আল-জাজিরার তথ্যচিত্র মন্দ সাংবাদিকতার দৃষ্টান্ত: এডিটরস গিল্ড

কাতারের আল-জাজিরা টেলিভিশন চ্যানেলে সম্প্রচারিত ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টার’স মেন’ তথ্যচিত্রটি মন্দ সাংবাদিকতার দৃষ্টান্ত বলে জানিয়েছে সম্পাদকদের সংগঠন এডিটরস গিল্ড।

তথ্যচিত্রটি বিশেষ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এবং অনেক ক্ষেত্রেই সাংবাদিকতার নীতি নৈতিকতা না মেনে প্রচার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি।

আজ রবিবার সংগঠনের পক্ষে সভাপতি মোজাম্মেল হক বাবুর সই করা পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা জানানো হয়।

এতে আরও বলা হয়, তথ্যচিত্রের পুরো বিষয়টি একটি পরিবারের সদস্যদের নিয়ে অথচ শিরোনাম করা হয়েছে ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টার’স মেন’। বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচারিত বিশেষ কিছু অভিযোগের বয়ান দিতে গিয়ে প্রমাণহীনভাবে ‘প্রাইম মিনিস্টার’স মেন’ টার্মটি ব্যবহার করা মন্দ সাংবাদিকতা বলে দাবি করছে এডিটরস গিল্ড। সংগঠনটি মনে করে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে নির্মিত ও পক্ষপাতদুষ্ট একটি তথ্যচিতে কোনওভাবেই অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার দৃষ্টান্ত হতে পারে না।

এডিটরস গিল্ড আরও জানায়, পুরো ডকুমেন্টারিটির ভিত্তি হলো একজন মানুষের কিছু অনানুষ্ঠানিক ও আড্ডার আলাপ যার কোনও গ্রহণযোগ্য প্রমাণ এতে উপস্থাপিত হয়নি। হাঙ্গেরি ও ফ্রান্সে মিলিয়ন মিলিয়ন ইউরোর বিনিয়োগের কথা বলেছে। এর উৎস দেখানো হয়নি কেবল মুখের কথাতেই বলা হয়েছে সরকারের কাজ পাইয়ে দেওয়ার বিনিময়ে বিরাট অর্থ লেনদেনের কথা। এসব অভিযোগের সমর্থনে ইউরোপীয় ইউনিয়ন কিংবা সংশ্লিষ্ট দেশ কোনও প্রশাসনিক বক্তব্যও আল জাজিরা দেয়নি।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সামিকে ‘জীবননাশের হুমকি’ দেওয়া ইমেইলের অরিজিনাল পেইজ ছিল না। ফলে এর সত্যতা নিয়েও প্রশ্ন উঠে। হাঙ্গেরি, ফ্রান্স বা মালয়েশিয়ার বিচরণকারী হিসেবে যাদের দেখানো হয়েছে এবং তাদের পাসপোর্ট জালিয়াতি, অন্য কাগজ জালিয়াতি, অর্থপাচার এসব নানা অপরাধের বর্ণনা আছে এসব বিষয়ে সেই সব দেশের সরকারের দিক থেকে কারও কোনো বক্তব্য না থাকায় এডিটরস গিল্ড এই তথ্যচিত্রের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে।

পুরোটা সময় গোপন ক্যামেরায় ধারণ করা ভিডিও দেখানো হয়েছে। এটি একটি মানসম্পন্ন সংবাদ মাধ্যম করতে পারে না। যাদের বিরুদ্ধে এতো কিছু তাদের বক্তব্য না থাকায় এটি সম্পূর্ণ সাংবাদিকতা পরিপন্থী কাজ হয়েছে বলে জানায় এডিটরস গিল্ড। দীর্ঘ দুই বছরের অনুসন্ধানের পর ‘তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও বক্তব্য পাওয়া যায়নি’ বলাটা অগ্রহণযোগ্য বলে মনে করছে সংগঠনটি।

স্পাই ওয়্যার কেনার বিষয়টি সরকারের নিজস্ব নীতি এবং সেটিও যে সত্যিই ইসরায়েলি কোম্পানি থেকে কেনা হয়েছে তার প্রমাণ নেই তথ্যচিত্রে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বলে এক প্রকার সাংবাদিকতার মতোই এখানে দুজন ইসরায়েলি কর্মকর্তার কথা বলে তাদের ছবি ঢেকে দেওয়া হয়েছে। এগুলো নিছক চাতুর্য ছাড়া আর কিছু নয় বলে মনে করে এডিটরস গিল্ড। এক ঘণ্টার তথ্যচিত্রে একজন অন্যতম সাক্ষাৎকারদাতা বাংলাদেশের আদালত কর্তৃক দণ্ডিত। এডিটরস গিল্ড যৌক্তিক প্রমাণ দিয়ে সাংবাদিকতার স্বার্থে যেকোনো সংবাদ বা অনুষ্ঠানকে স্বাগত জানায়। কিন্তু উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কোনও কিছু প্রচারিত হলে তা প্রকারান্তরে গণতন্ত্র ও সাংবাদিকতা উভয়কেই ক্ষতিগ্রস্ত করে বলে জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে।

Comments

The Daily Star  | English

Bridge this year, full benefits not before 2030

The Bangabandhu Railway Bridge over the Jamuna is set to be inaugurated next month, but people will not get the full benefit of it until at least 2030.

6h ago