খুবি সিন্ডিকেট সভায় ১ শিক্ষককে বরখাস্ত, ২ শিক্ষককে অপসারণের সিদ্ধান্ত
বেতন-ফি কমানো ও আবাসন সংকট সমাধানসহ পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ‘উস্কানি’ দেওয়ার অভিযোগে এক শিক্ষককে বরখাস্ত ও অন্য দুই শিক্ষককে অপসারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়।
গতকাল শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১২তম সিন্ডিকেট সভায় এই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে বলে দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার খান গোলাম কুদ্দুস। তিনি বলেন, আগের সিদ্ধান্তই এবারের সিন্ডিকেট সভায় বহাল রাখা হয়েছে।
সিন্ডিকেট সভায় বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. আবুল ফজলকে বরখাস্ত এবং একই বিভাগের প্রভাষক শাকিলা আলম ও ইতিহাস বিভাগের প্রভাষক হৈমন্তী শুক্লা কাবেরীকে অপসারণে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
গোলাম কুদ্দুস আরও বলেন, রোববার সভার সিদ্ধান্ত রেজুলেশন করে সংবাদমাধ্যমকে জানানো হবে। সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধি অনুযায়ী, তাদের শাস্তি দেওয়া হচ্ছে।
এতে বলা হয়েছে, কোনো সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে বরখাস্ত বা চাকরিচ্যুত করা হলে ওই কর্মচারী ভবিষ্যতে অন্য কোনো সরকারি চাকুরিতে অথবা কোনো আইন বলে বা আইনের অধীনে প্রতিষ্ঠিত কোনো সংস্থায় নিয়োগ লাভের অযোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। তবে চাকুরি থেকে অপসারিত হলে কর্মচারী পুনর্নিয়োগ লাভের অযোগ্য হবেন না।
এর আগে গত মঙ্গলবার সকালে চাকরিচ্যুত ও অপসারণ করার আগের চূড়ান্ত কারণ দর্শানোর নোটিশ ওই তিন শিক্ষকের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়। ২১ জানুয়ারি দুপুর ২টার মধ্যে নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছিল।
গত বছরের জানুয়ারিতে বেতন-ফি কমানো, আবাসন সংকট সমাধানসহ পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা। এর প্রায় নয় মাস পর ১৩ অক্টোবর শিক্ষার্থীদের উস্কানি দেওয়ার অভিযোগে ওই তিন শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তিন দিনের মধ্যে নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছিল। জবাব পাওয়ার পরে গত ৯ নভেম্বর আরেকটি কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। ২৩ নভেম্বরের সেই জবাব পাওয়ার পরদিন ২৪ নভেম্বর ‘তদন্ত কমিটি’ গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
তাদের ১০ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে প্রতিবেদন তৈরিতে সহযোগিতা করার জন্য ৭ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আবারও চিঠি দেয়। ১৩ ডিসেম্বর বিশেষ সিন্ডিকেট সভা ডেকে আবারও তিন জনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। শিক্ষকরা চলতি বছরের ১০ জানুয়ারি সেই চিঠির জবাব দেন। এরপর ১৮ জানুয়ারি তাদের চূড়ান্ত কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় প্রশাসন।
আরও পড়ুন
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়: ছাত্র আন্দোলনে সংহতি প্রকাশের শাস্তি শিক্ষক অপসারণ
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়: ভবন নির্মাণে দুর্নীতির অভিযোগ থেকে উপাচার্যবিরোধী আন্দোলন
খুবির ৪ শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ: বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের বিবৃতি
Comments