গাজীপুর

ঋণ শোধ করতে না পারায় মা-মেয়েকে গাছে বেঁধে নির্যাতন, গ্রেপ্তার ১

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলায় সুদে আনা ঋণ পরিশোধ করতে না পারায় মা-মেয়েকে গাছে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে পাওনাদারের লোকজনের বিরুদ্ধে।
Gazipur.jpg
পাওনাদারের লোকজন মা-মেয়েকে গাছে বেঁধে নির্যাতন করেন। ছবি: সংগৃহীত

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলায় সুদে আনা ঋণ পরিশোধ করতে না পারায় মা-মেয়েকে গাছে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে পাওনাদারের লোকজনের বিরুদ্ধে।

গতকাল উপজেলার সিরাপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনোয়ার হোসেন চৌধুরী দ্য ডেইলি স্টারকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, এ ঘটনায় নির্যাতিত নারী বাদী হয়ে আট জনকে অভিযুক্ত করে কালিয়াকৈর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। প্রাথমিক তদন্তে প্রমাণ পাওয়ায় ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী সবুজকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা গেছে, ভুক্তভোগীরা হলেন- কালিয়াকৈর উপজেলার সিরাজপুর এলাকার মৃত আব্দুর রশিদের স্ত্রী মমতাজ বেগম (৩০) ও তার মেয়ে মাহবুবা আক্তার ঝুমা (১৬)। মমতাজ স্থানীয় একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। ঝুমা মনিপুর আইডিয়াল পাবলিক স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী।

প্রায় পাঁচ বছর আগে মমতাজ বেগমের স্বামী আব্দুর রশিদ মারা যান। এরপর থেকে তিনি একমাত্র মেয়েকে নিয়ে বন বিভাগের জমিতে বসবাস করে আসছেন। অভাব-অনটনের মধ্যে কোনোরকমে মা-মেয়ের সংসার চলছে। সম্প্রতি মমতাজ এক ‘জিনের বাদশা’র খপ্পরে পড়েন। সংসারের সচ্ছলতা ফিরিয়ে দেবে এমন প্রতিশ্রুতিতে জিনের বাদশা তার কাছে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করে।

মমতাজ বেগম জানান, জিনের বাদশার ওই টাকা যোগাড় করতে তিনি স্থানীয় গফুর ড্রাইভার ও মনির হোসেনসহ কয়েকজনের কাছ থেকে সুদে ঋণ নিয়েছেন। কিন্তু ঋণের টাকা পরিশোধ করতে পারেননি। টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য ইব্রাহীম তাকে এক মাস সময় দিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘আমি ওই টাকা ফেরত দেব। কিন্তু সময় শেষ হওয়ার আগেই পাওনাদাররা বৃহস্পতিবার আমার বাড়ি ঘেরাও করে। তারা আমাকে ও মেয়েকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন চালিয়েছে।’

পরে স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে আহত অবস্থায় মা-মেয়েকে উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার পর অভিযুক্তরা পালিয়ে গেছে।

এ ঘটনায় মমতাজ বেগম বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার রাতে কালিয়াকৈর থানায় আট জনকে অভিযুক্ত করে একটি মামলা দায়ের করেছেন।

অভিযুক্ত আব্দুল গফুর ড্রাইভার জানান, টাকা আদায়ের জন্য তাদের চাপ দেওয়া হয়েছে। কাউকে মারধর বা গাছে বেঁধে নির্যাতন করা হয়নি।

‘আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে’, বলেন তিনি।

ফুলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য ইব্রাহীম সিকদার বলেন, ‘ঘটনা শুনে ওই বাড়িতে গিয়ে দেখি মা-মেয়েকে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর করা হচ্ছে। পরে তাদের সেখান থেকে উদ্ধার করেছি। ঘটনাটি দুঃখজনক।’

ওসি মনোয়ার হোসেন চৌধুরী জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে নির্যাতিত মা-মেয়েকে উদ্ধার করা হয়েছে। রাতে অভিযোগ দেওয়ার পর মামলা নেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী সবুজকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

India withdraws high commissioner, diplomats from Canada

'We have no faith in the current Canadian government's commitment to ensure their security. Therefore, the government of India has decided to withdraw the High Commissioner and other targeted diplomats and officials,' says the Indian Ministry of External Affairs

34m ago