কুষ্ঠ নির্মূলে আমাদের করণীয়

গত ৩১ জানুয়ারি দেশজুড়ে বিভিন্ন কর্মসূচি ও অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বিশ্ব কুষ্ঠ দিবস পালিত হলো। ১৯৫৩ সাল থেকে প্রতি বছর জানুয়ারির শেষ রোববার কুষ্ঠের ব্যাপারে জনসচেতনতা বাড়াতে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। দিবসটির প্রচলন করেন ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব এন্টি-লেপ্রসি অ্যাসোসিয়েশনস (আইএলইপি)-এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ফরাসি মানবতাবাদী রাউল ফলেরিউ। এ দিনটিকে তিনি বেছে নিয়েছিলেন, ক্যাথলিক ক্যালেন্ডারে এপিফ্যানির পরে তৃতীয় রোববার হিসেবে—যে দিন যিশুখ্রিষ্ট একজন কুষ্ঠ রোগীকে আরোগ্য লাভে সহায়তা করেছিলেন বলে কথিত আছে। ঘটনাক্রমে, একই সঙ্গে দিনটি ছিল ৩০ জানুয়ারি মহাত্মা গান্ধীর প্রয়াণ দিবস, যিনি আজীবন সমাজে কুষ্ঠ রোগীদের অবহেলা ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। এ কারণে, ভারতে প্রতি বছর ৩০ জানুয়ারি কুষ্ঠ দিবস পালন করা হয়ে থাকে।
ত্রয়োদশ শতাব্দির আঁকা ছবিতে দুজন কুষ্ঠ রোগীকে নগরে প্রবেশে বাধা দেওয়ার ঘটনা উঠে এসেছে। ছবি: উইকিপিডিয়া

গত ৩১ জানুয়ারি দেশজুড়ে বিভিন্ন কর্মসূচি ও অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বিশ্ব কুষ্ঠ দিবস পালিত হলো। ১৯৫৩ সাল থেকে প্রতি বছর জানুয়ারির শেষ রোববার কুষ্ঠের ব্যাপারে জনসচেতনতা বাড়াতে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। দিবসটির প্রচলন করেন ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব এন্টি-লেপ্রসি অ্যাসোসিয়েশনস (আইএলইপি)-এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ফরাসি মানবতাবাদী রাউল ফলেরিউ। এ দিনটিকে তিনি বেছে নিয়েছিলেন, ক্যাথলিক ক্যালেন্ডারে এপিফ্যানির পরে তৃতীয় রোববার হিসেবে—যে দিন যিশুখ্রিষ্ট একজন কুষ্ঠ রোগীকে আরোগ্য লাভে সহায়তা করেছিলেন বলে কথিত আছে। ঘটনাক্রমে, একই সঙ্গে দিনটি ছিল ৩০ জানুয়ারি মহাত্মা গান্ধীর প্রয়াণ দিবস, যিনি আজীবন সমাজে কুষ্ঠ রোগীদের অবহেলা ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। এ কারণে, ভারতে প্রতি বছর ৩০ জানুয়ারি কুষ্ঠ দিবস পালন করা হয়ে থাকে।

কুষ্ঠ মানব ইতিহাসের সবচেয়ে পুরোনো রোগগুলোর মধ্যে অন্যতম। পৃথিবীর তিনটি প্রধান ধর্ম, যথা- হিন্দু, খ্রিস্টান ও ইসলাম ধর্মের পবিত্র গ্রন্থগুলোতে এ রোগের উল্লেখ আছে। পৃথিবীর প্রাচীনতম সভ্যতার লীলাভূমি হিসেবে পরিচিত মিসর, চীন, গ্রিক, রোম, ভারত ইত্যাদি প্রায় সব কটি দেশের ইতিকথায় এর বিবরণ পাওয়া যায়। ধারণা করা হয়, এ রোগের ইতিহাস চার হাজার বছরের পুরনো। এ রোগের সবচেয়ে পুরনো কংকাল-নির্ভর প্রমাণ মেলে ভারতবর্ষে, যা প্রায় খ্রিষ্টপূর্ব দুই হাজার সালের সময়কার। তবে, রোগটির সাথে মানুষের পরিচয় কয়েক হাজার বছর আগের হলেও, এর প্রকৃত কারণ তাদের জানা ছিল না। তেমনি এর কোনো চিকিৎসাও তাদের জানা ছিল না। ফলে, শত সহস্র বছর ধরে এ রোগকে কেন্দ্র করে চলে আসে নানাবিধ অলীক ধারণা ও কুসংস্কার, যার নির্মম শিকার হয়ে সমাজে যুগের পর যুগ, বছরের পর বছর নিপীড়িত, নিগৃহীত হয়েছে এ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা। কোথাও এটাকে মনে করা হয়েছে বিধাতার অভিশাপ, কোথাও বা পাপাচারের ফসল। এ রোগের কার্যকারণ বা প্রতিকারের বিষয়ে তেমন কিছু না জানলেও লোকজন এটুকু বুঝতে পেরেছিল যে, এ রোগ ছোঁয়াচে, জন থেকে জনান্তরে ছড়াতে পারে। ফলে, সমাজের স্বার্থপরতার বলি হয়ে আক্রান্ত ব্যক্তিকে হতে হয়েছে অস্পৃশ্য, কোথাও সমাজচ্যুত, এমনকি ক্ষেত্র বিশেষে লোকালয় থেকে নির্বাসিত।

দিন বদলেছে। আধুনিক বিজ্ঞানের কল্যাণে আজ আমরা কুষ্ঠের কারণ, এর উপসর্গ ও ক্রমধারা সম্পর্কে সম্যক ওয়াকিবহাল। এর কার্যকর চিকিৎসাও আমাদের আয়ত্তে। এক্ষেত্রে মাইলফলক ছিল ১৮৭৩ সালে নরওয়ের বিজ্ঞানী গেরহার্ড হ্যানসেনের যুগান্তকারী আবিষ্কার। এই কৃতী বিজ্ঞানী গবেষণার মাধ্যমে প্রমাণ করেন, কুষ্ঠ আসলে একটি জীবাণুঘটিত রোগ, যা একটি ধীরলয়ে বংশ বিস্তার করা ব্যাকটেরিয়ার কারণে ঘটে। এই ব্যাকটেরিয়াটি আজ আমাদের কাছে Mycobacterium leprae নামে পরিচিত। সেই থেকে এ রোগটিও হ্যানসেনস ডিজিজ নামে পরিচিতি লাভ করে।

কুষ্ঠ চিকিৎসায় উল্লেখযোগ্য সাফল্য আসে ৪০-এর দশকে ডেপসন নামের এন্টিবায়োটিক আবিষ্কারের মধ্য দিয়ে। এ ওষুধটির সীমাবদ্ধতার মধ্যে ছিল, এটি বহু বছর বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আজীবন খাওয়া লাগত, যে কারণে চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে রোগীর অনুবর্তিতা নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে দাঁড়াত। তা সত্ত্বেও এটি প্রায় দুই দশক ধরে কুষ্ঠ চিকিৎসায় প্রধান অবলম্বন হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছিল। কিন্তু, ৬০-এর দশকে এসে Mycobacterium leprae ডেপসনের প্রতি রজিস্ট্যান্ট হয়ে উঠতে শুরু করে। এ সময়টাতে রিফামপিসিন ও ক্লোফাজিমিন নামের দুটি এন্টিবায়োটিক আবিষ্কৃত হয়। কুষ্ঠ চিকিৎসায় ডেপসনের সঙ্গে এ দুটি এন্টিবায়োটিক যোগ করে দেখা গেল, ওষুধ তিনটির সমন্বিত চিকিৎসা বেশ কার্যকর। তখন থেকে কুষ্ঠের চিকিৎসায় এই মাল্টি ড্রাগ থেরাপি (এমডিটি) চলে আসছে। এ পদ্ধতিতে চিকিৎসা শুরুর পর দ্রুত রোগীর অবস্থায় উন্নতি দেখা দেয়। তবে, রোগ যাতে ফিরে না আসে তা নিশ্চিত করতে দুই বছরের মতো চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন হতে পারে।

কুষ্ঠ রোগের জন্য দায়ী জীবাণু Mycobacterium leprae রোগীর হাঁচি-কাশির সময় নির্গত জলীয় কণার সঙ্গে বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে। জিনগত বৈশিষ্ট্যের বিচারে সংবেদনশীল কোনো দুর্বল রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন লোক যদি দীর্ঘদিন এ ধরনের রোগীর সান্নিধ্যে থাকে এবং বার বার হাঁচি-কাশির মাধ্যমে বের হওয়া জীবাণু শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে গ্রহণ করে, তাহলে এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে। এখানে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জীবাণুর সংস্পর্শে আসলেও ৯৫ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার কল্যাণে এ রোগে আক্রান্ত হয় না। শারীরিক সংস্পর্শের মাধ্যমে এ রোগ ছড়ানোর সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। কারণ, এ রোগের জীবাণু অক্ষত ত্বক ভেদ করে শরীরে প্রবেশ করতে পারে না। সাধারণত জীবাণু শরীরে প্রবেশের তিন থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে এ রোগের লক্ষণ দেখা দেয়। ক্ষেত্রবিশেষে লক্ষণ প্রকাশ পেতে এমনকি ১৫ থেকে ২০ বছরও লেগে যেতে পারে। প্রাথমিকভাবে এ রোগে প্রান্তিক স্নায়ুসমূহ, ত্বক, চক্ষু ও শ্বসনতন্ত্রের উপরের অংশের শ্লেষ্মাঝিল্লি আক্রান্ত হয়। ত্বকে ছোপ ছোপ দাগ/ গোটা গোটা দানা ও পরবর্তীতে ক্ষত, এ সব অংশে অনুভূতি হ্রাস/ বিলোপ, হাত-পায়ে অবশ ভাব ও দুর্বলতা এবং মুখমণ্ডল ও কানের লতিতে ফোলা ভাব দেখা দিতে পারে। চিকিৎসা নেওয়া না হলে, আরও পরে তা অঙ্গ বিকৃতি/ অঙ্গ হানি, হাত-পায়ের নড়া-চড়ায় সমস্যা, এমনকি অন্ধত্বের মতো পরিণতি হতে পারে।

মাল্টি ড্রাগ থেরাপি (এমডিটি) প্রবর্তনের পর থেকে বিশ্বে কুষ্ঠ নিয়ন্ত্রণে অনেক অগ্রগতি হয়েছে। পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, ৮০-এর দশকে যেখানে বিশ্বে কুষ্ঠ রোগীর সংখ্যা ছিল ৫২ লাখ, তা এখন দুই লাখে নেমে এসেছে। তবে, যে বিষয়টি এখনো যথেষ্ট উদ্বেগের তা হল, বিগত ১০ বছরের পরিসংখ্যানে নজর দিলে দেখা যায়, প্রতি বছর দুই লাখের উপর নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০১৯ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এর ৫৬ শতাংশই শনাক্ত হয়েছে ভারতে। এরপর একাধিক্রমে রয়েছে ব্রাজিল (১৩.৬%), ইন্দোনেশিয়া (৮.৫%), নেপাল (১.৯%) ও বাংলাদেশ (১.৮%)।  ২০১০ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ১০ বছরে প্রায় প্রতি বছরই বাংলাদেশে নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা সাড়ে তিন থেকে চার হাজারের মধ্যে ছিল। বিশ্বে কুষ্ঠে আক্রান্ত রোগীর প্রকৃত সংখ্যা অনেক বেশি হতে পারে। ধারণা করা হয়, প্রায় ৪০ লাখের মতো রোগী শনাক্তকরণের অপেক্ষায় আছে, দক্ষ চিকিৎসক এবং অপ্রতুল স্বাস্থ্য সেবার অভাবে যাদের এখনও শনাক্ত করা যায়নি।

বাংলাদেশে সরকারি/ বেসরকারি উদ্যোগে কুষ্ঠ নির্মূলে জোরালো কর্মসূচি চলমান রয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ঘোষিত কুষ্ঠ রোগীর সংখ্যা প্রতি দশ হাজারের মধ্যে এক জনে নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা সেই ১৯৯৮ সালেই অর্জিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ২০৩০ সালের মধ্যে কুষ্ঠমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে সবাইকে কাজ করে যেতে আহ্বান জানিয়েছেন। এ লক্ষ্যকে সামনে রেখে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশের ন্যাশনাল লেপ্রোসি প্রোগ্রাম বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গ্লোবাল লেপ্রোসি স্ট্রাটেজি (২০১৬-২০২০)-এর আলোকে প্রণীত ন্যাশনাল লেপ্রোসি স্ট্রাটেজি বাস্তবায়নে সচেষ্ট ছিল।

দেশে সরকারি ব্যবস্থাপনায় কুষ্ঠ চিকিৎসার জন্যে তিনটি বিশেষায়িত হাসপাতাল আছে। তাছাড়া, একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত নিবন্ধের তথ্য অনুসারে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে শুরু করে জেলা সদর ও মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ অন্যান্য সরকারি হাসপাতালে কুষ্ঠ রোগের চিকিৎসার ব্যবস্থা আছে। এ সব হাসপাতালে রোগ নির্ণয়ের জন্য জীবাণু নিরূপণ, স্কিন বায়োপ্সি, নার্ভ বায়োপ্সি ও অন্যান্য ইমিউনোলজিক্যাল পরীক্ষারও ব্যবস্থা আছে। দ্য লেপ্রোসি মিশন ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিএলএমআই-বি) সহ বিভিন্ন বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনও হাসপাতাল ও ক্লিনিকের মাধ্যমে কুষ্ঠরোগীর চিকিৎসা করে যাচ্ছে। উপরন্তু, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অর্থায়নে কুষ্ঠ রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধগুলো (এমটিডি) বিনামূল্যে সরবরাহ করা হয়। মোট কথা, দেশে কুষ্ঠ চিকিৎসার ব্যবস্থাপনা নেহাত মন্দ নয়। তবে, হ্যাঁ, রোগের এডভান্সড স্টেজে অনেক রোগীর অনেক ধরনের শারীরিক বৈকল্য দেখা দেয়, যাতে শল্য চিকিৎসাসহ সহ বিশেষায়িত চিকিৎসার প্রয়োজন হতে পারে। এজন্যে বিশেষ দক্ষতাসম্পন্ন চিকিৎসক ও উন্নত যন্ত্রপাতি এবং সঙ্গত কারণেই প্রচুর অর্থের যোগানের প্রয়োজন হতে পারে, যা হয়তো এখনও চাহিদার নিরিখে যথেষ্ট নয়।

যে প্রশ্নটি এখানে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দেখা দেখা দেয় তা হল, এত কিছুর পরেও বছর-ওয়ারি নতুন রোগী শনাক্তের পরিসংখ্যানের দিকে নজর দিলে কি মনে হয় না, আমরা গত দশ বছর ধরে এক জায়গায় স্থবির হয়ে দাঁড়িয়ে আছি। মনে রাখা দরকার, নতুন রোগী শনাক্তের সংখ্যার বিচারে আমরা বিশ্বে শীর্ষ পাঁচের মধ্যে অবস্থান করছি। কাজেই, আমরা যদি কুষ্ঠ মুক্ত দেশ গড়তে চাই, আমাদের এ জায়গাটায় বিশেষভাবে মনোযোগ নিবদ্ধ করা দরকার। রোগের বিস্তার ঠেকাতে হবে, নতুন নতুন রোগী সৃষ্টির রাস্তা বন্ধ করতে হবে। তা কিভাবে সম্ভব? দেখা গেছে, মাল্টি ড্রাগ থেরাপি শুরুর কিছু দিনের মধ্যেই রোগীর রোগ ছড়ানোর ক্ষমতা লোপ পায়। এছাড়াও, রোগের প্রাথমিক অবস্থায় রোগীকে চিকিৎসার আওতায় আনা গেলে তিনি পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠতে পারেন, কোন অঙ্গহানির আশঙ্কা থাকে না। কাজেই, আমাদের যেটা দরকার তা হলো, দেশের কুষ্ঠপ্রবণ এলাকাগুলোতে সম্ভাব্য কুষ্ঠ রোগীদের যথাসম্ভব রোগের প্রাথমিক পর্যায়েই শনাক্ত করে চিকিৎসার আওতায় নিয়ে আসার জন্য একটি ক্রাশ প্রোগ্রাম হাতে নেওয়া। এটার জন্যে কুষ্ঠের উপসর্গ সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করার জন্য ব্যাপকভিত্তিক গণপ্রশিক্ষণ ও প্রচারণা কার্যক্রম হাতে নিতে হবে। স্কুল-কলেজ ও মসজিদ-মাদ্রাসার মতো সংগঠন এবং এলাকার সামাজিক-রাজনৈতিক সংগঠনগুলোকে এর জন্য কাজে লাগানো যেতে পারে। এলাকার প্রকৃত ডাক্তারদের পাশাপাশি গ্রাম্য ডাক্তার ও ওষুধের দোকানদারের মতো লোকজন যাদের কাছে আর্থিকভাবে অসচ্ছল লোকেরা বিপুল সংখ্যায় ভিড় জমায়, কুষ্ঠ রোগী শনাক্তে তাদেরকেও প্রশিক্ষণের আওতায় আনা যেতে পারে। এতে করে, কোন লোকের মধ্যে কুষ্ঠের লক্ষণ দেখা গেলেই দ্রুত তাকে চিকিৎসার জন্য পরামর্শ দেওয়ার সুযোগ তৈরি হবে। জনসচেতনতা সৃষ্টিতে দেশের গণমাধ্যমগুলো বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারে। সর্বোপরি, এটি যেহেতু মূলত একটি জনস্বাস্থ্য সমস্যা, সামগ্রিক পরিকল্পনা তৈরি ও বাস্তবায়নে জনস্বাস্থ্যবিদদের সক্রিয়ভাবে কাজে লাগানো গেলে ভালো ফল আশা করা যেতে পারে।

ড. মুহম্মদ দিদারে আলম মুহসিন: অধ্যাপক, ফার্মেসি বিভাগ, জাবি

(দ্য ডেইলি স্টারের সম্পাদকীয় নীতিমালার সঙ্গে লেখকের মতামতের মিল নাও থাকতে পারে। প্রকাশিত লেখাটির আইনগত, মতামত বা বিশ্লেষণের দায়ভার সম্পূর্ণরূপে লেখকের, দ্য ডেইলি স্টার কর্তৃপক্ষের নয়। লেখকের নিজস্ব মতামতের কোনো প্রকার দায়ভার দ্য ডেইলি স্টার নিবে না।)

Comments

The Daily Star  | English

DMCH doctors threaten strike after assault on colleague

A doctor at Dhaka Medical College Hospital (DMCH) was allegedly assaulted yesterday after the death of a private university student there, with some of his peers accusing the physicians of neglecting their duty in his treatment

4h ago