উইন্ডিজকে কঠিন চ্যালেঞ্জ দিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ
বড় লিড পেয়ে নেমেই বিপর্যয়ে পড়ল বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও ব্যর্থ হলেন তামিম ইকবাল। এবার আর কেমার রোচ নয়। কোনো রান করার আগেই তাকে ছাঁটলেন রাহকিম কর্নওয়াল। নাজমুল হোসেন শান্তরও হলো একইও দশা। ১ রানে ২ উইকেট হারিয়ে কিছুটা অস্বস্তিতে পড়েছিল বাংলাদেশ। তৃতীয় উইকেটে ছোট্ট জুটির পর সাদমান ইসলাম ফিরলেও দলকে টানছেন অধিনায়ক মুমিনুল হক। লিডটাকে বড় করে প্রতিপক্ষকে কঠিন চ্যালেঞ্জের সামনে ফেলতে যাচ্ছেন তিনি।
শুক্রবার চট্টগ্রাম টেস্টের তৃতীয় দিন শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের স্কোর ৩ উইকেটে ৪৭ রান। ১৭১ রানের লিডের সঙ্গে এই রান যোগ হওয়ায় এর মধ্যেই স্বাগতিকরা এগিয়ে গেছে ২১৮ রানে। হাতে এখনো আছে ৭ উইকেট। নিশ্চিতভাবেই উইন্ডিজের সামনে অপেক্ষা প্রায় অসম্ভব কোনো লক্ষ্য তাড়ার চ্যালেঞ্জ। অধিনায়ক মুমিনুল অপরাজিত আছেন ৩১ রানে, অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম ব্যাট করছেন ১০ রানে।
চা-বিরতির ১৫ মিনিট পর প্রতিপক্ষকে কাবু করে ফুরফুরে মেজাজেই দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে বাংলাদেশ। ওয়ানডেতে বেশ কদিন ধরেই স্ট্রাইক নিচ্ছিলেন না তামিম। ওপেনিংয়ে বরাবরই স্ট্রাইক নেওয়া বাংলাদেশের সফলতম ওপেনার টেস্টে প্রথমবার দুই ইনিংসে শুরু করলেন নন-স্ট্রাইক প্রান্তে। তাতে ফল মিলল না। আগে রোচের বলে সব মিলিয়ে ১১ বার আউট হয়েছেন। এবার তার বল খেলার আগেই ফিরলেন। দ্বিতীয় ওভারে অফ স্পিনার কর্নওয়ালের বল পরাস্ত করল তামিমকে। এলবিডব্লিউর আউট রিভিউ নিয়েও বদলাতে পারেননি তিনি। উল্টো বাংলাদেশ হারায় রিভিউ।
এক বল মাঝে রেখেই শান্তও শেষ। অফ স্টাম্পের বাইরের বলে খোঁচা মেরে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে কোনো রান করতে পারেননি তিনিও।
বিপর্যস্ত পরিস্থিতি সামাল দেন সাদমান-মুমিনুল। ৩২ রানের একটা জুটি আসে তাদের। সাদমানকে ফিরিয়ে এই জুটি ভাঙেন পেসার শ্যানন গ্যাব্রিয়েল। তার লেগ স্টাম্পের ওপর করা বাউন্সার তাড়া করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন প্রথম ইনিংসে ফিফটি করা বাংলাদেশের এই ওপেনার।
এরপর আর কোনো বিপদ নয়। দিনের বাকি ৬ ওভার অনায়াসে কাটিয়ে দেন মুমিনুল-মুশফিক।
সবচেয়ে উল্লেখ্যযোগ্য হলো, তৃতীয় দিনের শেষ সেশনেও স্পিনাররা একটানা টার্ন পাননি। মাঝে মাঝে কিছু বল টার্ন করেছে। তাতে উইকেটও পড়েছে। কিন্তু সাধারণত বাংলাদেশের উইকেটে যেমন দেখা যায়, দ্বিতীয় দিন থেকেই বল ঘুরতে থাকে বিস্তর, এবার তেমনটা হয়নি। তবে চতুর্থ দিনে ব্যাটসম্যানদের জন্য কাজটা যে কঠিন হতে যাচ্ছে, এমনটা বলেই দেওয়া যায়। উইকেটে উড়ছে ধুলো। শার্প টার্ন হয়ত দেখা যাবে অহরহ। এখনই ২১৮ রানে এগিয়ে থাকা বাংলাদেশ তাই স্বস্তিতে ঘুম দিতে পারে।
টেস্ট ক্রিকেটের বাস্তবতা বলে, এমন পিছিয়ে পড়া অবস্থা থেকে শেষ ইনিংসে ব্যাট করা দলের ভাগ্যে থাকে একটাই ফল- পরাজয়। সফরকারী উইন্ডিজকে তার ব্যতিক্রম নজির দেখাতে রীতিমতো বিস্ময়কর কিছু করতে হবে। প্রেক্ষাপট, সামর্থ্য বিবেচনায় যা প্রায় অসম্ভবের কাছাকাছি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
(তৃতীয় দিন শেষে)
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস: ৪৩০
ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম ইনিংস: ৯৬.১ ওভারে ২৫৯ (ব্র্যাথওয়েট ৭৬, ক্যাম্পবেল ৩, মোসলি ২, বোনার ১৭, মেয়ার্স ৪০, ব্ল্যাকউড ৬৮, জশুয়া ৪২, কর্নওয়াল ২, রোচ ০, ওয়ারিকান ৪, গ্যাব্রিয়েল ০*; মোস্তাফিজ ২/৪৬, সাকিব ০/১৬, মিরাজ ৪/৫৮, তাইজুল ২/৮৪, নাঈম ২/৫৪)।
বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংস: ২০ ওভারে ৪৭/৩ (সাদমান ৫, তামিম ০, শান্ত ০, মুমিনুল ৩১*, মুশফিক ১০*; রোচ ০/৫, রাহকিম ২/২৮, গ্যব্রিয়েল ১/১৩, ওয়ারিকান ০/১)।
Comments