আমনের ভালো দামে বোরো চাষে ঝুঁকছেন পটুয়াখালীর কৃষক
এবার আমন মৌসুমে ধানের দাম ভালো পেয়েছেন পটুয়াখালীর কৃষকরা। এজন্য তারা আমন মৌসুম শেষ না হতেই শুরু করেছেন বোরো আবাদের কাজ। কৃষি দপ্তরও গত বছরের তুলনায় জেলার প্রায় ৩ গুণ বেশি জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।
গত বছর পটুয়াখালীতে প্রতি মণ আমন ধান বিক্রি হয়েছে ছয়শ থেকে সাতশ টাকায়। আর এ বছর বিক্রি হচ্ছে এক হাজার একশ থেকে এক হাজার দুইশ টাকায়। যা গত বছরের তুলনায় প্রায় দিগুণ। ধানের দাম বেশি পেয়ে কৃষকরা খুশি।
সম্প্রতি পটুয়াখালী সদর উপজেলার ও কলাপাড়া উপজেলার কিছু এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কৃষকরা ইতোমধ্যে বোরো বীজ তলা তৈরি করেছেন এবং খেতে বপনও শুরু করেছেন।
পটুয়াখালী সদর উপজেলার ডিবুয়াপুর গ্রামের কৃষক আ. জব্বার খান জানান, গত বছর ২০ কাঠা জমিতে বোরো আবাদ করে ৭০ মণ ধান পেয়েছিলাম। কিন্তু, ধানের দাম বাজারে কম ছিল তাই উৎপাদন খরচ ওঠেনি। তবে, এ বছর আমন ধানের ভালো দাম পেয়েছি তাই ৭০ কাঠা জমিতে বোরো আবাদ শুরু করেছি।
একই এলাকার কৃষক নুরু খান জানান, আমি এ বছর ৮০ কাঠা জমিতে বোরো আবাদ শুরু করেছি। ইতোমধ্যে ৪০ কাঠা জমিতে বোরো বীজ বপন করেছি এবং বাকি জমি দু‘এক দিনের মধ্যে বপন শেষ করব।
আরেক কৃষক রাশেদ সিপাই জানান, এ বছর বাজারে ধানের দাম ভালো বিধায় বেশি জমিতে বোরো আবাদ শুরু করেছি। তবে, সরকারি কোনো সহযোগিতা পাচ্ছি না। বাজার থেকে তিনশ টাকা কেজি দরে বীজ ধান কিনে বীজ করেছি। নিজের খরচে সেচও দিচ্ছি। সরকারের সহযোগিতা পেলে ভাল হতো।
পটুয়াখালী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর পটুয়াখালী জেলায় ৯ হাজার ৭৪৩ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত বছর জেলায় মাত্র ৩ হাজার ৪৫০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও ৩ হাজার ২২৮ হেক্টর জমি বোরো আবাদের আওতায় এসেছিল। কিন্তু, এ বছর কৃষকদের বোরো চাষে বেশি আগ্রহ দেখা যাওয়ায় জেলায় তিন গুণ বেশি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
পটুয়াখালী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক হৃদয়েশ্বর দত্ত জানান, এ বছর কৃষকরা আমন ধানে কাঙ্ক্ষিত দাম পেয়েছেন। এতে তারা বোরো চাষে বেশি উদ্বুদ্ধ হয়েছের এবং ইতোমধ্যে তারা বোরো আবাদ শুরু করেছেন।
তিনি আরও জানান, এ অঞ্চলে আমন ধান প্রধান শস্য হিসেবে চাষাবাদ হলেও বাজারে ধানের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষকরা বোরো আবাদে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। যা আমাদের কৃষি অর্থনীতির জন্য খুবই ইতিবাচক।
এই কৃষি কর্মকর্তা জানান, কৃষকদের আধুনিক চাষাবাদে উদ্বুদ্ধ করতে আমরা কৃষি খেতে বিভিন্ন ধরনের যান্ত্রিক পদ্ধতি প্রয়োগ শুরু করেছি। সম্প্রতি কলাপাড়া উপজেলায় মেশিনর সাহায্যে ধান বপন কার্যক্রমও উদ্বোধন করা হয়েছে।
Comments