্বের সেরা দলের তকমা দিয়ে ইনজামাম বলেন, ‘আমার মতে, নিজেদের ইতিহাসে এত বড় সিরিজ কখনো জেতেনি ভারত। তারা বড় সিরিজ জেতেনি, এ কথা কিন্তু আমি বলছি না। বিষয় হলো, অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে এতগুলো তরুণ খেলোয়াড় নিয়ে কেবল ভারত নয়, আমার মনে হয়, কোনো দলই সিরিজ জেতেনি।’
তিনি আরও জানান, ভারতের অর্জনের মহিমা বিশাল, ‘যদি আমার মতামত জানতে চাওয়া হতো (টেস্ট শুরুর আগে), তাহলে আমি বলতাম, এই দলটি অল্পসল্প লড়াই করার পর টেস্ট ম্যাচ হেরে যাবে। কিন্তু এরা উল্টো ফল করে দেখাল। তারা অস্ট্রেলিয়াকে তাদের মাটিতেই বধ করল। এটা একটা বিশাল কীর্তি। পুরো দলকে এবং বিশেষ করে, আজিঙ্কা রাহানেকে, যিনি অধিনায়ক ছিলেন, তাকে কৃতিত্ব দিতে হবে। যেভাবে তিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন, যেভাবে তিনি দলকে উজ্জীবিত করেছেন, তা দারুণ। তাকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। অনেক দিন পর কোনো সিরিজ দেখে আনন্দ পেলাম।’
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক ওয়াসিম লিখেন, ভারতের এই দলের সাহসের কোনো তুলনা হয় না, ‘অবিশ্বাস্য টেস্ট ও সিরিজের জয়। অস্ট্রেলিয়ায় কঠিন সফরে এর চেয়ে দুঃসাহসী কোনো এশিয়ান দল আমি দেখিনি। কোনো প্রতিকূলতা তাদের আটকাতে পারেনি। ফ্রন্টলাইনের খেলোয়াড়দের চোট এবং ৩৬ রানের অলআউট হয়ে তলানিতে পৌঁছে যাওয়া সত্ত্বেও অসাধারণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে তারা জিতল। অন্যদের জন্য এটা অনুপ্রেরণামূলক।’
ক্রিকেট মাঠে একসময় গতির ঝড় তোলা শোয়েবের মতে, দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পিত বিনিয়োগের সুফল পাচ্ছে ভারত, ‘আমি গ্যাবায় ভারতের জয়ের পিছনের কারণগুলো নিয়ে ভাবছিলাম। ২০ বছর আগে যে বিনিয়োগ করেছে, তার কারণে তারা জিতেছে। এই তরুণরা ভারতের সাইড বেঞ্চকে শক্তিশালী আর দৃঢ় করেছে।’
নিজের ইউটিউব চ্যানেলের প্রকাশিত ভিডিওতে তিনি ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডকেও (বিসিসিআই) সাধুবাদ জানান, ‘যে বোর্ড তরুণদের জন্য বিনিয়োগ করে এবং কার্যকর ব্যক্তিদের দায়িত্ব দেয় একটি দল গঠন করার জন্য, কেবল তারাই এ জাতীয় ফল পাবে। এটি ইতিহাসের সেরা তিনটি সিরিজের একটি। মূল খেলোয়াড়দের ছাড়াই ভারত জিতেছে। ভারতের তরুণরা এটি জিতেছে। তারা দেখিয়েছে যে, তাদের বিনিয়োগ দৃঢ়, তাদের কাঠামো দৃঢ়। তাই তারা সমস্ত প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে লড়াই করেও জিততে পারে।’
Comments