টেস্টে রোমাঞ্চকর হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চাই বাংলাদেশ কোচের
ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টি কিংবা টেস্ট। প্রতিটি দলই নিজেদের সহজ জয় নিশ্চিত করতে চায়। আর উড়িয়ে দিতে পারলে তো কথাই নেই। সেখানে বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো বললেন ভিন্ন কথা। ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের কাছ থেকে রোমাঞ্চকর হাড্ডাহাড্ডি লড়াই প্রত্যাশা করছেন তিনি। আর কেন চাইছেন তার কারণও ব্যাখ্যা করছেন এ প্রোটিয়া কোচ।
হালের টি-টোয়েন্টির দাপটে টেস্ট ক্রিকেটের জৌলুশ অনেকটাই হারিয়ে যেতে বসেছে। অনেক খেলোয়াড়ই চান না দীর্ঘ এ সংস্করণ খেলতে। কিন্তু টেস্টই যে ক্রিকেটের আসল সংস্করণ তা মাঝে মধ্যেই বিশ্ব ক্রিকেটে কিছু ম্যাচের মাধ্যমে উঠে আসে। কদিন আগেই ব্রিসবেনে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ঐতিহাসিক এক জয় তুলে দেশে ফিরেছেন ভারত। শেষ দিনে দারুণ রোমাঞ্চ উপহার দিয়ে অবিশ্বাস্য এক টেস্ট জয় করে তাড়া। যা ক্রিকেটের অভিজাত সংস্করণের উদাহরণও বটে।
মূলত টেস্টই যে ক্রিকেটের প্রাণ তা প্রমাণ করতেই দুই দলের হাড্ডাহাড্ডি লড়াই দেখতে চান ডমিঙ্গো, 'টেস্ট ক্রিকেট বেঁচে আছে এবং সম্প্রতি কিছু টেস্ট ম্যাচ দেখেছি। আমি পাকিস্তান-সাউথ আফ্রিকা, ভারত-অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড-শ্রীলংকার মধ্যে টেস্ট ম্যাচগুলো দেখেছি। সাম্প্রতিক সময়ে দারুণ কিছু টেস্ট হয়েছে। আশা করছি আমরা এই ধারাটি ধরে রাখতে পারব এবং একটি এক্সাইটিং ব্র্যান্ডের ক্রিকেট এবং টেস্ট খেলতে পারব। আমার অবশ্যই মনে হয় এই টেস্টটিতে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে।'
ওয়ানডে সিরিজে দুই দলের মধ্যে লড়াইটা এক প্রকার এক পেশেই হয়েছে। টাইগারদের কাছে কুলিয়ে উঠতে পারেননি ক্যারিবিয়ানরা। মূলত দ্বিতীয় সারির দলই নিয়ে আসার কারণেই এমনটা হয়েছে। তবে সে অর্থে টেস্টে বেশ শক্তিশালী দল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। যদিও এর মাঝেই বেশ কিছু খেলোয়াড় এ সফরে আসেননি। কিন্তু করোনাকালীন সময় শেষে দুটি টেস্ট সিরিজ খেলা দলটি রয়েছে বেশ ছন্দে। অন্যদিকে লম্বা সময় পর লাল বলের ক্রিকেটে নামছে বাংলাদেশ।
তাই টেস্ট ক্রিকেটে নিজেদের প্রমাণ করার পালা ক্যারিবিয়ানদের। অন্যদিকে বাংলাদেশ চাইবে জয়ের ধারা ধরে রাখতে। এ দুই দলের সবশেষ সিরিজেও তাদের হোয়াইটওয়াশ করেই ছেড়েছিল টাইগাররা। ডমিঙ্গোর ভাষায়, 'তারা অবশ্যই নিজেদের প্রমাণ করতে চাইবে। আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যে আমরা আমাদের জায়গা রক্ষা করবো। আমাদের ঘরের মাঠে খেলা, আমরা আমাদের শক্তির জায়গা অনুযায়ী খেলব এবং নিজেদের ঘরের মাঠের সুবিধা নেওয়ার লক্ষ্য থাকবে।'
ওয়ানডে সিরিজে সহজ জয়ের কারণে টেস্ট ক্রিকেটে নিজেদের মধ্যে আত্মতুষ্টি কাজ করতেই পারে টাইগারদের। কিন্তু ক্যারিবিয়ানদের ঐতিহ্য ও সাম্প্রতিক সময়ে খেলার অভিজ্ঞতার কারণে তাদের হালকাভাবে নেওয়ার চিন্তাও করছেন না ডমিঙ্গো, 'ওয়েস্ট ইন্ডিজ একটি গর্বিত ক্রিকেট জাতি। তারা ইংল্যান্ড এবং নিউজিল্যান্ডে টেস্ট খেলে এসেছে। গত এক বছরে তাড়া কিছু টেস্ট ম্যাচ খেলেছে যা আমরা খেলিনি। তাদের হালকাভাবে নিলে আমাদের নিজেদের বিপদে পড়তে হবে।'
পাশাপাশি ক্যারিবিয়ানদের টেস্ট দলকে বেশ শক্তিশালী মানছেন টাইগার কোচ, 'তাদের দলে বেশ কিছু দারুণ ক্রিকেটার আছেন। ব্র্যাথওয়েইট তাদের একজন ধারাবাহিক খেলোয়াড়। শ্যানন গ্যাব্রিয়েল, কেমার রোচ বিশ্বমানের বোলার। আমরা কোনোভাবেই এই টেস্টকে হালকাভাবে নিচ্ছি না। আমর জানি যে কোনো কন্ডিশনে তারা একটি শক্তিশালী দল এবং আমাদেরকে নিজেদের সেরাটাই দিতে হবে ফল নিজেদের পক্ষে আনার জন্য।'
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শেষে সর্ব প্রথম ওয়েস্ট ইন্ডিজই টেস্ট ক্রিকেট খেলতে দেশের বাইরে যায়। এবং প্রথম টেস্ট জয়ও তাদের। সাউদাম্পটনে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে রোমাঞ্চকর এক জয় পায় দলটি। জার্মেইন ব্ল্যাকউডের অসাধারণ নৈপুণ্যে ম্যাচ জিতে নিয়েছিল তারা। এবারও এমন কিছুর লক্ষ্যেই আছে দলটি। আর প্রস্তুতি ম্যাচে ভালো পারফরম্যান্স করে এমন কিছুর ইঙ্গিতও দিয়েছে দলটি।
Comments