ফিরেই নায়ক সাকিব
সবশেষ ওয়ানডে ম্যাচটা খেলেছিলেন লর্ডসে। ২০১৯ সালের জুলাইয়ে, ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে। সময়ের হিসেবে কেটে গেছে দেড় বছরেরও বেশি সময়। এরপর আজ বুধবার মিরপুর শেরে বাংলায় ফের আবার কোনো আন্তর্জাতিক ওয়ানডেতে নামলেন সাকিব আল হাসান। আর ফিরেই নিজের রাজত্ব বুঝে নিলেন। জানিয়ে দিলেন দেশ সেরা খেলোয়াড় তিনিই।
তিনবার জুয়াড়িদের কাছ থেকে ম্যাচ পাতানোর প্রস্তাব পেলেও আইসিসির দুর্নীতি বিরোধী ইউনিটকে না জানানোয় এক বছরের স্থগিত নিষেধাজ্ঞাসহ দুই বছরের জন্য সব রকমের ক্রিকেটীয় কার্যক্রম থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল সাকিবকে। তাই লম্বা এ সময় মাথের বাইরে ছিলেন। লর্ডসে খেলার পর অবশ্য দেশের মাতিতে টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি খেলেছিলেন ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে। সেটাই শেষ।
মিরপুরে এদিন উইন্ডিজকে ৬ উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশ। এ জয়ের মূল নায়ক নিষেধাজ্ঞা থেকে ফিরে আসা এ সাকিবই। মাত্র ১২২ রানেই গুটিয়ে দিয়েছিলেন উইন্ডিজকে। যার মূল কাজটা করেছেন এ বাঁহাতি অলরাউন্ডারই। তুলে নিয়েছেন মূল্যবান চারটি উইকেট। সবচেয়ে বড় কথা ক্যারিবিয়ানদের মিডল অর্ডার ধসিয়ে দেন তিনিই। ফলে লক্ষ্যটা বড় হয়নি।
অন্যথায় বেশ বিপদেই হয়তো পরতে হতো বাংলাদেশকে। কারণ ১২৩ রানের এ লক্ষ্য তাড়া করতেই বেশ বেগ পেতে হয়েছে তাদের। খেলতে হয়েছে ৩৩.৫ ওভার। নবাগত আকিল হোসেনের বলে যেন সর্ষে ফুল দেখছিল টাইগাররা। আনকোরা স্পিনার জেসন মোহাম্মদও ঘূর্ণির মায়াজাল দেখিয়েছেন। তবে শেষ পর্যন্ত কোনো বিপদ হয়নি। দিন শেষে স্বাভাবিকভাবেই ম্যাচ সেরার পুরস্কার পেয়েছেন সাকিব।
এদিন ইনিংসের একাদশ ওভারে বল হাতে আসেন সাকিব। দ্বিতীয় বলেই পেতে পারতেন উইকেট। আন্দ্রে ম্যাককার্থির ব্যাটে কানা ছুঁয়ে অল্পের জন্যই স্লিপে দাঁড়ানো লিটনের হাতে যায়নি। তবে ওভার পড়ে এসেই সেই ম্যাককার্থিকে বোল্ড করেন তিনি। তার বলে সুইপ করতে গিয়ে লাইন মিস করে সাজঘরমুখি হন এ ক্যারিবিয়ান। একই সঙ্গে ঘরের মাঠে ১৫০ উইকেট পূরণ হয় তার।
এর এক ওভার পর ক্যারিবিয়ান শিবিরে সবচেয়ে বড় আঘাতটি করেন এ অলরাউন্ডারই। ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক জেসন মোহাম্মদকে ফেরান তিনি। ব্যাট হাতে প্রতিরোধ গড়ার ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন জেসন। তবে সাকিবের বলে পা বাড়িয়ে খেলতে গিয়ে লাইন মিস করেন। স্পিন করা বলে নাগাল পাননি। তড়িৎ গতিতে বল ধরে স্টাম্প ভাঙেন উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিম।
এরপর এনক্রুমা বনারকে ফিরিয়ে নিজের তৃতীয় উইকেট তুলে নেন সাকিব। অফ স্টাম্পের বাইরের রক্ষণাত্মক ঢঙ্গে খেলতে চেয়েছিলেন অভিষিক্ত বনার। তবে ব্যাটের আগে প্যাডে আঘাত হানলে পড়েন এলবিডাব্লিউ ফাঁদে। রিভিউ নিয়েছিলেন লাভ হয়নি। তাতেই বড় চাপে পড়ে যায় দলটি। পড়ে লেজের ব্যাটসম্যান আলজেরি জোসেফকে তুলে নেন তিনি।
তবে ব্যাট হাতে খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি সাকিব। যদিও এ দলটির বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে ফিফটির দেখা পেয়ে ভাল কিছুর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। এদিন শুরু থেকে হাঁসফাঁস করেছেন। তবে আউট হয়েছেন আকিল হোসেনের জাদুকরী এক ডেলিভারিতে। অফস্টাম্পের অনেক বাইরে রাখা বলে বাঁক খেয়ে ভেতরের দিকে ঢুকলে তার ব্যাটের কানায় লেগে স্টাম্প ভাঙে। ১৯ রানে থামে তার ইনিংস।
Comments