কুড়িগ্রামে ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ

Land_Officer_Shahadat_3Feb21.jpg
সহকারী ভূমি কর্মকর্তা শাহাদত হোসেন | ছবি: সংগৃহীত
কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের পূর্বপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আবুল কালাম। গত বছরের ৮ ডিসেম্বর ১৫ শতাংশ জমির ডিসিআর (ডুপ্লিকেট কপি অব রেভিনিউ) নিতে তিনি ইউনিয়ন ভূমি অফিসে যান। আবুল কালাম অভিযোগ করেন, সরকারি ফি মাত্র দেড় হাজার টাকা হলেও এই কাজের জন্য তাকে ৫০ হাজার টাকা খরচ করতে হয়েছে।
 
তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা শাহাদত হোসেন ঘুষ ছাড়া কাজ করেন না। ডিসিআর নিতে ৫০ হাজার টাকা না দিলে জমিটি অন্য কাউকে বন্দোবস্ত করে দেবেন বলে হুমকি দিয়েছিলেন তিনি।’
 
এ ঘটনায় গত ২৮ জানুয়ারি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দেন আবুল কালাম।
 
যাদুরচর ইউনিয়নের ধনারচর পশ্চিমপাড়া গ্রামের কৃষক জাবেদ আলী সহকারী ভূমি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে একই অভিযোগ তুলেছেন। তিনি বলেন, গত বছরের ৩ ডিসেম্বর ১৬ শতাংশ জমির নামজারি করতে গেলে শাহাদত হোসেন তার কাছে ঘুষ দাবি করেন। ইতোমধ্যে দাবি করা ৫৫ হাজার টাকা দিয়েছেন জাবেদ আলী কিন্তু কাজ হয়নি।
 
তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘নামজারি করে দিতে শাহাদত হোসেন আরও টাকা দাবি করছেন। যে কারণে আমি গত ১০ জানুয়ারি তার বিরুদ্ধে ইউওএন-এর কাছে লিখিত অভিযোগ করেছি।’
 
রৌমারী সদর ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হলেও শাহাদত হোসেন গত বছরের নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি থেকে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি তিনি যাদুরচর ইউনিয়নে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করেন। এই সময়ের মধ্যে আরও অনেক অভিযোগ জমা পড়েছে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) কার্যালয়ে।
 
শাহাদত হোসেনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন কর্তিমারী বাজার এলাকার বাসিন্দা আনিছুর রহমান। অভিযোগপত্রে তিনি উল্লেখ করেছেন, ‘পৈতৃক সূত্রে পাওয়া তার ২০ শতাংশ জমি টাকার বিনিময় গোপনে অন্যের নামে নামজারি করে দিয়েছেন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা শাহাদত হোসেন। আনিছুর রহমানের পৈতৃক সম্পত্তি তার দখলেই রয়েছে।’
 
তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘শাহাদত হোসেন মাঠ পর্যায় না গিয়ে অফিসে বসে টাকার বিনিময়ে ভূমি সংক্রান্ত নানা অপকর্ম করে আসছেন। তার অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে কৃষকরা দিশাহারা হয়ে পড়েছেন। গত ২১ জানুয়ারি তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছি কিন্তু কোনো ফল মিলছে না।’
 
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা শাহাদত হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমি নিয়ম অনুযায়ী ভূমি সংক্রান্ত কাজ করি। যেসব কৃষকের স্বার্থ চরিতার্থ হচ্ছে না, তারাই আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন।’
 
রৌমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আল-ইমরান বলেন, তিনি ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা শাহাদত হোসেনের অনয়িম ও দুর্নীতি সম্পর্কে জেনেছি। তার বিরুদ্ধে পাওয়া অভিযোগের তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Comments

The Daily Star  | English

What are we building after dismantling the AL regime?

Democracy does not seem to be our focus today. Because if it were, then shouldn’t we have been talking about elections more?

3h ago