এমন কীর্তি গড়েও বিচলিত হতে পারেন পাকিস্তানের নুমান!
টেস্ট ক্রিকেট গত ৭২ বছরে এমন কিছু ঘটতে দেখেনি, যা করে দেখালেন পাকিস্তানের নুমান আলী। ১৯৪৯ সালের পর সবচেয়ে বেশি বয়সের খেলোয়াড় হিসেবে তিনি গড়লেন সাদা পোশাকে অভিষেকে ৫ উইকেট নেওয়ার কীর্তি। কিন্তু স্মরণীয় প্রথম ম্যাচের পরও তার বিচলিত হওয়ার যথেষ্ট কারণ থাকছে বৈকি!
শুক্রবার করাচিতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে দ্বিতীয় ইনিংসে ২৪৫ রানে বেঁধে ফেলতে অগ্রণী ভূমিকা রাখেন নুমান। ৩৪ বছর ১১৪ দিন বয়সী এই বাঁহাতি স্পিনার ৩৫ রানে নেন ৫ উইকেট। তার আগে ১৯৪৯ সালে নিউজিল্যান্ডের অভিষিক্ত পেসার ফেন ক্রেসওয়েল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৩৪ বছর ১৪৬ দিন বয়সে নিয়েছিলেন ৫ উইকেট।
এদিন টানা ৪ উইকেট নিয়ে প্রোটিয়াদের আড়াইশর নিচে থামিয়ে দেন নুমান। প্রথমে জর্জ লিন্ডে ধরা পড়েন স্লিপে। এরপর কাগিসো রাবাদা হন বোল্ড। একপ্রান্ত আগলে লড়াইরত টেন্ডা বাভুমাকে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলার আগে আইনরিখ নরকিয়াকেও পরাস্ত করেন প্রথম ইনিংসে ২ উইকেট পাওয়া এই ঘূর্ণি বোলার।
তাছাড়া, কেবল সবশেষ ৭২ বছরে নয়, পাকিস্তানের হয়ে টেস্ট অভিষেকে সবচেয়ে বেশি বয়সে ৫ উইকেট নেওয়ার কীর্তিও এখন নুমানের। আগের রেকর্ড ছিল অফ স্পিনার বিলাল আসিফের। ২০১৮ সালে দুবাইতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে ৩৬ রানে ৬ উইকেট নেন তিনি।
সবমিলিয়ে পাকিস্তানের ১২তম ক্রিকেটার হিসেবে অভিষেক টেস্টে ৫ উইকেট শিকারের নজির গড়েছেন নুমান। তার আগে এমন অর্জন রয়েছে বিলাল, তানভীর আহমেদ, ওয়াহাব রিয়াজ, ইয়াসির আরাফাত, শাব্বির আহমেদ, মোহাম্মদ সামি, শহীদ আফ্রিদি, মোহাম্মদ জাহিদ, শহীদ নাজির, মোহাম্মদ নাজির ও আরিফ বাটের নামের পাশে।
কিন্তু টেস্ট ক্যাপ পাওয়ার আগে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ১৪ বছর কাটিয়ে প্রায় ৩০০ উইকেট শিকার করা নুমানের বিচলিত হওয়ার সুযোগ কোথায়? খোলাসা করা যাক। এর আগে পাকিস্তানের হয়ে অভিষেকে যারা ৫ উইকেট নিয়েছেন, যে কারণেই হোক না কেন, তাদের কারও টেস্ট ক্যারিয়ারই দীর্ঘ হয়নি।
সবচেয়ে বেশি ৩৬ টেস্ট খেলেছেন ডানহাতি পেসার সামি। ২৭টি করে টেস্ট খেলে তার ঠিক পরেই যৌথভাবে আছেন অলরাউন্ডার আফ্রিদি ও বাঁহাতি পেসার ওয়াহাব। তারা বাদে অন্তত দশ ম্যাচ খেলেছেন মাত্র তিন জন- শাব্বির, শহীদ নাজির ও মোহাম্মদ নাজির। বাকিরা কেউ দুই অঙ্কে পৌঁছাতে পারেননি।
উল্লেখ্য, নুমানের বাঁ হাতের ভেলকিতে পাকিস্তান পায় ৮৮ রানের ছোট লক্ষ্য। তা পেরিয়ে বিজয়ীর হাসি হাসতে বিপাকে পড়েনি স্বাগতিকরা। ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে জেতে তারা। ফলে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেছে দলটি। দুদলের মধ্যকার ২৭ টেস্টে পাকিস্তানের এটি মাত্র পঞ্চম জয়।
Comments