সারা দেশে একযোগে চলছে করোনার টিকাদান
সারা দেশে একযোগে চলছে করোনার টিকাদান কর্মসূচি। আজ রোববার সকাল স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে টিকাদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। টিকাদান কর্মসূচির প্রথম দিনে দেশের বিভিন্ন জেলার ৯৫৫টি হাসপাতালে টিকা দেওয়া হবে।
এই কর্মসূচি বাস্তবায়নে মোট দুই হাজার ১৯৬টি দল কাজ করছে। গতকাল বিকেল ৪টা পর্যন্ত মোট তিন লাখ ২৮ হাজার ১৩ জন ভ্যাকসিন নিতে অনলাইনে নিবন্ধন করেছেন।
খুলনা
সকাল ১০টায় খুলনা মেডিকেল কলেজ কেন্দ্রে সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক ভ্যাকসিন গ্রহণের মাধ্যমে টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। এরপর টিকা নেন খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক এটিএম মঞ্জুর মোর্শেদ, খুলনা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল আহাদ।
খুলনা নগরীতে মোট ১৩টি টিকাদান কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। এ ছাড়া, নয়টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একটি করে এবং খুলনার জাহানাবাদ সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে একটি কেন্দ্রে টিকা দেওয়া হচ্ছে। টিকা দেওয়ার পাশাপাশি প্রতিটি কেন্দ্রে নিবন্ধন প্রক্রিয়া চালু রয়েছে।
তালুকদার আব্দুল খালেক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত যাদের ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে তাদের তেমন কোনো পাশ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। তাই ভ্যাকসিনকে কেন্দ্র করে কেউ গুজব ছড়ালে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আজ যারা টিকা নেবেন, তাদের পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। প্রয়োজনে চিকিৎসা দিতে ২৪ ঘণ্টার জন্য মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখতে স্বাস্থ্যসেবা সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’
খুলনার সিভিল সার্জন নিয়াজ মোহাম্মদ বলেন, খুলনায় প্রাথমিক পর্যায়ে মোট এক লাখ ৬৮ হাজার ডোজ করোনা ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। যার মধ্যে ৪৮ হাজার ৯৬০ ডোজ ভ্যাকসিন দেওয়া হবে সিটি করপোরেশন এলাকায়। সব কেন্দ্রে টিকা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। নগরীর ১৩টি কেন্দ্রে ২৯টি বুথে ২৯টি টিম কাজ করছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কেন্দ্রে তিনটি করে বুথে মোট ২৭টি টিম কাজ করছে। আগেই তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি টিমে দুই জন করে টিকাদানকারী এবং চার জন করে স্বেচ্ছাসেবক কাজ করছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত টিকা দেওয়া হবে। প্রথম পর্যায়ে দুইটি শুক্রবার বাদ দিয়ে মোট ১২ দিন ভ্যাকসিন প্রদান কর্মসূচি চলবে। দুই সপ্তাহে খুলনার ৮৪ হাজার মানুষকে টিকা দেওয়ার প্রস্তুতি রয়েছে। ৮ থেকে ১২ সপ্তাহ পর তাদের দ্বিতীয় ডোজ প্রদান করা হবে।’
চাঁপাইনবাবগঞ্জ
সকাল ১০টায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতালে জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ টিকা নিয়ে কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। পরে সিভিলে সার্জন ডা. জাহিদ নজরুল চৌধুরীসহ স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা টিকা নেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ মোট ২০টি কেন্দ্রে টিকাদান কর্মসূচি চলছে। প্রথম দফায় জেলায় চার হাজার ৮০০ ভ্যাকসিন এসেছে।
বরিশাল
বরিশাল বিভাগের ছয় জেলার ৪২টি উপজেলায় ১৩১টি বুথে চলছে টিকাদান কর্মসূচি। ইতোমধ্যে বরিশাল বিভাগে এক হাজার ৭৬৭ জন রেজিস্ট্রেশন করেছেন। বাকেরগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বরিশাল বিভাগের টিকাদান কর্মসূচির উদ্ধোধন করেন সংসদ সদস্য নাসরীন জাহান রত্না।
সকাল ৯টায় বরিশাল সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আটটি বুথে টিকাদান কর্মসূচির উদ্ধোধন করেন।
বাকেরগঞ্জে বরিশাল জেলা সিভিল সার্জন ডা. মনোয়ার হোসেন, বরিশাল জেনারেল হাসপাতালে ডা. পীযূষ কান্তি দাস ও শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ বুথে শেবাচিম’র সাবেক অধ্যক্ষ ডা. অসিত ভূষণ দাস প্রথমে টিকা নেন।
টিকা নেওয়ার পরে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. বাকির হোসেন বলেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। আমি টিকা নিতে পেরে আনন্দিত বোধ করছি। আমি প্রথমে টিকা নিয়েছি যেন সবাই নিতে উৎসাহ বোধ করেন।’
বরিশাল জেলায় মোট ১৭টি ভ্যাকসিন কেন্দ্র রয়েছে। এর মধ্যে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চারটি ও জেনারেল হাসপাতালে দুটি কেন্দ্র রয়েছে।
সিলেট
সকাল ১০টা ৫৪ মিনিটে সিলেট সিটি কাউন্সিলর তৌফিক বিকাশ লিপন এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে টিকা নেন। প্রথম দিনে সাত শ মানুষকে টিকা দেওয়া হবে। সিলেট জেলায় মোট ৫২টি বুথে একযোগে টিকাদান কর্মসূচি চলছে। এর মধ্যে এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১২টি, পুলিশ লাইন্স হাসপাতালে একটি, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চারটি এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১২টি বুথ স্থাপন করা হয়েছে।
গাজীপুর
আমাদের গাজীপুর সংবাদদাতা জানিয়েছেন, জেলায় আজ সকাল ১১টার দিকে কোভিড-১৯ টিকার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়েছে। সিভিল সার্জন ডা. খায়রুজ্জামান জেলার প্রথম টিকা গ্রহণকারী হিসেবে এর উদ্বোধন করেন।
জেলায় সাতটি কেন্দ্রের মাধ্যমে আজ কোভিড-১৯ এর টিকা দেওয়া হচ্ছে।
উদ্বোধনের সময় গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এস এম তরিকুল ইসলাম, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র অ্যাডভোকেট মো. জাহাঙ্গীর আলম, শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. আব্দুল কাদের, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নন্দিতা মালাকার প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
‘কোভিড-১৯ টিকা গ্রহণের জন্য প্রতি মুহূর্তে নিবন্ধনকারীদের সংখ্যা বাড়ছে’ উল্লেখ করে সিভিল সার্জন ডা. খায়রুজ্জামান গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, আজ সকাল পর্যন্ত পাঁচ হাজারের বেশি মানুষ টিকা গ্রহণের জন্য নিবন্ধিত হয়েছেন।
জেলার শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এক নারী ও দুই পুরুষকে টিকাদানের মাধ্যমে কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়েছে। গাজীপুর-৩ আসনের সাংসদ ইকবাল হোসেন সবুজ আজ সকাল ১১টায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আয়োজিত টিকাদান কেন্দ্রে এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
যে তিনজন টিকা গ্রহণ করেন তারা প্রত্যেকেই ওই হাসপাতালে কর্মরত। তাদের মধ্যে প্রথম টিকা গ্রহণকারী ফিরোজা খাতুন (৩২) সেই হাসপাতালের একজন প্রসূতিকর্মী।
অপর টিকা গ্রহণকারী স্বাস্থ্য সহকারী আমীরুজ্জামান (৪৭) ও চিকিৎসক নাজমুল আহসানকে (৩২) টিকা দেন নার্স সুপারভাইজার ফরিদা খাতুন ও সিনিয়র স্টাফ নার্স বিলকিস বেগম।
নার্স সুপারভাইজার ফরিদা খাতুন ডেইলি স্টারকে বলেছেন, ‘টিকার একটি ভায়েল থেকে ১০জনকে টিকা দেওয়া যাবে। টিকা পুশ করার পর কমপক্ষে তিন সেকেন্ড পর সুঁচ খোলা হয়। টিকা গ্রহণের পর গ্রহীতাকে অল্প সময় বসিয়ে রাখা হয়।’
টিকা গ্রহণকারী আমীরুজ্জামান বলেছেন, ‘আমি একজন স্বাস্থ্যকর্মী। আমি নিয়মিত হাম, ধনুষ্টংকার, পোলিও, হুপিংকাশিসহ বিভিন্ন ধরণের টিকা দিয়ে আসছি। স্বাস্থ্য বিভাগে এটিই আমার চাকরি। টিকা নেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হয়নি। আমি স্বপ্রণোদিত হয়ে টিকা নিয়েছি। অন্যদেরকেও এ টিকা নেওয়ার আহবান জানাচ্ছি। এতে করোনা ভাইরাসের মতো মহামারি থেকে নিজেকে রক্ষা করা সম্ভব।’
শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. প্রণয় ভূষণ ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন, তার উপজেলায় নয় হাজার ডোজ টিকা সরবরাহ করা হয়েছে। সরবরাহকৃত ডোজ দিয়ে সাড়ে ৪ হাজার ব্যক্তিকে টিকা দেওয়া সম্ভব। অনলাইনে ২০ জন তাদের হাসপাতালের অধীনে নিবন্ধন করেছেন। প্রত্যেককে আগামী শনিবার টিকা নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ
আমাদের নারায়ণগঞ্জ সংবাদদাতা জানিয়েছেন, জেলায় ছয়টি কেন্দ্রে করোনার টিকা দেওয়া হচ্ছে। প্রথম দিনে টিকা ৬০০ জনকে টিকা দেওয়ার কথা রয়েছে।
আজ রোববার সকাল সোয়া ১০টায় নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে টিকা দেওয়া শুরু হয়। এটি চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
প্রথম ধাপে টিকা নিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ সিভিল সার্জন ডা. মুহাম্মদ ইমতিয়াজ, জেনারেল হাসপাতালের কোলরেক্টাল সার্জন ডা. মীর রাশেখ আলম অভি, সেনাবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা আতাউর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা করিম উল্লাহ, হরিহর পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা শামসুন নাহার বেগম, উপজেলা কৃষি অফিসের সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবু সিদ্দিক ভূঁইয়া, জেলা এজিও অফিসের অডিট কর্মকর্তা ওসমান গণিসহ বেশ কয়েকজন।
টিকা নেওয়ার ৩০ মিনিট পর সিভিল সার্জন ডা. মুহাম্মদ ইমতিয়াজ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জ জেলার স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান হিসেবে আমি স্বেচ্ছায় প্রথম টিকা নিয়েছি। আমি সুস্থ আছি। আমার সঙ্গে যারা টিকা নিয়েছে সবাই সুস্থ আছেন। কারো কোন সামান্যতম প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি কিংবা কেউ কোনো অভিযোগ করেনি।’
‘সরকারি, বেসরকারি সবাইকে আমি অনুরোধ করবো সবাই নিবন্ধন করুন এবং করোনার টিকা নিন। এটা ১০০ ভাগ নিরাপদ ও ১০০ ভাগ আস্থা নিয়ে কেন্দ্র এসে টিকা নিতে পারেন। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী সবকিছু মেনে আমরা এ টিকা কার্যক্রম শুরু করেছি,’ যোগ করেন তিনি।
তিনি জানিয়েছেন, নারায়ণগঞ্জের ছয়টি কেন্দ্রে এক সঙ্গে টিকা দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। হাসপাতালগুলোর মধ্যে রয়েছে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল, ৩০০ শয্যা হাসপাতাল ও চারটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।
জেলায় প্রথম নারী টিকা গ্রহণকারী হরিহর পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা শামসুন নাহার বেগম ডেইলি স্টারকে বলেছেন, ‘টিকা নেওয়ার আগেও মনের মধ্যে ভয় ছিল। কিন্তু, টিকা পুশ করার পর সেই ভয়টা কেটে গেছে। এখানে প্রথম নারী হিসেবে টিকা নিতে পেরে ভালো লাগছে। টিকা নেওয়ার পর এখনো কোনো পার্শ্বপতিক্রিয়া অনুভূতি হয়নি। আমি সুস্থ আছি। সবাইকে বলবো আমি টিকা নিয়েছি, আপনিও নিন।’
সিটি করপোরেশন এলাকায় টিকাদান কেন্দ্র হিসেবে পরিদর্শন করেছেন সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী।
পাবনা
পাবনায় কোভিড-১৯ রোগের টিকা দেওয়া চলছে। আজ রোববার সকালে নিজে প্রথম টিকা নিয়ে কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন পাবনা সদর আসনের সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক প্রিন্স।
পাবনার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে সকাল সাড়ে ১০টায় টিকা নেন তিনি।
এরপর পাবনা জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রেজাউল রহিম লাল, জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদ, পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলাম খান, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. এম রোস্তম আলীসহ ১০ জন টিকা নেন।
গত ২৯ জানুয়ারি ৮৪ হাজার ডোজ টিকা পাবনায় এসে পৌঁছে। জেলা ইপিআই কেন্দ্রে করোনার ভ্যাকসিন সংরক্ষণ করা হচ্ছে। সব উপজেলার জন্য তিনটি করে বুথ, সদর উপজেলায় আটটি বুথে করোনার টিকা দেওয়া হচ্ছে।
পাবনার সিভিল সার্জন ডা. আব্দুল মোমেন গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, করোনা মোকাবিলায় প্রথম সারির যোদ্ধা চিকিৎসক, নার্স, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, গণমাধ্যমকর্মী, মুক্তিযোদ্ধা ও বয়স্ক মানুষেরা টিকা পাওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকারপাবেন। এ ছাড়াও পরবর্তী ধাপে পর্যায়ক্রমে অন্য শ্রেণি-পেশার মানুষদের টিকা দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন
সারা দেশে টিকাদান শুরু
Comments