১৬০ রানে অলআউট বিসিবি একাদশ
বাংলাদেশের মাঠে বরাবরই স্পিন বড় হুমকি হয়ে দাঁড়ায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের। ঘূর্ণির মায়াজালে পড়ে অনেক ম্যাচই হেরেছে তারা। তবে বিসিবির একাদশের বিপক্ষে সেই স্পিনকেই শক্তি বানিয়েছে দলটি। উল্টো স্বাগতিকদের স্পিনজালে ফেলে প্রথম ইনিংসে বড় লিড নিয়েছে সফরকারীরা।
শনিবার চট্টগ্রামের এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে তিন দিনের প্রস্তুতি ম্যাচে দ্বিতীয় দিনের লাঞ্চ বিরতির পর খুব বেশিক্ষণ টিকতে পারেনি বিসিবি একাদশ। রাখিম কর্নওয়াল ও জোমেল ওয়ারিকানের ঘূর্ণিতে ১৬০ রানে গুটিয়ে যায় দলটি। ফলে প্রথম ইনিংসে ৯৭ রানের লিড পেয়েছে ক্যারিবিয়ানরা।
লাঞ্চ বিরতির আগেই বিসিবি একাদশে ব্যাটিং লাইন আপে ধস নামিয়েছিল দলটি। মাত্র ২ রানের ব্যবধানে ৩টি উইকেট নিয়েছিল তারা। এরপর তরুণ অলরাউন্ডার শাহাদাত হোসেন দিপুকে নিয়ে প্রতিরোধ লড়াইয়ের চেষ্টা করেছিলেন আছেন অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান। ৩০ রানের জুটিও গড়েছিলেন। কিন্তু এ জুটি ভাঙতেই তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে তাদের ব্যাটিং লাইনআপ।
মূলত রাখিম কর্নওয়াল ও জোমেল ওয়ারিকানের ঘূর্ণির মায়ায় পড়ে দলটি। একাই পাঁচটি উইকেট নিয়েছেন দীর্ঘদেহী স্পিনার কর্নওয়াল। ওয়ারিকানও কম যাননি। পেয়েছেন ৩টি উইকেট। তাদের ঘূর্ণিতে পড়েই ধসে পড়ে স্বাগতিকরা। কোনো মতে ফলোঅন রক্ষা করে দলটি।
দলীয় ১৩০ রানে জোমেল ওয়ারিকানের বলে আউট হন দিপু। জায়গায় দাঁড়িয়ে ডিফেন্স করতে গেলে বল স্পিন করে ব্যাটে চুমু খেয়ে চলে যায় স্লিপে দাঁড়ানো কর্নওয়ালের হাতে। ফলে ১৩ রানে শেষ হয় তার ইনিংস। এরপর নিয়মিত ব্যবধানেই উইকেট হারাতে থাকে তারা। উইকেট ছুঁড়ে আসেন তৌহিদ হৃদয়। ওয়ারিকানের অফস্টাম্পে রাখা বলে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে লাইন মিস করেন হয়ে যান বোল্ড।
তবে নিজেকে কিছুটা দুর্ভাগা বলতে পারেন আকবর আলী। কারণ কর্নওয়ালের বলটি বেশ টার্ন করে উইকেট ভাঙে। এগিয়ে গিয়ে ডিফেন্স করতে চেয়েছিলেন আকবর। কিন্তু শেষ রক্ষা করতে পারেননি। মাহমুদুল হাসান জয়ও আউট হয়েছেন নিজের দোষেই। কর্নওয়ালের বলে প্রথমে ফ্রন্টফুটে খেলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু দোমনা হয়ে পরে ব্যাকফুটে খেলতে গেলে ব্যাটের কানায় লেগে শর্ট লেগে দাঁড়ানো কেভাম হজের হাতে ধরা পড়েন।
এরপর দল তাকিয়ে ছিল অধিনায়ক সোহানের দিকে। কিন্তু হতাশ করেছেন তিনি। ওয়ারিকানের অফস্টাম্পে রাখা বল লেগে ঘোরাতে গিয়ে আকাশে তুলে দেন। কভারে সহজ ক্যাচ তুলে নিতে কোনো ভুল হয়নি হজের। এরপর সৈয়দ খালেদ আহমেদ পড়েন কর্নওয়ালের এলবিডাব্লিউর ফাঁদে। ফলে ১৬০ রানে অলআউট হয়ে যায় দলটি।
এর আগে বিনা উইকেটে আগের দিনের করা ২৪ রান নিয়ে ব্যাটিংয়ে নামা বিসিবি একাদশের শুরুটাই এদিন ভালো হয়নি। স্কোরবোর্ডে কোনো রান যোগ না করতেই সাজঘরে ফিরে যান সাইফ হাসান (১৫)। কেমার রোচের গুড লেংথের ভেতরে ঢোকা বল জায়গায় দাঁড়িয়ে খেলতে গিয়ে লাইন মিস করেন তিনি। ফলে এলবিডাব্লিউর ফাঁদে পড়েন এ ওপেনার।
দ্বিতীয় উইকেটে সাদমানের সঙ্গে দারুণ এক জুটি গড়ে প্রাথমিক চাপ সামলে নেন নাঈম। উইকেটে নেমে দ্বিতীয় বলেই কভার দিয়ে দারুণ এক চার মেরে দারুণ কিছুর ইঙ্গিতটা দিয়ে রাখেন এ তরুণ। স্বভাবসুলভ ব্যাটিং করে রানের গতি সচল রাখেন। মাঝে আলজারি জোসেফের টানা দুটি বলে চার মারেন তিনি। এগিয়ে যাচ্ছিলেন নিজের হাফসেঞ্চুরির পথে। তবে কর্নওয়ালের বল জায়গায় দাঁড়িয়ে খেলতে গিয়ে বোল্ড হয়ে যান তিনি। ৪৮ বলে ৯ চারের সাহায্যে ৪৫ রান করেন তিনি।
নাঈমের বিদায়ের পর স্কোর বোর্ডে ২ রান হতে ফিরে যান সাদমানও। ১২৬ মিনিট উইকেটে থাকা এ বাঁহাতি ব্যাটসম্যান যেন ধৈর্য হারান। জোসেফের খাটো লেংথের বল পুল করতে চেয়েছিলেন তিনি। তবে বলে-ব্যাটে সংযোগ ঠিক হয়নি। এক্সট্রা কভারে ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েটের হাতে সহজ ক্যাচ তুলে দেন তিনি। দুই বল পর ইয়াসির আলি আউট হয়ে বিপদ ডেকে আনেন স্বাগতিকদের। কর্নওয়ালের বল ডিফেন্স করতে গেলে ব্যাটের কানায় লেগে শর্ট মিড উইকেটে ধরা পড়েন হজের হাতে।
Comments