শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলা: রায় ১৭ ফেব্রুয়ারি

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় দুই দশক আগে বোমা পেতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলার রায় আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি দেবেন হাইকোর্ট।
আজ সোমবার বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. বদরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ মামলার ডেথ রেফারেন্স ও নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে দণ্ডপ্রাপ্তদের আপিলের শুনানি শেষে রায়ের এ তারিখ ঘোষণা করেন।
এ সময় আদালতে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মো. মোর্শেদ ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. মো. বশির উল্লাহ রাষ্ট্রপক্ষের হয়ে উপস্থিত ছিলেন। আর, পলাতক আসামির পক্ষে আইনজীবী অমূল্য কুমার সরকার এবং কারাগারে থাকা আসামিদের পক্ষে আইনজীবী এস এম শাহজাহান, মোহাম্মদ আহসান ও মোহাম্মদ নাসিরউদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
শুনানি চলাকালে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন এ মামলায় বিচারিক আদালতের রায় বহাল রাখতে হাইকোর্টের কাছে প্রার্থনা করেন।
তিনি বলেন, ২০০০ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার জন্য ৭৬ কেজি ওজনের বোমা পেতে রাখে আসামিরা। বোমাটি বিস্ফোরিত হলে ২০০৪ সালের ২১ আগস্টের মতো গ্রেনেড হামলার ভয়াবহ ঘটনা ঘটতে পারতো।
আসামিপক্ষের আইনজীবীরা তাদের মুক্তির জন্য হাইকোর্টের কাছে আবেদন করে বলেন, নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদের (হুজি) নেতা মুফতি আবদুল হান্নানের দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির ভিত্তিতে বিচারিক আদালত এ রায় দিয়েছেন।
২০০০ সালের ২১ জুলাই গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় শেখ লুৎফর রহমান আদর্শ কলেজের মাঠে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমাবেশস্থলের পাশ থেকে ৭৬ কেজি ওজনের একটি বোমা উদ্ধার করা হয়।
বোমা উদ্ধার হওয়ার পরদিন সেখানে শেখ হাসিনার বক্তব্য দেওয়ার কথা ছিল। বোমা উদ্ধারের ঘটনায় কোটালীপাড়া থানার উপপরিদর্শক নূর হোসেন বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা করেন।
মামলার তদন্ত শেষে ২০০১ সালের ৮ এপ্রিল নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদের নেতা মুফতি আব্দুল হান্নানসহ ২৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
একই বছর ২ জুলাই গোপালগঞ্জের আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।
একই বছরের ২ জুলাই গোপালগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালত ২৫ জন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।
গোপালগঞ্জ আদালত মামলার অভিযোগকারীসহ ৪০ জন সাক্ষীর জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এরপর দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয়।
২০১৭ সালের ২০ আগস্ট, ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২ দশ জনকে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন।
তারা হলেন- ওয়াসিম আক্তার ওরফে তারেক, রাশেদ ওরফে আবুল কালাম, ইউসুফ ওরফে মোসহাব মোড়ল, শেখ ফরিদ ওরফে মাওলানা শওকত ওসমান, জাহাঙ্গীর আলম বদর, আবু বকর ওরফে হাফেজ সেলিম হাওলাদার, হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আবদুল হাই এবং মাওলানা আবদুর রউফ ওরফে আবদুর রাজ্জাক।
এ ছাড়া, মেহেদী হাসান ওরফে আব্দুর ওয়াদুদকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং আনিসুল ইসলাম ওরফে আনিস, মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান ও সরোয়ার হোসেন মিয়াকে ১৪ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
মামলায় অভিযুক্তদের মধ্যে ১৩ জন কারাগারে এবং ১১ জন পলাতক। ১০ জনের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত ১০ জনকে খালাস দিয়েছেন।
Comments