রোহিঙ্গাদের নিয়ে জাতিসংঘের উদ্বেগ, আজ নিরাপত্তা পরিষদে জরুরি বৈঠক

মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের পর দেশটিতে থাকা প্রায় ছয় লাখ রোহিঙ্গা মুসলিম জনগোষ্ঠীর অবস্থা ‘আরও খারাপ’ হতে পারে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ।
Myanmar coup
ছবি: রয়টার্স

মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের পর দেশটিতে থাকা প্রায় ছয় লাখ রোহিঙ্গা মুসলিম জনগোষ্ঠীর অবস্থা ‘আরও খারাপ’ হতে পারে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ।

কূটনীতিকদের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, মিয়ানমার পরিস্থিতি নিয়ে আজ মঙ্গলবার একটি জরুরি বৈঠকে বসবে নিরাপত্তা পরিষদ।

সংবাদ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে মিয়ানমার নিয়ে আলোচনা করার পরিকল্পনা রয়েছে।

গতকাল জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন দুজারিক সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘রাখাইন রাজ্যে এখন প্রায় ছয় লাখ রোহিঙ্গা রয়েছেন। তাদের মধ্যে ১ লাখ ২০ হাজার মানুষ শিবিরে বন্দিজীবন কাটাচ্ছেন। তারা নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারেন না। সেখানে মৌলিক স্বাস্থ্যসেবা ও পড়াশোনার ব্যবস্থাও সীমিত।’

তিনি আরও বলেছেন, ‘আমাদের ভয় হলো সাম্প্রতিক ঘটনায় রোহিঙ্গাদের জন্য পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে উঠতে পারে।’

মিয়ানমারে আটককৃত সবাইকে মুক্তি দেওয়ার আহ্বানও জানিয়েছে জাতিসংঘ।

দুজারিক জানিয়েছেন, মিয়ানমারে নিযুক্ত জাতিসংঘের বিশেষ দূত ক্রিস্টিন শ্রেনার বার্গেনার ‘সক্রিয়ভাবে কাজ করছেন’। নিরাপত্তা পরিষদে মঙ্গলবারের বৈঠকে তিনিই মিয়ানমারের পরিস্থিতি নিয়ে বিবৃতি দেবেন।

নিরাপত্তা পরিষদে ফেব্রুয়ারি মাসের সভাপতি হিসেবে নিযুক্ত জাতিসংঘে ব্রিটেনের রাষ্ট্রদূত বারবারা উডওয়ার্ড সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘আমরা অবশ্যই এশিয়া ও মিয়ানমারের আসিয়ান প্রতিবেশীদের সঙ্গে নিয়ে ওই অঞ্চলের শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য দীর্ঘমেয়াদী হুমকির বিষয়ে আলোচনা করব।’

২০১৭ সালে মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সামরিক অভিযানের পর প্রাণ বাঁচাতে সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা প্রতিবেশী বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ও পশ্চিমের দেশগুলো মিয়ানমার সেনাবাহিনীকে এর জন্য অভিযুক্ত করলেও তা বরাবরই অস্বীকার করেছে মিয়ানমার।

২০১৭ সালের সামরিক অভিযানের পর আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মিয়ানমারকে সমর্থন জানিয়ে আসছে চীন।

সোমবার মিয়ানমারের পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে জাতিসংঘে চীনা মিশনের এক মুখপাত্র রয়টার্সকে বলেন, ‘আমরা আশাবাদী যে নিরাপত্তা পরিষদের যেকোনো উদ্যোগ মিয়ানমারের পরিস্থিতি আরও জটিল না করে বরং স্থিতিশীলতার পক্ষে সহায়ক হবে।’

গতকাল সকালে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী অভ্যুত্থান ঘটিয়ে ক্ষমতাসীন ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে। তারা এক বছরের জরুরি আইন জারি করার পাশাপাশি এনএলডি নেত্রী ও নোবেল বিজয়ী অং সান সু চিসহ দলের বেশ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতাকে গ্রেপ্তার করে।

দেশটির সেনা-সমর্থিত ইউএসডিপি গত ৮ নভেম্বরের সাধারণ নির্বাচনে হেরে যাওয়ায় ক্ষমতাসীন এনএলডি ‘কারচুপি’ করেছে বলে অভিযোগ করছিল সেনাবাহিনী। অবশেষে তারা গতকাল সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারকে সরিয়ে ক্ষমতা দখল করে।

আরও পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্রের অবরোধ ঝুঁকিতে মিয়ানমার

‘সু চি সরকারের বেশিরভাগ ক্ষমতা সামরিক বাহিনীর হাতেই ছিল’

রোহিঙ্গা প্রতিক্রিয়া: সু চি-সেনাবাহিনী একই

অভ্যুত্থান মেনে না নেওয়ার আহ্বান সু চির

যে কারণে সু চিকে সরিয়ে ক্ষমতা নিলো সেনাবাহিনী

মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের নিন্দায় বিশ্ব সম্প্রদায়

‘নির্বাচনে কারচুপি’র অজুহাতে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অভ্যুত্থান

মিয়ানমারে শান্তি, স্থিতিশীলতা ও গণতন্ত্র চায় বাংলাদেশ

ফেসবুকে ঘোষণা দিয়ে মিয়ানমারের স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ

ধীর গতির ইন্টারনেট, মিয়ানমারে ব্যাংকিং কার্যক্রম বন্ধ

মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থান, সু চি আটক

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

6h ago