আবাসিক হোটেলে থেকে বাসাবাড়িতে চুরি!

তিনি থাকতেন নগরীর বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে। তবে, রাতের বেলা বাসাবাড়ির জানালা কিংবা বেলকনির গ্রিল কেটে চুরি করাই তার পেশা। এমন একজনকে চট্টগ্রামের লাভলেন এলাকা গ্রেপ্তার করেছে কোতয়ালী থানা পুলিশ।
স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

তিনি থাকতেন নগরীর বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে। তবে, রাতের বেলা বাসাবাড়ির জানালা কিংবা বেলকনির গ্রিল কেটে চুরি করাই তার পেশা। এমন একজনকে চট্টগ্রামের লাভলেন এলাকা গ্রেপ্তার করেছে কোতয়ালী থানা পুলিশ।

গতকাল রাতব্যাপী অভিযান চালিয়ে কোতয়ালী থানাধীন রিয়াজউদ্দিন ফলমন্ডি এলাকার ‘হোটেল হার্ট অব দ্যা সিটি’র একটি কক্ষ থেকে শফিকুল ইসলাম প্রকাশ শইক্কাকে (৩১) চুরির অভিযোগে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

আজ রোববার দ্য ডেইলি স্টারকে এসব তথ্য জানান কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নেজাম উদ্দিন।

তিনি বলেন, ‘শফিক একজন প্রফেশনাল চোর। দিনে আবাসিক হোটেলে থাকে, কিন্তু রাতের বেলা মানুষের বাসা বাড়ির গ্রিল কেটে স্বর্ণ, টাকা পয়সা, নিয়ে পালিয়ে যায়। চট্টগ্রাম, ঢাকা, ফেনীর বিভিন্ন এলাকায় এই স্টাইলে সে চুরি করে বেড়ায়।’

ওসি নেজাম আরও বলেন, ‘গত ২২ জানুয়ারি লাভলেন এলাকার একটি বাড়িতে গ্রিল কেটে আইফোনসহ মূল্যবান জিনিস নিয়ে পালিয়ে যায় শফিক। এ ঘটনায় থানায় মামলা হলে সিসিটিভি ক্যামেরার সূত্র ধরে তাকে পুলিশ তাকে শনাক্ত করে।’

‘গ্রেপ্তারের সময় পুলিশ তার কাছ থেকে ৫০০ পিছ ইয়াবা উদ্ধার এবং এ ঘটনায় চোরাই ফোন কেনাবেচার দায়ে আনোয়ার হোসেন নামের এক চোরাই মোবাইল ব্যবসায়ীকে আটক করেছে,’ বলেন ওসি।

কোতয়ালী থানার উপপুলিশ পরিদর্শক (এস আই) মোমিনুল হাসান বলেন, ‘শফিক দিনে হোটেলে থাকলেও প্রতিরাতে বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে চুরি করে। শফিক অনায়াসেই কোনো মাধ্যম ছাড়াই ভবনের একতলা থেকে ১০ তলা বেয়ে উঠে যেতে পারে।’

তিনি আরও বলেন, ‘জানালার গ্রিলের উপর পা দিয়ে চাপ বা লোহার রড দিয়ে বিশেষ কায়দায় গ্রিল কাটতে পারে সে। তাকে গ্রেপ্তারের পর তার কাছ থেকে কিছু স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায় গত ৩ ফেব্রুয়ারি নগরীর পাঁচলাইশের একটি তিনতলা ভবন থেকে এই স্বর্ণালংকার চুরি করে সে।’

চুরি করতে গিয়ে চা বানিয়ে খেয়েছিলেন শফিক

পুলিশ জানায় গত ৩ ফেব্রুয়ারি পাঁচলাইশের আবাসিক এলাকায় ফজলুল তাজ ম্যানশনের ৩য় তলায় চুরি করে শফিক। ঘটনার সময় বাসার লোকজন কক্সবাজারে থাকায় ভিতর থেকে দরজা আটকিয়ে শফিক বাসার আলমারি ভেঙে ২৫ ভরির মতো স্বর্ণালংকার ও ল্যাপটপ চুরি করে। চুরির সময় বাসার ফ্রিজে থাকা ভাত ও মাংস দিয়ে ভাত খায়  এবং পরে বের হবার আগে নিজেই চা বানিয়ে খেয়ে ভবন বেয়ে নেমে যায়।

ওসি নেজাম জানান, গ্রেপ্তার এড়াতে ১৫ দিন পরপর জেলা পরিবর্তন করে শফিক। পরে একইভাবে সেই এলাকায় চুরি করে।

তার তথ্যমতে, বিভিন্ন এলাকায় শতাধিক চুরির সঙ্গে জড়িত শফিক। তার বিরুদ্ধে কোতয়ালী ও আকবরশাহ থানায় চারটি মামলা আছে।

Comments