কালকিনি পৌরসভা নির্বাচন

এসপি মেয়র প্রার্থীকে গাড়িতে তুলে ওবায়দুল কাদেরের কাছে নিয়ে গেলেন

মসিউর রহমান

মাদারীপুরের কালকিনি পৌরসভার স্বতন্ত্র মেয়রপ্রার্থী মসিউর রহমান ওরফে সবুজকে পুলিশের গাড়িতে তুলে নিয়ে ঢাকায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করানোর অভিযোগ উঠেছে। জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুব হাসানের বিরুদ্ধে সবুজের অভিযোগ, অসত্য কথা বলে তাকে ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে দেখা করানো হয়েছে।

পুলিশের গাড়িতে ওঠার পর সবুজ নিখোঁজ হয়েছেন এমন গুজব ছড়িয়ে পড়ায় শনিবার সন্ধ্যায় তার শত শত সমর্থক থানার সামনে অবস্থান নেন। বিক্ষুব্ধ সমর্থকরা একপর্যায়ে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর চালান। আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীর সমর্থকদের সঙ্গেও সেখানে তাদের সংঘর্ষ হয়। লাঠি ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে চলা সংঘর্ষে আহত হন শতাধিক মানুষ। কালকিনি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেন কমপক্ষে ৫৬ জন। গুরুতর অবস্থায় শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয় দুই জনকে। সংঘর্ষের সময় বিস্ফোরণ ও গুলির শব্দও শোনা যায়।

১১ ঘণ্টা পর শনিবার দিবাগত রাত পৌনে ৪টায় বাড়িতে ফিরেন সবুজ।

সবুজ মুঠোফোনে বলেন, ‘আমাকে বিকেলে হঠাৎ পুলিশ সুপার ফোন করে দেখা করতে বলেন। তিনি থানার ওসিকে আমার কাছে পাঠান। তখন আমি ওসির কাছে জিজ্ঞাসা করলে ওসি জানায় আইন শৃঙ্খলার ব্যাপারে এসপি আমার সঙ্গে কথা বলবেন। বিকেল ৫টার দিকে সরল বিশ্বাসে ওসির গাড়িতে উঠে এসপির অফিসে যাই। পরে এসপি আমাকে তার গাড়িতে উঠিয়ে ঢাকায় নিয়ে যায়।’

এসপি কেন ঢাকায় নিয়ে গেলেন? প্রশ্নের জবাবে সবুজ বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের কাছে এসপি আমাকে নিয়ে যান। ওবায়দুল কাদের আমাকে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর অনুরোধ জানিয়ে নৌকার প্রার্থী এস এম হানিফের পক্ষে কাজ করতে বলেন।’

নির্বাচনে প্রার্থিতার ব্যাপার সবুজ বলেন, ‘আমি আওয়ামী লীগের কোনো পদে নেই। আমি কালকিনি উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি। আমি দলের কাছে মনোনয়নও চাইনি। জনগণের হয়ে স্বতন্ত্র নির্বাচন করছি। তাই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের অনুরোধে আমি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াব না। আমি নির্বাচন করব এবং শেষ পর্যন্ত লড়ে যাব।’

সবুজ আরও বলেন, ‘পুলিশের মাধ্যমে আমি ঢাকায় গিয়েছি। এসপি আমাকে সত্য বলে ঢাকায় নিতে পারতেন। তাহলে আর এমন সংঘর্ষ হতো না। ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে কথা শেষ করে আমারই এলাকার এক বড় ভাইয়ের গাড়িতে কালকিনি ফিরেছি।’

সবুজের অভিযোগের ব্যাপারে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুব হাসান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘সবুজ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কাজে আমার অফিসে এসেছিলেন। পরে তিনি ঢাকায় গেছেন তার ব্যক্তিগত কাজে। আমরা তাকে যাওয়ার সময় সহযোগিতা করেছি। সবুজ নিখোঁজ এই ধারণা থেকে তার সমর্থকরা থানার সামনে বিক্ষোভ করে। যখন তার পরিবার সঠিক ব্যাপারটা জানতে পারে তখন তারা থানা থেকে চলে যান।

তিনি আরও বলেন, ‘সবুজের পরিবার সন্ধ্যার পরে থানা থেকে সরে গেলে সেখানে অবস্থান নেয় বিদ্রোহী মেয়র প্রার্থী সোহেল রানা মিঠুর সমর্থকরা। তারাই মূলত নৌকার সমর্থকদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায়। তবে পুলিশ তৎপর থাকায় হামলাকারীরা বেশি কিছু করতে পারেনি। পরিস্থিতি এখন শান্ত আছে। এ ব্যাপারে কালকিনি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি হয়েছে।’

Comments

The Daily Star  | English
ACC finds Nagad corruption evidence

ACC raids Nagad HQ over hiring controversy

"During the drive, the ACC team found initial evidence of irregularities in the recruitment process"

43m ago