মিয়ানমারের সঙ্গে জাপানি প্রতিষ্ঠান কিরিনের চুক্তি বাতিল
মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের জেরে দেশটির সেনা সম্পৃক্ত প্রতিষ্ঠান মিয়ানমার ইকোনমিক হোল্ডিংস পাবলিক কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে জাপানি প্রতিষ্ঠান কিরিন হোল্ডিংস।
কিরিনের এমন সিদ্ধান্তকে দেখা হচ্ছে মিয়ানমারের প্রতি কঠোর বার্তা হিসেবে।
মিয়ানমারের নির্বাচিত নেত্রী অং সান সু চিকে গ্রেপ্তার করে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখলের কয়েকদিন পরই এমন ঘোষণা দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
গতকাল শুক্রবার এক বিবৃতিতে মিয়ানমারে সামরিক বাহিনীর সাম্প্রতিক কার্যক্রম নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে কিরিন। প্রতিষ্ঠানটি যে মানবাধিকার নীতি অনুসরণ করে, এটি তার বিরোধী বলে জানানো হয়।
এতে আরও বলা হয়, মিয়ানমারের জনগণের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা ও অর্থনীতিতে অবদান রাখতে ২০১৫ সালে দেশটিতে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম আমরা। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে মিয়ানমার ইকোনমিক হোল্ডিংস পাবলিক কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে আমাদের যৌথ বিনিয়োগ অংশীদারিত্ব বাতিল করা ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই। দ্রুত এই সিদ্ধান্ত কার্যকরে ব্যবস্থা নেব আমরা।
জাপান টাইমসের মতে, কিরিন মিয়ানমারে কয়েক মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে। বর্তমানে মিয়ানমারের বিয়ার প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান মিয়ানমার ব্রুওয়ারি লিমিটেড ও ম্যান্ডলে ব্রুওয়ারি লিমিটেডের অর্ধেকেরও বেশি শেয়ার কিরিন হোল্ডিংসের।
২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর অভিযানকে গণহত্যা অভিহিত করে মানবাধিকার সংস্থাগুলো দাবি করে আসছে, বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো যেন সামরিক বাহিনী সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে তাদের বিনিয়োগ প্রত্যাহার করে নেয়। সেসময় বর্বর সামরিক অভিযানের কারণে প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়।
বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ বিয়ার প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান কিরিনের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে জাস্টিস ফর মিয়ানমারের মুখপাত্র ইয়াদনার মাং বলেন, ‘কিরিনের চুক্তি বাতিলের এই সময়োপযোগী সিদ্ধান্তে মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও তাদের সঙ্গীরা একটি কঠোর বার্তা পাবে যে, তাদের অভ্যুত্থান, যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ড সহ্য করা হবে না।’
এক বিবৃতিতে জাস্টিস ফর মিয়ানমার কিরিনকে অনুরোধ করেছে, তারা যেন অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোকেও এই পথ অনুসরণ করতে উৎসাহিত করে।
Comments