ভয় ধরাচ্ছে উইন্ডিজ
উইকেট থাকল আগের দিনের মতোই। তবে এই উইকেট থেকে সহায়তা পেতে হলে বোলারদের হতে হবে ধারাবাহিক। বাংলাদেশের স্পিনাররা প্রথম সেশনে তা করতে পারলেন না। উল্টো ক্যাচ পড়ল, রিভিউয়ের সুযোগ একাধিকবার নিতে ভুল হলো। বিপরীতে, কাইল মেয়ার্সের নান্দনিক ব্যাটিং আর এনক্রুমা বোনারের দৃঢ়তায় কোনো উইকেটই হারায়নি ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
রবিবার চট্টগ্রাম টেস্টের পঞ্চম দিনের মধ্যাহ্ন বিরতি পর্যন্ত উইন্ডিজের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ১৯৭ রান। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে আগের দিনের ৪ উইকেটে ১১০ রান নিয়ে নেমেছিল তারা। প্রথম সেশনে ৩১ ওভার খেলে কোনো বিপদে না পড়ে ক্যারিবিয়ানরা যোগ করেছে ৮৭ রান। ক্রিজে আছেন অভিষেক টেস্ট খেলতে নামা বোনার ১৪৩ বলে ৪৬ রানে। সেঞ্চুরির সুবাস জাগিয়ে আরেক অভিষিক্ত মেয়ার্সের সংগ্রহ ১৫৩ বলে ৯১ রান।
জয়ের জন্য উইন্ডিজের চাই আরও ১৯৮ রান। তাদের হাতে রয়েছে দুই সেশন ও ৭ উইকেট। টেস্টের চতুর্থ ইনিংসে ৩৯৫ রানে লক্ষ্য পেরিয়ে যাওয়া ভীষণ কঠিন। যেভাবে উইন্ডিজের দুই ব্যাটসম্যান খেলছেন, তাতে বাংলাদেশের ভীত হওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে।
দুজনের অবিচ্ছিন্ন জুটির সংগ্রহ ২৮০ বলে ১৩৮ রান। বোনার খেলছেন দেখেশুনে। মেয়ার্স আছেন কিছুটা আগ্রাসী ভূমিকায়। তবে বাজে বল পেলে সেগুলো সীমানাছাড়া করতে কার্পণ্য নেই কারও।
বাংলাদেশের তিন স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম ও নাঈম হাসান উইকেট থেকে টার্ন পাচ্ছেন। কিন্তু কিছু আলগা বল করায় সরে যাচ্ছে চাপ। বিশেষ করে, নাঈম বেশ খরুচে বোলিং করছেন। তার মতো মোস্তাফিজুর রহমানের ওপরও দাপট দেখিয়েছে উইন্ডিজ। এদিন ৩ ওভারে ২০ রান দিয়েছেন এই বাঁহাতি পেসার।
মেয়ার্সকে সাজঘরে ফেরানোর একাধিক সুযোগ পেয়েও সফল হয়নি বাংলাদেশ। এই বাঁহাতি তখন ছিলেন ৪৭ রানে। তাইজুলের বলে এলবিডব্লিউয়ের আবেদনে আম্পায়ার সাড়া না দেওয়ায় রিভিউও নেননি অধিনায়ক মুমিনুল হক। পরে টিভি রিপ্লেতে দেখা যায়, বল গিয়ে আঘাত করত স্টাম্পে। দুই ওভার পরেই ফের হতাশায় পুড়তে হয় স্বাগতিকদের। মিরাজের ডেলিভারিতে স্লিপে ক্যাচ নিতে ব্যর্থ হন নাজমুল ইসলাম শান্ত।
ওই বলে উল্টো সিঙ্গেল নিয়ে টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম হাফসেঞ্চুরির স্বাদ নেন মেয়ার্স। ৮৯ বলে ফিফটিতে পৌঁছে রানের চাকা সচল রেখে তিনি চালিয়ে যাচ্ছেন ব্যাটিং। মোস্তাফিজকে একই ওভারেই মারেন চার-ছক্কা।
নার্ভাস নাইন্টিজে থাকা মেয়ার্স প্রথম সেশনের শেষ ওভারেও ফিরতে পারতেন সাজঘরে। তাইজুলের আরেকটি এলবিডব্লিউয়ের আবেদন আম্পায়ারের কাছে প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পর রিভিউ নেন মুমিনুল। কিন্তু আম্পায়ার্স কল হওয়ায় বিপদ ঘটেনি উইন্ডিজের। এর আগে বাংলাদেশ রিভিউ না নেওয়ায় বোনারও ব্যক্তিগত ২৫ রানে বেঁচে যান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
(পঞ্চম দিনের প্রথম সেশন শেষে)
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস: ৪৩০
ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম ইনিংস: ২৫৯
বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংস: ২২৩/৮ (ইনিংস ঘোষণা)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ দ্বিতীয় ইনিংস: ৭১ ওভারে ১৯৭/৩ (আগের দিন ১১০/৩) (বোনার ৪৩*, মেয়ার্স ৯১*; মোস্তাফিজ ০/৩৪, তাইজুল ০/২৫, মিরাজ ৩/৮২, নাঈম ০/৪৮)।
Comments