মিরাজের জন্য সাকিব ‘ধন্য’

Shakib Al Hasan & Mehidy Hasan Miraz
সাকিব আল হাসান ও মেহেদী হাসান মিরাজ। ছবি: ফিরোজ আহমেদ

মুশফিকুর রহিম নেটে ব্যাট করে বেরিয়ে যেতেই তাকে জড়িয়ে ধরে সাকিব আল হাসান বললেন, ‘মুশফিক সেঞ্চুরি করে বের হয়েছে। সবাই তালি দাও।’ এরপরই সাকিবের ব্যাট করার পালা। এতক্ষণ মুশফিককে গুণে গুণে বল করে যাওয়া মেহেদী হাসান মিরাজ সাকিবের কাছে জানতে চাইলেন, ‘ভাই, আপনাকে বল করব?’ সাকিবের জবাব কিছুটা তীক্ষ্ণ ধাঁচের, ‘আজ তো প্রস্তুতির দিন। তুমি যদি মনে করো তোমার প্রস্তুতি শেষ, তো শেষ।’

তারপর তাইজুল ইসলাম আর মিরাজের পরামর্শে গার্ড নিতে গিয়ে দ্বিধায় পড়ে সাকিব বলতে থাকেন, ‘একজন কয় এইদিকে, আরেকজন কয় ওইদিকে।’

সাকিব প্রস্তুত হতেই মিরাজ জানালেন, ‘সাকিব ভাই, ১২টা বল করব।’ সাকিবের জবাব, ‘ওকে, আমি ধন্য।’ এরপর মিরাজের বলে দুবার পরাস্ত হলেন সাকিব, প্যাডে লাগল। তবে নিজেরাই রিভিউ নেওয়ার মতো করে আলোচনা করে দেখলেন, একটা লেগ স্টাম্পের বাইরে পিচ করেছে। আরেকটার ইমপ্যাক্ট অফ স্টাম্পের বাইরে। সাকিব নট আউট।

এরপর তাইজুল বোলিংয়ে গেলে তাকে ফিল্ডিংয়ের কল্পিত পজিশন জানালেন সাকিব, ‘লেগ স্লিপ আর শর্ট লেগ আছে, কাভার আর মিড অফ খালি।’ তাইজুল একটু বদলালেন, ‘না ভাই, কাভার আছে।’ ফিল্ডিং পজিশন মনমতো হওয়ার পর সে অনুযায়ী বল করে গেলেন তাইজুল। সাকিবও অতি সতর্ক হয়ে খেলতে থাকলেন। স্পিনারদের মাঝে বল করছিলেন পেসার তাসকিন আহমেদও। তার বলে বার তিনেক পরাস্ত হতে দেখা গেল সাকিবকে।

Shakib Al Hasan & Mushfiqur Rahim
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

উইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচে কুঁচকিতে ব্যথা পেয়েছিলেন সাকিব। তাতে জেগেছিল কিছুটা অনিশ্চয়তা। তবে স্ক্যান রিপোর্ট ভালো আসায় প্রথম টেস্টে খেলার জন্য প্রস্তুত তিনি। আগের দিন আবার জানা গিয়েছিল, তার ফিটনেসে এখনো আছে কিছুটা ঘাটতি। কিন্তু মঙ্গলবার চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সেসবের কোনো ছাপ টের পাওয়া গেল না।

সকাল ১০টা থেকে ছিল বাংলাদেশের অনুশীলন। মাঠে এসেই কোচ রাসেল ডমিঙ্গোর সঙ্গে সাকিব দেখতে যান উইকেট। তারপর শুরুতে বোলিং ও ফিল্ডিং ঝালাই করেন বাংলাদেশের সেরা তারকা। ব্যাট হাতে নেটেও তাকে দেখা যায় বরাবরের মতো সাবলীল। ম্যাচের মতো নেটেও মুশফিকের পরে অর্থাৎ ছয় নম্বরে এসেছিলেন তিনি। স্পিনারদের বলই তাকে বেশি খেলতে দেখা যায়।

উইন্ডিজের বিপক্ষে প্রতিটা পদক্ষেপই সাকিবের জন্য নতুন করে ফেরা। সবকিছু ঠিক থাকলে সাদা পোশাকে আবার তিনি নামবেন ৫১৭ দিন পর।

সাকিব সর্বশেষ টেস্ট খেলেন এই চট্টগ্রামেই। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সেই ম্যাচটা হয়তো ভুলতেই চাইবেন তিনি। নবীন টেস্ট খেলুড়ে দেশের সঙ্গে প্রথমবার খেলতে নেমেই যে সাকিবের নেতৃত্বে হেরে গিয়েছিল বাংলাদেশ! সেই টেস্টের উইকেট নিয়ে হয়েছিল জোরালো সমালোচনা, বিস্ফোরক মন্তব্যে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন তিনি নিজেও। এবার সাকিবের কাঁধে অধিনায়কত্বের ভার নেই, পরিকল্পক হিসেবে তাই নেই আলাদা কোনো চাপ। তবে দলের সেরা খেলোয়াড় হিসেবে তার কাছেই থাকছে সবচেয়ে বড়  প্রত্যাশা।

Comments

The Daily Star  | English

New polls timing: BNP upbeat, process irks Jamaat, NCP

The interim government’s revised election timeline with certain conditions has stirred cautious optimism as well as raised questions among  political parties.

8h ago