লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়কে এক বছরে ১৫ দুর্ঘটনায় ২৫ মৃত্যু

লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়কের বেহাল দশা। ছবি: স্টার

মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়কটি। মহাসড়কের ১০০ কিলোমিটারের মধ্যে প্রায় ৪০ কিলোমিটার অংশে কার্পেটিং উঠে তৈরি গেছে। বিভিন্ন জায়গায় তৈরি হয়েছে গর্ত।

দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্থলবন্দর বুড়িমারীর সঙ্গে ব্যবসায়ী যোগাযোগের একমাত্র সড়ক এটি। দুর্ঘটনা আর জীবনের ঝুঁকি নিয়েই এই মহাসড়ক দিয়ে প্রতিদিন কয়েক হাজার যানবাহন চলাচল করে।

দুর্ঘটনা এই মহাসড়কের প্রায় নিত্যদিনের চিত্র।

পুলিশ কন্ট্রোল রুম সূত্রে জানা যায়, গত এক বছরে এই মহাসড়কে ১৫টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে প্রাণ হারিয়েছেন ২৫ জন।

সর্বশেষ গত ১৮ জানুয়ারি বিকালে জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার খানের বাজার নামক স্থানে বুড়িমারী স্থলবন্দর থেকে আসা পাথর বোঝাই ট্রাকের চাপায় প্রাণ হারান দুই পুলিশ সদস্য।

ট্রাক চালক নুর ইসলাম (৪৪) দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, তিনি দেশের প্রায় সব মহাসড়কে ট্রাক চালিয়েছেন। ১৮ বছর ধরে ট্রাক চালানোর অভিজ্ঞতায় তার কাছে সবচেয়ে বেশি খারাপ অবস্থায় থাকা মহাসড়ক মনে হয়েছে লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়কটিকে।

এই মহাসড়কে ট্রাক চালাতে গেলে সবসময় দুর্ঘটনার দুশ্চিন্তা নিয়ে চলতে হয় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি এমন রাস্তায় ট্রাক চালাতে চাই না। কিন্তু, স্থলবন্দর থেকে আমদানি-রপ্তানির মালামাল পরিবহনের জন্য বাধ্য হয়েই এই মহাসড়কে আসতে হয়।’

হাতীবান্ধা উপজেলার খানের বাজার এলাকার অধিবাসী আতিয়ার রহমান (৫০) জানান, পাথরসহ অন্যান্য মালবোঝাই ট্রাকগুলো এই মহাসড়ক দিয়ে যেভাবে চলাচল করে, তাতে পথচারীদের চলাচল খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। মহাসড়কটির কার্পেটিং উঠে বিভিন্ন জায়গায় গর্ত তৈরি হওয়ায় দুর্ঘটনার ঝুঁকি আরও বেড়ে গেছে বলে তিনি জানান।

বুড়িমারী স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক ব্যবসায়ী শামিম আহমেদ দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, এই রাস্তাটির ভঙ্গুর দশা হওয়ায় অনেক ট্রাক চালক স্থলবন্দর থেকে মালামাল আনা-নেওয়া করতে চান না। ট্রাক চালকদের বেশি ভাড়া দিয়ে মালামাল পরিবহন করতে গিয়ে ব্যয় বেড়ে গেছে। দীর্ঘদিন ধরে মহাসড়কটির এমন অবস্থা থাকলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না।

লালমনিরহাট সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মাহবুব আলম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘মহাসড়কটির ৪০ কিলোমিটার ভাঙা অংশ মেরামত করতে ৪০ কোটি টাকার বরাদ্দ পাওয়া গেছে। ঠিকাদার নিয়োগ প্রক্রিয়াও সম্পন্ন হয়েছে। খুব শিগগির কাজ শুরু হবে।’

ট্রাকগুলো অতিরিক্ত মালামাল পরিবহন করায় অল্প সময়ের মধ্যেই মহাসড়কটি ক্ষতিগ্রস্ত হয় বলে যোগ করেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English
bad loans rise in Bangladesh 2025

Bad loans hit record Tk 420,335 crore

It rose 131% year-on-year as of March of 2025

4h ago