গোপালপুরে আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে সহিংসতা: ২ মামলা, গ্রেপ্তার ৮
টাঙ্গাইলের গোপালপুর পৌরসভার আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গতকাল সোমবার হওয়া সহিংসতায় একজন নিহত ও ব্যাপক ভাঙচুরের ঘটনায় গোপালপুর থানায় রাতেই হত্যাসহ দুইটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
টাঙ্গাইলের সহকারী পুলিশ সুপার (গোপালপুর সার্কেল) আমীর খসরু আজ মঙ্গলবার সকালে দ্য ডেইলি স্টারকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, হত্যা মামলাটি দায়ের করেছেন সহিংসতায় নিহত মোহাম্মদ খলিলের বাবা নসিমুদ্দিন। এই মামলায় অজ্ঞাতনামা ২০-২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থীর নির্বাচনি অফিস ভাঙচুরের ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ১৫-২০ জনের বিরুদ্ধে অপর মামলাটি করেছেন মোহাম্মদ হীরা নামে ওই প্রার্থীর একজন কর্মী। এই মামলায় আট জনকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে গোপালপুর থানা পুলিশ।
এর আগে, গতকাল সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী রকিবুল হক ছানা এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী (বিদ্রোহী আওয়ামী লীগ) ইঞ্জিনিয়ার গিয়াসউদ্দিন খন্দকারের সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় ডুবাইল আটপাড়া গ্রামের রিকশা-ভ্যানচালক মোহাম্মদ খলিল (৩৫) নিহত হন। আহত হন আরও কয়েকজন। এ ছাড়াও সংঘর্ষ চলাকালে বিদ্রোহী প্রার্থী গিয়াসউদ্দিনের বাড়ি, তার ভাইয়ের দোকান ও আওয়ামী লীগ প্রার্থীর নির্বাচনি অফিস ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। একটি গাড়িতেও অগ্নিসংযোগ করা হয়।
নিহত খলিলকে নিজের একজন সমর্থক দাবি করে বিদ্রোহী প্রার্থী গিয়াসউদ্দিন অভিযোগ করেন, নির্বাচনে পরাজয় নিশ্চিত জেনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সমর্থকরা নিজেরা নিজেদের অফিস ভেঙ্গে পরে তার বাড়ি এবং তার ভাইয়ের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করে। এ ঘটনায় তিনি আজ মামলা করবেন বলেও জানিয়েছেন। এ ছাড়া, হত্যার ঘটনায় পুলিশের চাপে দায়ের করা মামলাটি যথাযথভাবে দায়ের করতে না পারায় নিহত খলিলের বাবা নতুন মামলা করবেন বলেও জানান গিয়াস।
অপরদিকে আওয়ামী লীগ প্রার্থী বর্তমান মেয়র রকিবুল হক ছানা দাবি করেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী গিয়াসউদ্দিন স্থানীয় বিএনপি দলীয় প্রার্থীর সঙ্গে বৈঠক করে পরিকল্পিতভাবে তার নির্বাচনি অফিস ভাঙচুরসহ মিথ্যা গুজব ছড়িয়ে এসব ঘটনা ঘটিয়েছেন। গিয়াসউদ্দিন ও বিএনপি সমর্থকদের মধ্যকার সংঘর্ষের ঘটনায় খলিল নিহত হয়ে থাকতে পারেন বলেও রকিবুল দাবি করেন।
গোপালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোশারফ হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘ময়নাতদন্তের জন্য নিহত খলিলের মরদেহ আজ টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। পৌর এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে সার্বিক পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।’
উল্লেখ্য, আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি চতুর্থ ধাপে গোপালপুর পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
Comments