নওগাঁয় এক আইনজীবীকে পুলিশের মারধর, মামলা-আদালত বর্জন
নওগাঁ আদালত চত্বরে পুলিশ সদস্যরা এক আইনজীবীকে মারধরের প্রতিবাদে আগামী রোববার পর্যন্ত আদালত বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন আইনজীবীরা।
একইসঙ্গে দোষী পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী জানিয়ে আল্টিমেটাম দিয়েছে বার এসোসিয়েশন এবং আদালতে মামলা করেছেন আইনজীবীরা।
গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় আদালত চত্বরে এই ঘটনা ঘটে। এসময় আহত আইনজীবী আবু সাঈদ মুরাদকে উদ্ধার করে নওগাঁ হাসপাতালে ভর্তি করেন সহকর্মীরা।
তবে নওগাঁ পুলিশের দাবি, আইনজীবীরা সরকারি কাজে বাধা দিয়েছেন এবং আইনজীবীদের মারধরে পুলিশের কয়েকজন সদস্য আহত হয়েছেন।
আইনজীবীদের অভিযোগ, সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় জেলা অ্যাডভোকেট বার এ্যাসোসিয়েশনের সদস্য অ্যাডভোকেট আবু সাঈদ মুরাদ পেশাগত দায়িত্ব পালনের উদ্দেশে কোর্ট চত্বরে প্রবেশ করার সময় প্রধান গেটে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যরা তাকে বাধা দেন। নিজেকে আইনজীবী পরিচয় দেওয়ার পরও তাকে রিকশা নিয়ে ঢুকতে দেওয়া হয়নি এবং তাকে অশালীনভাবে গালিগালাজ করা হয়।
আহত আইনজীবী আবু সাঈদ মুরাদ জানান, এ ঘটনার প্রতিবাদ করে তিনি চলে আসেন। পরে বার এসোসিয়েশনের সামনে কর্তব্যরত ট্রাফিক ইন্সপেক্টর রাজিব, মুক্তার হোসেনসহ ১০-১৫ জন পুলিশ সদস্য তাকে লাঠি দিয়ে পেটাতে শুরু করেন। তাকে এলোপাতারি মারধরের ঘটনা দেখে সেখানে উপস্থিত আইনজীবীসহ সাধারণ মানুষ তাকে উদ্ধার করতে এগিয়ে এলে পুলিশ তাদেরও তাড়া করে। একপর্যায়ে জেলা বার এসোসিয়েশনের সভাপতি অ্যাডভোকেট খোদাদাদ খান পিটুসহ বাকি আইনজীবীরা এগিয়ে এলে পুলিশ তাদের লক্ষ্য করে রাইফেল তাক করে। এসময় কোর্ট চত্বরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আইনজীবীসহ কোর্টে আসা সেবা গ্রহীতারা দিগ্বিদিক ছুটোছুটি করতে থাকেন।
নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তিরত পুলিশ সদস্য উজ্জ্বল জানান, গতকাল ছাত্রলীগের বিক্ষোভ সমাবেশ হওয়ার কথা ছিল। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে আদালতের প্রধান গেটে অবস্থান নেওয়া হয়। সেসময় ওই আইনজীবীকে রিকশা থেকে নেমে যাওয়ার অনুরোধ করা হলে তিনি পুলিশ সদস্যদের প্রতি অশালীন ভাষা প্রয়োগ করেন।
পরে পুলিশের লাঠি কেড়ে নিয়ে তাকে মারধর করা হয়। এতে তিনিসহ কয়েকজন আহত হন। হাতে আঘাত পাওয়ায় সেখানে চিকিৎসকরা প্লাস্টার করে দিয়েছেন বলেও জানান এই পুলিশ সদস্য।
আইনজীবী লাঞ্ছিতের ঘটনায় গতকাল মৌন মিছিল করেছেন নওগাঁর আইনজীবীরা। আগামী রোববার থেকে তারা কালো ব্যাজ ধারণ করে আদালতে যাবেন বলেও ঘোষণা দিয়েছেন।
Comments