সুস্থ ও সুরক্ষিত থাকতে ভ্যাকসিন নিতে হবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

সুস্থ জীবনের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার জন্য প্রত্যেককে ভ্যাকসিন নিতে হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
মানিকগঞ্জে করোনা ভাইরাস ভ্যাক্সিনেশন কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনে বিশেষ অবহিতকরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। ছবি: স্টার

সুস্থ জীবনের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার জন্য প্রত্যেককে ভ্যাকসিন নিতে হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। 

মন্ত্রী বলেন, ‘পৃথিবীর যেসব দেশের মানুষকে করোনার ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে, তারা সবাই ভালো আছেন। যারা ভ্যাকসিন নেবেন না, তারা আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকবেন। স্বাভাবিক জীবন এবং কাজে ফিরতে হলে ভ্যাকসিন নিতে হবে।’

শনিবার দুপুরে মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসন আয়োজিত ‘করোনা ভাইরাস ভ্যাক্সিনেশন কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনে বিশেষ অবহিতকরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, ‘সরকারের গাইডলাইন (নীতিমালা) অনুযায়ী সারাদেশে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে।করোনাভাইরাস যেভাবে সফলতার সঙ্গে মোকাবিলা করা হয়েছে, ভ্যাকসিনও সফলতার সঙ্গে দিতে পারব।

তিনি বলেন, 'যে কোনো কাজ করতে গেলে কতিপয় সমালোচক থাকে। ভ্যাকসিন নেওয়ার ক্ষেত্রে কি কি প্রতিক্রিয়া হতে পারে, তা নিয়ে বিরূপ প্রচার-প্রচারণা আছে। প্রতিটি ভ্যাকসিনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকতে পারে। একটু জ্বর হতে পারে, শরীর গরম বা মাথা ব্যথা হতে পারে। প্রতিটি ওষুধেরই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে, তাতে কি ওষুধ সেবন ছেড়ে দেওয়া হয়েছে?’

তিনি আরও বলেন, ‘করোনার ভ্যাকসিন সুষ্ঠুভাবে বিতরণ করা এবং প্রয়োগ করা এখন বড় বিষয়। এ বিষয়টি নীতিমালা তৈরি করা হয়েছে। যারা সামনের সারিতে থেকে কাজ করেন তাদের আগে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। এর পরের পর্যায়ে বয়স্ক ব্যক্তিদের ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। বেশি বয়স্ক থেকে শুরু করে কম বয়স্ক ব্যক্তিদের টিকা দেওয়ার চেষ্টা করা হবে। ভ্যাকসিন দিতে ৪২ হাজার স্বাস্থ্যকর্মীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। করোনাভাইরাস ভ্যাকসিনের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনে সবধরনের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। অ্যাপসের মাধ্যমে নিবন্ধন করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, অনেক রাষ্ট্র এখনও ভ্যাকসিন পায়নি। আগামী দুই-তিন মাসে ভ্যাকসিন পাবে কিনা, তা নিয়েও সন্দেহ আছে। থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ার মতো দেশ এখনও ভ্যাকসিন পায়নি বলেও জানান তিন।  

ভ্যাকসিন পাওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকারের বিশেষ উদ্যোগের কথা জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, গত ছয় মাস ধরে স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয় ভ্যাকসিনের পেছনে লেগে আছে। সর্বশেষ সবচেয়ে ভালো ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট যে ভ্যাকসিন তৈরি করছে সেটা আমরা পেলাম। এই ভ্যাকসিনটি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় আবিষ্কার করেছে। বিশ্বের ৬০ ভাগ ভ্যাকসিন সিরাম ইনস্টিটিউটে তৈরি হয়। গণহারে ভ্যাকসিন প্রদানের দিক দিয়ে বাংলাদেশ বিশ্বের ২৩তম। সমালোচনা অবশ্যই থাকবে, তবে সে সমালোচনা সঠিক নয় যা মানুষের জন্য ক্ষতিকর। ভ্যাকসিন থেকে বিমুখ হয়, এমন সমালোচনা থেকে দূরে থাকতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে ভ্যাকসিন নিতে সব দেশের চাপ পড়েছে। আমরা আগে আগে বুকিং দিয়েছি। আগে টাকা পাঠিয়েছি। তিন কোটি ভ্যাকসিনের টাকা ইতিমধ্যে দিয়েছি।

ভারতের সরকার বাংলাদেশের জনগণকে ২০ লাখ ভ্যাকসিন উপহার দিয়েছে। আমাদের কাছে এই মুহূর্তে ৭০ লাখ ভ্যাকসিন আছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে সাড়ে ৬০ কোটি ভ্যাকসিনের চাহিদা দেওয়া আছে। যখন ভ্যাকসিন পর্যাপ্ত হবে তারা আমাদের তা দেবে। আমাদের যে পরিমাণ ভ্যাকসিন মজুদ রয়েছে, চাহিদা দেওয়া হয়েছে এবং সামনে আসবে। দেশে এখন প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি মানুষকে ভ্যাকসিন দিতে পারব। প্রয়োজন হলে ভ্যাকসিনের সরবরাহ বাড়ানো হবে।’

জেলা প্রশাসক এস এম ফেরদৌসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় আরও বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার রিফাত রহমান শামীম, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম মহীউদ্দীন, জজকোর্টের পিপি আব্দুস সালাম, সিভিল সার্জন ডা. আনোয়ারুল আমিন আখন্দ।

সভাশেষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ে ইপিআই কেন্দ্র পরিদর্শনে যান।

Comments

The Daily Star  | English
BNP call's hartal

BNP calls 48-hr blockade from Wednesday

BNP today announced a fresh 48-hour countrywide blockade from Wednesday morning

39m ago