মিয়ানমারে ২৩ হাজার বন্দির মুক্তি, আন্দোলনে হামলার আশঙ্কা
মিয়ানমারে ইউনিয়ন দিবস উপলক্ষে ৫৫ জন বিদেশি নাগরিকসহ ২৩ হাজারেরও বেশি বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার আদেশ দিয়েছে ক্ষমতাসীন সামরিক সরকার।
আজ শুক্রবার এক প্রতিবেদনে বিবিসি জানায়, জাতীয় দিবসগুলোতে বহু বন্দিদের ক্ষমা করে দেওয়ার বিষয়টি দেশটিতে প্রচলিত আছে। প্রায়শই উপচে পড়া কারাগারে বন্দির সংখ্যা কমাতে এটি করা হয়ে থাকে।
তবে দেশটিতে সেনা অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে আন্দোলনরত কর্মীদের আশঙ্কা, তাদের ওপর হামলা চালিয়ে আন্দোলন বানচাল করতে বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হতে পারে।
সেনা অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে মান্দালে শহরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী তাইজার সান বিবিসিকে জানান, বিক্ষোভকারীদের হামলা করার জন্যই বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হয়েছে বলে তিনি আশঙ্কা করছেন।
তিনি বলেন, ‘জনগণের কাছে খুব খারাপ নজির আছে। ১৯৮৮ সালে সামরিক জান্তা সামরিকপন্থী বন্দীদের মুক্তি দিয়েছিল। সেসময় তারা গণতন্ত্রের পক্ষে জনগণের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকে নষ্ট করে।’
১৯৮৮ সালের গণতন্ত্রপন্থী বিদ্রোহে হামলার ঘটনায় কয়েক হাজার মানুষ মারা গিয়েছেন বলে ধারণা করা হয়।
আজ শুক্রবার মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে নতুন করে গণবিক্ষোভ শুরু হয়েছে। ক্ষমতাসীন সেনাবাহিনী দেশের জনগণের কাছে সহযোগিতার আহ্বান জানালেও তা প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন বিক্ষোভকারীরা।
দেশটির ইউনিয়ন দিবসের ছুটিতে জেনারেল মিন অং হ্লাইং ‘বিভক্ত’ না হয়ে সবাইকে ‘ঐক্যবদ্ধ’ হওয়ার আহ্বান জানান।
বৃহস্পতিবার জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে জেনারেল হ্লাইং বলেন, যারা প্রতিবাদে নেমেছেন তাদেরকে মিথ্যা প্ররোচনা দেওয়া হয়েছে। জনগণকে আবারও ‘আবেগী না হয়ে’ দেশের জন্য কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
এ ছাড়াও, তিনি মহামারির কথা উল্লেখ করে সবাইকে ঘরে থাকার আহ্বান জানান।
তবে শুক্রবারও অং সান সু চিসহ আটককৃত নির্বাচিত নেতাদের মুক্তির দাবিতে চলমান বিক্ষোভ অব্যাহত আছে।
বেশিরভাগ আন্দোলনই শান্তিপূর্ণ ছিল। তবে রেডিও ফ্রি এশিয়া সংবাদমাধ্যমের ফুটেজে মাওলামাইন শহরে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশের সহিংস প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। সেখানে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে রাবার বুলেট ছুঁড়েছে পুলিশ।
রেডক্রসের এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানান, রাবার বুলেটে তিন জন আহত হয়েছেন। বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গুন, রাজধানী নেপিডো, উপকূলীয় শহর দাউয়েই ও মাইতকাইনা প্রদেশেও বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে।
Comments