রিজওয়ানের সেঞ্চুরিতে দ. আফ্রিকাকে বড় লক্ষ্য দিয়েছে পাকিস্তান
আগের দিনই টপ অর্ডারের ছয় ব্যাটসম্যান বিদায় নিয়েছেন সাজঘরে। একমাত্র বিশেষজ্ঞ ব্যাটসম্যান হিসেবে উইকেটে টিকে ছিলেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। দারুণ কিছু করতে না পারলে ঘরের মাঠে টেস্ট হারার বড় শঙ্কায় পাকিস্তান। আর দলের অতি প্রয়োজনের সময় দারুণ জ্বলে উঠলেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ফলাফল যাই হোক, তার ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরিতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে বড় লক্ষ্য ছুঁড়ে দিতে পেরেছে স্বাগতিকরা।
রাওয়ালপিণ্ডিতে টেস্টের চতুর্থ দিন শেষে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ১ উইকেটে ১২৭ রান তুলেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। এর আগে ২৯৮ রান তুলে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে অলআউট হয় পাকিস্তান। ফলে প্রোটিয়াদের লক্ষ্য দাঁড়ায় ৩৭০ রানের।
আর এ লক্ষ্য তাড়ায় দলীয় ৩৩ রানেই ওপেনার ডিন এলগারকে হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। শাহিন শাহ আফ্রিদির অফস্টাম্পের বেশ বাইরে রাখা বলে জায়গা দাঁড়িয়ে খোঁচা মারতে গিয়ে নিজের বিপদ ডেকে আনেন এলগার। তবে দ্বিতীয় উইকেটে রাসি ভ্যান ডার ডুসেনকে নিয়ে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন আরেক ওপেনার এইডেন মার্করাম। এরমধ্যেই ৯৪ রানের দারুণ এক জুটি গড়েছেন এ দুই ব্যাটসম্যান। ফলে শেষ দিনের রোমাঞ্চকর পরিণতির অপেক্ষায় রয়েছে রাওয়ালপিণ্ডি টেস্ট।
সকালে আগের দিনের ৬ উইকেটে ১২৯ রান নিয়ে এদিন ব্যাট করতে নামে পাকিস্তান। রিজওয়ান তখন ২৮ রানে দাঁড়িয়ে। সঙ্গী হাসান আলী তখনও রানের খাতা খুলতে পারেননি। পরে খুলতে পারলে খুব বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। তবে অষ্টম উইকেট জুটিতে ইয়াসির শাহকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টায় নামেন রিজওয়ান। ৫৩ রানের দারুণ এক জুটিতে পাকিস্তানকে বড় লিডের আশাও দেখান।
তবে ইয়াসিরের বিদায় ফের শঙ্কা নেমেছিল তাদের। কিন্তু নবম উইকেটে নুমান আলির সঙ্গে অতিমানবীয় এক জুটিতে সব শঙ্কা উড়িয়ে দলকে বড় সংগ্রহ এনে দেন রিজওয়ান। স্কোরবোর্ডে ৯৭ রান যোগ করেন এ দুই ব্যাটসম্যান। এ জুটি ভাঙতেই অবশ্য ৫ রানের ব্যবধানে শেষ উইকেটটিও হারায় পাকিস্তান। ফলে দ্বিতীয় ইনিংসে ২৯৮ রান তুলতে সক্ষম হয় দলটি।
তবে এক প্রান্ত আগলে রেখে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকেছেন রিজওয়ান। ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি তুলে ১১৫ রান করে মাঠ ছাড়েন। ২০৪ বলের এ ইনিংসটি তিনি সাজিয়েছেন ১৫টি বাউন্ডারি দিয়ে। নুমানের ব্যাট থেকে আসে মূল্যবান ৪৫ রান। ৭৮ বলে ৬টি চার ও ২টি ছক্কায় এ রান করেন তিনি। ২৩ রান করেন ইয়াসির।
দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে দারুণ বোলিং করে ক্যারিয়ারের প্রথম ফাইফার তুলে নিয়েছেন জর্জ লিন্ডে। ৬৪ রানের খরচায় পেয়েছেন ৫টি উইকেট। ১১৮ রানের বিনিময়ে ৩টি উইকেট নিয়েছেন কেশভ মহারাজ। বাকী ২টি শিকার কাগিসো রাবাদার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: (চতুর্থ দিন শেষে)
পাকিস্তান প্রথম ইনিংস: ২৭২
দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথম ইনিংস: ২০১
পাকিস্তান দ্বিতীয় ইনিংস: ২৯৮ (আগের দিন ১২৯/৬) (ইমরান ০, আবিদ ১৩, আজহার ৩৩, বাবর ৮, ফাওয়াদ ১২, রিজওয়ান ১১৫*, ফাহিম ২৯, হাসান ৫, ইয়াসির ২৩, নুমান ৪৫, আফ্রিদি ৪; রাবাদা ২/৩৪, নরকিয়া ০/৫৭, মহারাজ ৩/১১৮, মুল্ডার ০/১৬, লিন্ডে ৫/৬৪)।
দক্ষিণ আফ্রিকা দ্বিতীয় ইনিংস: (লক্ষ্য ৩৭০) ৪১ ওভারে ১২৭/১ (মার্করাম ৫৯*, এলগার ১৭, ডুসেন ৪৮*; আফ্রিদি ১/২২, হাসান ০/৩৬, নুমান ০/৩৫, ইয়াসির ০/২১, ফাহিম ০/১৩)।
Comments