ছাত্র আন্দোলনে সংহতি জানানোয় অপসারণ: চিঠিতে কারণ দর্শালেন খুবির ৩ শিক্ষক

ছাত্র আন্দোলনে সংহতি জানানোয় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের যে তিন জন শিক্ষককে চূড়ান্ত অপসারণের আগে কারণ দর্শানোর চিঠি দেওয়া হয়েছিল সেই শিক্ষকরা লিখিতভাবে তাদের জবাব দিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যেই আজ দুপুরে তিন শিক্ষক তাদের বক্তব্য পেশ করেছেন।
এই শিক্ষকরা হলেন, বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আবুল ফজল, একই বিভাগের প্রভাষক শাকিলা আলম এবং ইতিহাস ও সভ্যতা বিভাগের শিক্ষক হৈমন্তী শুক্লা কাবেরী।
গত ১৮ জানুয়ারি সিন্ডিকেট কমিটির মিটিংয়ে এই শিক্ষকদের বক্তব্য দেওয়ার জন্য ২১ তারিখে বেলা দুইটা পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই তিন শিক্ষকের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষের প্রতি অবজ্ঞা ও অসদাচরণসহ নানা অভিযোগ এনেছে। তাদের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় অভিযোগ, ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যে আন্দোলন শুরু করে তাতে এই শিক্ষকরা সংহতি জানান।
পাঁচ দফা দাবিতে ওই আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের সাথে সংহতি জানিয়েছিলেন যে কয়েকজন শিক্ষক তাদের মধ্যে এই তিন শিক্ষকসহ চার জনকে গত বছরের ১৩ অক্টোবর কারণ দর্শাতে বলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
নোটিশে বলা হয়, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে নানা রকমের মিথ্যা তথ্য প্রদান, কুৎসা রটানো ও উসকানিমূলক তথ্য প্রচার করেছিলেন তারা। অভিযোগে বলা হয়, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য, কুৎসা রটানো এবং উসকানিমূলক কথা প্রচার করেছিলেন তারা। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সংহতি জানাতে অন্যান্য শিক্ষকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলে তারা। শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কাঠামো থাকার পরও তারা নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করেছেন।
এ প্রসঙ্গে, বাংলা ডিসিপ্লিনের প্রভাষক শাকিলা আলম ডেইলি স্টারকে বলেন, গত ১৯ জানুয়ারি রাত সাড়ে ১২টায় আমাকে ইমেইলে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। বেলা ১১ টার দিকে বাসায় চিঠি এসেছে। সেখানে সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অপসারণের কথা জানানো হয়েছে এবং ২১ জানুয়ারির মধ্যে নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে। নোটিশের জবাব দেওয়ার জন্য আমাদের কমপক্ষে ১০ দিন সময় দেওয়া উচিত ছিল। কিন্তু তা করা হয়নি।
আমি গতকাল সময় বাড়ানোর আবেদন করেছিলাম। কিন্তু কর্তৃপক্ষ সে সময় দেয়নি। এই সিন্ডিকেট স্বচ্ছ প্রক্রিয়া মেনে চলছে না—এসব কথা জানিয়ে শাকিলা আলম আরও বলেন, জরুরি সিন্ডিকেট, বিশেষ সিন্ডিকেট করার সিদ্ধান্ত এবং তাড়াহুড়ো করে বক্তব্য নেওয়ার চেষ্টা আমাদেরকে বঞ্চিত করার শামিল।
আরও পড়ুন:
ছাত্র আন্দোলনে সংহতি প্রকাশের শাস্তি শিক্ষক অপসারণ
ভবন নির্মাণে দুর্নীতির অভিযোগ থেকে উপাচার্যবিরোধী আন্দোলন
শিক্ষার্থী বহিষ্কার ও শিক্ষক অপসারণে নোটিশের প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের বিবৃতি
Comments