পাওয়েলের প্রতিরোধের পরও উইন্ডিজের সেই একই গল্প

mehedi hasan miraz
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

আগের দিন একই উইকেটে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে করুণ দশা হয়েছিল উইন্ডিজের। এদিন টস জিতেও ব্যাট করতে গেল তারা। অবস্থা হলো আরও খারাপ। বাংলাদেশের বোলিংয়ের সামনে আবারও একদম নড়বড়ে দেখালো তাদের। ফুটে উঠল স্কিলের ঘাটতি। চরম বিপর্যয়ে প্রতিরোধ গড়ে এবার দলকে আগের দিনের চেয়ে বড় পূঁজি পাইয়ে দিলেন আটে নামা রবম্যান পাওয়েল। 

মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ১৪৮ রানে অলআউট হয়েছে উইন্ডিজ। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৪১ রান করেন পাওয়েল। শেষ দুই উইকেটেই তারা পায় ইনিংসের সেরা দুই জুটি।  ক্যারিবিয়ানদের ধসিয়ে দিতে এদিন বাংলাদেশের সেরা বোলার মেহেদী হাসান মিরাজ। অফ স্পিনে ২৫ রানে তিনি নেন ৪ উইকেট। ওয়ানডেতে এটিই তার ক্যারিয়ার সেরা বোলিং। 

আগের ম্যাচের হিরো সাকিব ৩০ রানে পান ২ উইকেট। মাত্র ১৫ রানেই ২ উইকেট নিয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান। তবে খরুচে ছিলেন হাসান মাহমুদ। ১ উইকেট নিতে ৫৪ রান দিয়ে দেন তিনি।

এই ম্যাচে ব্যাটিং শক্তি বাড়িয়ে সতর্ক শুরু করেছিল উইন্ডিজ। একজন পেসার কমিয়ে একাদশে নিয়েছিল বাড়তি ব্যাটসম্যান।  সুনিল আম্রিসের সঙ্গে অভিষিক্ত সেই ব্যাটসম্যান কিওর্ন ওটলি উইকেটের পরিস্থিতি বুঝে নিয়েছিলেন টিকে থাকার ব্রত। কিন্তু মোস্তাফিজুর রহমানের বলে বেশিক্ষণ টেকেনি তাদের প্রতিরোধ।

পঞ্চম ওভারে মোস্তাফিজের কিছুটা ভেতরে ঢোকা বলে গালিতে মেহেদী মিরাজের হাতে ধরা পড়েন আম্রিস। ১০ রানে প্রথম উইকেট হারায় ক্যারিবিয়ানরা। দ্বিতীয় অনেকক্ষণ ব্যাট করেছেন ওটলি আর জশুয়া ডি সিলভা। কিন্তু কোনভাবেই রান বের করতে পারছিলেন না তারা।

২৬ রানের জুটির পর ১৪তম ওভারে গিয়ে পড়ে উইকেট। হাসান মাহমুদকে ছক্কায় উড়ানো ওটলি মনে হচ্ছিল তাল পাচ্ছেন। অন্যদিকে একের পর এক ডট বল খেলে তার সঙ্গী জশুয়া ছিলেন থিতু হওয়ার চেষ্টায়।

দুজন ফেরেন মিরাজের একই ওভারে। ওটলি মিরাজের লেন্থ বলে এক্সট্রা কাভারে দেন ক্যাচ। দুই বল পরই আরেকটি লেন্থ বলে বোল্ড হয়ে যান জশুয়া।১৫তম ওভারে বল করতে এসেই উইকেট তুলেন সাকিব। আন্দ্রে ম্যাকার্থি সাকিবের সোজা বলে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে দৃষ্টিকটুভাবে হন বোল্ড।

আগের ম্যাচে চরম বিপদের মুখে যিনি দাঁড়িয়েছিলেন সেই কাইল মায়ার্স এবার কাটা পড়েন রান আউটে। ৯ বল খেলে কোন রান করার আগেই বিদায় নিতে হয় তাকে। মাত্র ৪১ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বসে উইন্ডিজ।

এরপর অধিনায়ক জেসন মোহাম্মদ আর এনক্রুমা বোনার মিলে প্রতিরোধের চেষ্টায় ছিলেন। কিন্তু ৬ষ্ঠ উইকেটে ২৬ রানের বেশি আসেনি। জেসন সাকিবের বল সামলাতে পারেননি। ২৬ বলে ১১ করে হয়ে যান এলবিডব্লিউ।

কিছুটা সাবলীল খেলা বোনার পরের ওভারেই হাসানের উইকেটে টেনে বলে হয়ে যান বোল্ড। ৭১ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে একশো আগেই গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় পড়ে ক্যারিবিয়ানরা। ৮৮ রানে মিরাজের বলে ফিরে যান রেমন রেইফারও।

নবম উইকেটে এরপর জুতসই একটা জুটি পায় তারা। আলজেরি জোসেফকে নিয়ে জুটিতে ৩২ রান আনেন রবম্যান পাওয়েল। শুরু থেকেই দারুণ বল করে গেলেও খুব বেশি উইকেট পাচ্ছিলেন না মোস্তাফিজ।

অবশেষে ফাঁদ ফেলে আলজেরিকে আউট করে ‘ফিজ’ ধরেন দ্বিতীয় শিকার। তার কাটারে তৃতীয় স্লিপ ও গালির মাঝামাঝি জায়গায় দাঁড়ানো লিটনের হাতে ধরা দেন ১৭ রান করা আলজেরি।

শেষ উইকেটেও এসেছে ২৮ রান। আকিল হোসেনকে (১২ রান) নিয়ে দলকে দেড়শো কাছে নেন পাওয়েল। এই দলের অভিজ্ঞদের একজন হওয়ার পরও আট নম্বরে খেলতে নেমছিলেন তিনি। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে মিরাজের বলে স্টাম্পিং হওয়ার আগে ৬৬ বলের ইনিংসে ২ চার, ১ ছক্কায় করেন ৪১।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ওয়েস্ট ইন্ডিজ:   ৪৩.৪ ওভারে ১৪৮   (আম্রিস ৬ , ওটলি ২৪, জশুয়া ৫, ম্যকার্থি ৩ , জেসন  ১১ , মায়ার্স ০, বোনার ২০, রোবম্যান ৪১  , রেইফার ২, আলজেরি ১৭, আকিল  ১২  ; মোস্তাফিজ ২/১৫, রুবেল ০/২৩, হাসান ১/৫৪ , মিরাজ ৪/২৫, সাকিব ২/৩০ )

Comments

The Daily Star  | English

Election in first half of April 2026

In his address to the nation, CA says EC will later provide detailed roadmap

6h ago