প্রবাস

ইতালির নতুন প্রধানমন্ত্রী সুপার মারিয়ো?

সিনোর মারিয়ো দ্রাগি। ছবি: সংগৃহীত

ইতালির জোট সরকারের প্রধানমন্ত্রী প্রফেসর জুসেপ্পে কোনতে পদত্যাগ করার পর নতুন মন্ত্রিপরিষদ গঠনের তোড়জোড় শুরু হয়। রাষ্ট্রপতি সেরজো মাত্তারেল্লা এই সংকটকালে নতুন নির্বাচন এড়াতে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি অন্তর্বর্তীকালীন মন্ত্রিপরিষদ গঠনের আহবান জানান। কিন্তু কে হবেন মন্ত্রীপরিষদের দল নেতা? কে হবেন প্রধানমন্ত্রী?

প্রফেসর কোনতে নতুন করে মন্ত্রিপরিষদ গঠনের উদ্যোগ নিলেও তা সম্ভব হয়নি। এর মধ্যে সংবাদমাধ্যমে উঠে আসে নতুন নাম- সিনোর মারিয়ো দ্রাগি। ইউরোপীয় ইউনিয়নে যিনি ‘সুপার মারিয়ো’ হিসেবে খ্যাতি পেয়েছেন।

সিনোর মারিয়ো পেশায় একজন অর্থনীতিবিদ। বয়স ৭৩ বছর। তিনি ১৯৭০ সালে রোমের লা সাপিয়েন্সা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৭৬ সালে একই বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন৷

১৯৮১ সালে ফিরেন্স বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা দিয়ে কর্মজীবন শুরু করেন তিনি। এর পর বিশ্ব ব্যাংকের ইতালিয় এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর, ইতালিয় ট্রেজারি অধিদপ্তরের ডিরেক্টর, ইতালিয় সেন্ট্রাল ব্যাংকের গভর্নর, ইউরোপীয় সেন্ট্রাল ব্যাংকের প্রেসিডেন্টসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে চাকরি করেছেন।

২০১২ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অভিন্ন মুদ্রা ‘ইউরো’ যখন বড় ধরণের সংকটে পড়ে তখন সিনোর মারিয়োর উদ্যোগ সবার কাছে প্রশংসা পায়। মূলত তখন থেকেই তিনি ইউনিয়নে ‘সুপার মারিয়ো’ হিসেবে খ্যাতি পান।

ইতালির সংসদীয় রাজনৈতিক সংকট, ঘন ঘন সরকার পতন নতুন কিছু নয়। বিষয়টি এখন এমন পর্যায়ে গিয়ে দাঁড়িয়েছে যে ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যে ইতালির রাজনীতিকরা হাসাহাসির পাত্রে পরিণত হয়েছেন। ক্ষমতার বাইরে থাকা অধিকাংশ রাজনীতিকরা দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত। অর্থনৈতিক দুর্নীতিসহ নানা রকমের কেলেঙ্কাকারিতে তাদের অনেকেই আদালত কর্তৃক সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন।

এসব সংকটের মধ্যে ইতালিতে মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে কয়েকটি চরম জাতীয়তাবাদী দল। নতুন প্রজন্মের কাছে তারা অনেকটা জনপ্রিয়। তবে, মূলত রাজনৈতিক সংকট তৈরিতে তারা নতুন অনুঘটকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে।

পৃথিবীর অনেক দেশের মতো ইতালির রাজনীতিও এখন আর সত্যিকারের রাজনীতিকদের হাতে নেই। আমলা, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষরা রাজনৈতিক চেয়ারগুলো দখল করে নিয়েছেন। এই অশুভ ধারা ব্যাপক হারে শুরু হয় মূলত সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং ব্যবসায়ী সিনোর সিলভিয়ো বেরলুসকোনির সময় থেকে। তাকেই ইতালিয় রাজনীতি হাইজ্যাকের বরপুত্র বলা হয়।

রাষ্ট্রপতি সেরজো মাত্তারেল্লার সঙ্গে বর্ষীয়ান অর্থনীতিবিদ সিনোর মারিয়ো দ্রাগি বৈঠক করেছেন। যদি নাটকীয় কোনো পরিস্থিতির অবতারণা না হয়, তবে তিনিই হতে যাচ্ছেন ইতালির নতুন প্রধানমন্ত্রী।

সদ্য পদত্যাগী প্রধানমন্ত্রী সিনোর কোনতে মূলত একজন শিক্ষক এবং আইনবিদ। জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করে কাটিয়েছেন। বর্তমানের সম্ভব্য প্রধানমন্ত্রী সিনোর মারিয়ো একজন অর্থনীতিবিদ। ব্যাংকসহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সময় ব্যয় করেছেন। স্বাভাবিকভাবেই জনমনে প্রশ্ন উঠেছে, প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারে বসার মতো একজন রাজনীতিবীদও কী ইতালিতে নেই?

[email protected]

আরও পড়ুন:

Comments

The Daily Star  | English
Khaleda Zia calls for unity

‘Seize the moment to anchor democracy’

Urging people to remain united, BNP Chairperson Khaleda Zia has said the country must quickly seize the opportunity to institutionalise the democratic system.

5h ago