১০টা গুন্ডা, ২০টা হোন্ডা, নির্বাচন ঠান্ডা— সে পদ্ধতি এখন আর নেই: প্রধানমন্ত্রী

সংসদে প্রধানমন্ত্রী। ছবি: পিআইডি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে বলেছেন, বিএনপির নেতারা যত কথাই বলুক তাদের নেতৃত্বের অভাব রয়েছে। তাদের ওপর থেকে মানুষের আস্থা সরে গেছে। আওয়ামী লীগের কাছ থেকে মানুষ সেবা পেয়েছে, দেশের উন্নয়ন হচ্ছে। মানুষের আস্থা-বিশ্বাস অর্জন করেছে আওয়ামী লীগ। তার প্রতিফলন দেখা গেছে স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোতে।

রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনা ও একাদশ জাতীয় সংসদের একাদশ অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে সংসদ নেতা শেখ হাসিনা একথা বলেন।

১২ কার্যদিবসের এই অধিবেশন আজ শেষ হয়েছে। আজ রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাব সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়। সরকারি এবং বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্যরা রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর ২৫ ঘণ্টা ২৫ মিনিটে আলোচনা করেন।

শেখ হাসিনা তার বক্তব্যে প্রশ্ন রাখেন, যাদের গায়ে দুর্নীতির ছাপ, যারা দুর্নীতিতে পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন, দুর্নীতি-গ্রেনেড হামলা মামলায় যাদের সাজা হয়, কোনো দলের নেতৃত্বে থাকলে তারা জনগণের জন্য কাজ করবে কীভাবে?

সাম্প্রতিক অনুষ্ঠিত স্থানীয় সরকার নির্বাচন প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, স্থানীয় সরকারের নির্বাচনগুলোতে ছোটখাটো ঘটনা ছাড়া ভালো ভোট হয়েছে। মানুষ ভোট দিতে পারেছে।

বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যাদের গায়ে হাজার কালির ছিটা, তারা আবার এত বড় কথা বলে কোন মুখে?’

‘সামরিক আমলে জনগণের ভোট দেওয়ার অধিকার ছিল না। যেটা মিলিটারি শাসকেরা ঠিক করে দিত, সেটাই হতো। রেজাল্টও পরিবতন করা হতো। অতীতে ভোট চুরির অপরাধে সরকারপ্রধানকে পদত্যাগও করতে হয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১০টা গুন্ডা, ২০টা হোন্ডা, নির্বাচন ঠান্ডা— সে পদ্ধতি এখন আর নেই। ইভিএমে ভোট কারচুপির সুযোগ নেই।

তিনি বলেন, নিজস্ব অর্থায়নে সরকার পদ্মা সেতু করেছে। প্রশংসাতো করলোই না, খালেদা জিয়া বলেছিলেন, জোড়াতালির পদ্মা সেতুতে কেউ উঠবেন না।  সেতুতে না উঠে নৌপথে যেতে হলে নৌকাতেই উঠতে হবে।

এসময় অনেকটা হাস্যরস করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘উপায় নাই, নৌকাতেই চড়তে হবে। আমাদের নৌকা অনেক বড়। সবাইকে নেব। কিন্তু, বেছে নেব। কেউ যেন আবার নৌকায় উঠে নৌকা ফুটো করতে না পারে।’

দেশের বিভিন্ন সেক্টরের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১২ বছর সরকার একটানা ক্ষমতায় থাকায় উন্নয়নকাজ দৃশ্যমান হয়েছে। এক সময় ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে বাংলাদেশ চলত। একেকটা দলের একেকটা নীতি আছে। বিএনপি বলেছিল খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়া ভালো না। বিদেশ থেকে সাহায্য পাওয়া যাবে না।

‘অনেক প্রশ্ন তারা করেন, সমালোচনা করেন। আয়নায় মনে হয় ভালো করে চেহারা দেখেন না। আয়না দেখেন নিশ্চয় সেটা মেকআপের জন্য, কিন্তু নিজেদের কাজগুলো দেখেন না।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার দেশকে নিজ পায়ে দাঁড় করাতে চেয়েছে। সেটা পেরেছে। জনগণ ভোট দিয়েছে, তাদের মর্যাদা রক্ষা করা, সেবা করা সরকারের দায়িত্ব। শত্রুর মুখে ছায় দিয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবিলায় নানা পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘের মহাসচিবসহ বিশ্ববাসী বাংলাদেশের প্রসংশা করেছে। শুধু দেশের ভেতরে প্রশংসা নেই। বিএনপির জন্মগত স্বভাব গুজব রটানো। তারা সেটা করুক, সরকার কাজ করে যাবে। কথা বলুক, কথা পেটে থাকলে পেট গুড়গুড় করবে।

শেখ হাসিনা বলেন, ভ্যাকসিন আসার আগে অনেক অনেক সমালোচনা অনেক ব্যঙ্গ হয়েছে। এসবের উত্তরটা ভ্যাকসিন আসার পর ভ্যাকসিন নিজেই দিয়েছে।

তিনি বলেন, করোনা পরিস্থিতি আরেকটু নিয়ন্ত্রণে এলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হবে।

ভ্যাকসিন নেওয়ার পরও সবাইকে মাস্ক পরিধান করা এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh Bank governor Ahsan H Mansur's remarks

Bangladesh in ‘intensive discussion’ with UK to recover laundered money: BB governor

Mansur said Bangladesh had requested mutual legal assistance from several countries, including the UK

2h ago