মেয়রের মাধ্যমে খুবি প্রশাসনকে অনশনরত ২ শিক্ষার্থীর চিঠি

Khubi.jpg
উপাচার্য মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান, খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা অনশনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলছেন। ছবি: স্টার

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) অনশনরত দুই শিক্ষার্থীর পাশে দাঁড়িয়েছেন সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক।

আজ শুক্রবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে গিয়ে তিনি তাদের সঙ্গে কথা বলেন।

তখন শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে মেয়র বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের কষ্ট হচ্ছে তাই আমি এসেছি। শিক্ষার্থীদের আহ্বান জানিয়েছি যেন তারা আজ বেলা ৩টার মধ্যে তাদের বিষয়গুলো লিখিতভাবে জানায়। এরপর আমি এসে তাদের অনশন ভাঙিয়ে দেব। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকেও বলেছি বিষয়টি মানবিকতার দৃষ্টিতে দেখতে।’

পরে উপাচার্যের কার্যালয়ে শিক্ষার্থীদের পাঁচ জন প্রতিনিধির সঙ্গে আলোচনা করে তাদের লিখিত বক্তব্য দিতে বলেন মেয়র। এরপর বিকাল ৩টার দিকে ওই দুই শিক্ষার্থী মেয়রের মাধ্যমে প্রশাসনকে চিঠি দেয়। মেয়রের পক্ষ থেকে চিঠি গ্রহণ করেন কেসিসি প্যানেল মেয়র-২ মো. আলি আকবর টিপু।

তিনি বলেন, ‘আমি চিঠি পেয়েছি। কিছুক্ষণ পর মেয়রের সঙ্গে আলোচনায় বসব। তিনি অনুমতি দিলে চিঠিটি খুবি প্রশাসনের কাছে জমা দেব।’

জানা গেছে, ওই চিঠিতে দুই শিক্ষার্থী লিখেছেন, ‘আমরা কোনো ভুল করিনি, তাই ক্ষমা চাইব না। আমাদের শাস্তি প্রত্যাহার ও ৫ দফা আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত কাউকে হয়রানি করা যাবে না। এ নিশ্চয়তা পেলেই অনশন ভঙ্গ করব।’

তবে উপাচার্য ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান বলেন, ‘প্রাতিষ্ঠানিক নিয়ম-নীতি মেনে তারা দুঃখ প্রকাশ করলে প্রয়োজনে আমি আজই শৃঙ্খলা কমিটির সভা আয়োজন করব এবং তাদের বিষয়টি সর্বোচ্চ সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনা করা হবে।’

আজ সকাল সাড়ে ১০টায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গিয়ে দেখা যায়, বিপুল সংখ্যক পুলিশের উপস্থিতি। উপাচার্য মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান, খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা অনশনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলছেন।

Khubi-1.jpg
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন অনশনরত শিক্ষার্থী নোমান। তাকে আগে থেকেই স্যালাইন দেওয়া হচ্ছিল। অনশনরত অপর শিক্ষার্থী ইমামুলকে বিভিন্নভাবে চাঙ্গা রাখার চেষ্টা করছিলেন সহপাঠীরা। ছবি: স্টার

পরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পাঁচ জনের প্রতিনিধি দল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে মেয়রের সঙ্গে একান্তে বৈঠক করে।

এর মধ্যেই বেলা সাড়ে ১১টার দিকে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন অনশনরত শিক্ষার্থী নোমান। তাকে আগে থেকেই স্যালাইন দেওয়া হচ্ছিল। অনশনরত অপর শিক্ষার্থী ইমামুলকে বিভিন্নভাবে চাঙ্গা রাখার চেষ্টা করছিলেন সহপাঠীরা।

সেখানে উপস্থিত শিক্ষার্থী আতিক তূর্য দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘যত সংকটে পড়ি না কেন, আমরা অন্যায়ের সঙ্গে আপোষ করব না।’

উল্লেখ, গত ১৩ জানুয়ারি দুই শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি প্রদান করে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ছাত্র আন্দোলনের সময় শিক্ষকদের সঙ্গে অসদাচরণ, তদন্ত ও একাডেমিক কার্যক্রমে বাঁধা সৃষ্টির অভিযোগ আনা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।

তারা হলেন, বাংলা ডিসিপ্লিনের মোহাম্মদ মোবারক হোসেন নোমান (১৮ ব্যাচ) এবং ইতিহাস ও সভ্যতা ডিসিপ্লিনের ইমামুল ইসলাম (১৭ ব্যাচ)।

বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে গত ১৫ জানুয়ারি প্রেস কনফারেন্স করে প্রশাসনকে ২৪ ঘণ্টার সময় দিয়েছিলেন তারা। কিন্তু প্রশাসন ওই সময়ের মধ্যে তাদের শাস্তি প্রত্যাহার করেনি। পরে ১৭ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৭টা থেকে খুবির প্রশাসনিক ভবনের সামনে তারা আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু করেন।

আরও পড়ুন:

শিক্ষার্থী বহিষ্কার ও শিক্ষক অপসারণে নোটিশের প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের বিবৃতি

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়: ভবন নির্মাণে দুর্নীতির অভিযোগ থেকে উপাচার্যবিরোধী আন্দোলন

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়: ছাত্র আন্দোলনে সংহতি প্রকাশের শাস্তি শিক্ষক অপসারণ

খুবির ৪ শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ: বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের বিবৃতি

Comments

The Daily Star  | English
Former president Hamid airport CCTV footage

The story of Hamid’s exit

Further details regarding the exit of former president Mohammed Abdul Hamid suggest he breezed through the airport before quietly departing for Thailand.

10h ago