অনন্ত বিজয় হত্যা মামলায় দুই জনের সাক্ষ্যগ্রহণ
মুক্তমনা বিজ্ঞান লেখক ও ব্লগার অনন্ত বিজয় দাশ হত্যা মামলায় আরও দুই জনের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। এ নিয়ে এ মামলার ২৯ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হলো।
বুধবার সিলেট সন্ত্রাস বিরোধী ট্রাইব্যুনালে দুই জনের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয় বলে দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন বাদিপক্ষের আইনজীবী এমাদ উল্লাহ শহীদুল ইসলাম শাহীন।
অনন্ত বিজয় হত্যা মামলার আসামি মান্নান ইয়াহিয়া ওরফে মান্নান রাহীর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি লিপিবদ্ধকারী বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট আনোয়ারুল হক এবং পূবালী ব্যাংকের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা সিরাজুল হক চৌধুরী আজ সাক্ষ্য দেন।
আজ কারাগারে আটক আসামি আবুল খায়ের রশিদ আহমদকে সিলেট কারাগার থেকে এবং শফিউর রহমান ফারাবী ঢাকা কারাগার থেকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। দুই আসামির উপস্থিতিতে সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. নুরুল আমিন বিপ্লব মামলার পরবর্তী তারিখ আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি ধার্য্য করেন বলেও জানান এ আইনজীবী।
২০১৫ সালের ১২ মে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে কর্মস্থলে যাওয়ার জন্য সিলেট নগরীর সুবিদবাজার এলাকার নূরানী আবাসিক এলাকার বাসা থেকে বের হলে অনন্তের ওপর চাপাতি নিয়ে হামলা চালায় চার অস্ত্রধারী। চাপাতির আঘাতে গুরুতর আহত অনন্ত হাসপাতালে নেওয়ার আগেই মারা যান।
হত্যাকাণ্ডের দিনই অনন্ত বিজয়ের বড় ভাই রত্নেশ্বর দাশ সিলেটের বিমানবন্দর থানায় অজ্ঞাত চার জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। সেখানে অভিযোগ করা হয় যে বিজ্ঞান বিষয়ে লেখালেখির কারণে অনন্তকে ‘উগ্র ধর্মান্ধ গোষ্ঠী’ পরিকল্পিতভাবে খুন করেছে।
মামলাটি তদন্ত পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) স্থানান্তরের ২ বছর পর ২০১৭ সালের ৯ মে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেন সিআইডির পরিদর্শক আরমান আলী। এতে সন্দেহভাজন ১০ জনকে অব্যাহতির সুপারিশ করে ছয় জনকে অভিযুক্ত করা হয়।
অভিযুক্তরা হলেন— সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার আবুল হোসেন, খালপাড় তালবাড়ির ফয়সাল আহমদ, সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের বীরেন্দ্রনগরের (বাগলী) মামুনুর রশীদ, কানাইঘাটের পূর্ব ফালজুর গ্রামের মান্নান ইয়াইয়া ওরফে মান্নান রাহী ওরফে এবি মান্নান ইয়াইয়া ওরফে ইবনে মঈন, কানাইঘাটের ফালজুর গ্রামের আবুল খায়ের রশীদ আহমদ ও সিলেট নগরের রিকাবীবাজার এলাকায় বসবাসকারী সাফিউর রহমান ফারাবী ওরফে ফারাবী সাফিউর রহমান।
এর মধ্যে ফারাবী ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যা মামলারও আসামি এবং অভিযুক্ত মান্নান রাহী ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে থাকা অবস্থায় ২০১৭ সালের ২ নভেম্বর অসুস্থ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। এর মধ্যে কেবল মান্নান রাহীই অনন্ত হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছিলেন। এ মামলায় অভিযোগ গঠন শেষে গত বছরের ৭ মে সিলেটের অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। সাক্ষীদের অনুপস্থিতিতে বারবার পেছানো এ মামলা সম্প্রতি সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়।
আরও পড়ুন-
Comments