কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশি যাত্রীর থেকে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ
মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে পুলিশের বিরুদ্ধে এক বাংলাদেশি যাত্রীর কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
দেশটির সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, গত বুধবার পুলিশের ঘুষ নেওয়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে পরিচয় প্রকাশ না করে এক ট্যাক্সিচালক তামিল ভাষায় পুলিশের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশি এক যাত্রীর কাছ থেকে ঘুষ নিয়েছে পুলিশ। ওই যাত্রী মালয়েশিয়ায় কয়েক মাস বেকার থাকার পরে দেশে ফিরে যেতে বিমানবন্দরে এসেছিলেন।
আজ শুক্রবার ফ্রি মালয়েশিয়া টুডে’র এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পরে বিষয়টি নিয়ে তদন্তে নেমেছে সেলাঙ্গর পুলিশ।
ভিডিওতে ওই ট্যাক্সিচালক জানান, পুলিশ সদস্যরা কুয়ালালামপুর-সেলাঙ্গর সীমান্তে এক চেকপোস্টে তার গাড়ি থামায়। গাড়িতে থাকা ওই বাংলাদেশি যাত্রী তার সব নথিপত্র পুলিশকে দেখিয়েছিল। তার সব কাগজপত্র ঠিকঠাক গোছানো ছিল। তবুও পুলিশ তার কাছে ঘুষ দাবি করে।
আজ এক ফেসবুক পোস্টে সেলাঙ্গর পুলিশ জানিয়েছে, ‘আমরা এই বিষয়টি খুব গুরুত্বের সঙ্গে নিচ্ছি। আমরা কোনো ধরনের অন্যায়ের সঙ্গে আপস করব না। তিনি আমাদের সহকর্মী বা যে-ই হোক না কেন।’
এ ছাড়া, বিষয়টি প্রকাশ্যে তুলে ধরার জন্য ওই গাড়িচালককে ধন্যবাদ জানিয়েছে পুলিশ।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিও থেকে জানা গেছে, গত ২ ফেব্রুয়ারি রাত ১০টা ৫০ মিনিটের দিকে এ ঘটনা ঘটে।
ভিডিওতে ভারতীয় এক ট্যাক্সিচালক তামিল ভাষায় বলেন, সেদিন তিনি এক বাংলাদেশি যাত্রীকে বিমানবন্দরে পৌঁছে দিচ্ছিলেন। দেংকিলের কাছে চেকপোস্টে পুলিশ গাড়ি থামায়।
তিনি বলেন, যাত্রীর কাছে তার ফ্লাইটের টিকিট ও করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেটও ছিল। তবুও পুলিশ তার কাছে এক হাজার রিঙ্গিত দাবি করে। না দিলে ভেতরে প্রবেশ করা যাবে না বলে জানায়। তারপর যাত্রীটিকে পাশের একটি ঝোপের কাছে নিয়ে গিয়ে ঘুষ নেয় পুলিশ।
ট্যাক্সিচালক আরও জানান, তার গাড়িতে থাকা বাংলাদেশি যাত্রী মালয়েশিয়ায় কয়েক মাস ধরে বেকার অবস্থায় ছিলেন। ব্যাপক অর্থকষ্টে থাকা মানুষটির কাছ থেকে এভাবে ঘুষ নেওয়া ‘নির্মম’ বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এ বিষয়ে ব্র্যাকের অভিবাসন কর্মসূচি প্রধান শরিফুল হাসান বলেন, ‘ঘটনাটি ভীষণ দুঃখজনক। কিন্তু, এই ধরনের ঘটনা নতুন নয়। একজন বাংলাদেশি নাগরিক যার কাছে দেশে ফেরার সব বৈধ কাগজপত্র আছে, কোভিড-১৯ নেগেটিভ সনদও আছে, তারপরেও তার কাছে পুলিশ প্রকাশ্যে ঘুষ চাইছে। এর কারণ পুলিশ জানে লোকটা বাংলাদেশি এবং বাংলাদেশিদের সঙ্গে অন্যায় করলে সাধারণত কিছু হয় না।’
‘শুধু ঘুষ নেওয়া হয় তাই নয়, বাংলাদেশিদের হয়রানি ও নির্যাতন করা হয়। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংগঠন এসব নিয়ে প্রতিবেদন করেছে। কিন্তু এই ধরনের নিপীড়ন ও হয়রানির ঘটনা বন্ধ হয়নি’, বলেন শরিফুল হাসান।
Comments