পঞ্চগড়ের ঘাগড়া সীমান্ত থেকে পুলিশ সদস্যকে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ
পঞ্চগড়ের ঘাগড়া সীমান্তের মমিনপাড়া এলাকা থেকে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) ওমর ফারুক (২৪) নামে এক কনস্টেবলকে ধরে নিয়ে গেছে।
গতকাল রোববার রাত সাড়ে ৮টার দিকে সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের ঘাগড়া সীমান্তের মমিনপাড়া এলাকার ৭৫৩ নম্বর মেইন পিলারের ৮ নম্বর সাব পিলারের কাছে এ ঘটনা ঘটে।
ওমর ফারুক কী কারণে ওই এলাকায় গিয়েছিলেন সে বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
বিএসএফের হাতে আটক হওয়া ওমর ফারুক পঞ্চগড় পুলিশ লাইন্সে কর্মরত ছিলেন এবং পঞ্চগড় জেলা জজ আদালতের বিচারকদের নিরাপত্তারক্ষী হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন বলে নিশ্চিত করেছেন পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু আককাস আহমদ।
রাতেই ওই সীমান্ত এলাকার একটি বাজার থেকে স্থানীয়দের সহায়তায় ওমর ফারুকের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
ঘটনাস্থলের পাশের গ্রামের বাসিন্দা আমিরুল ইসলাম (৪২) বলেন, ‘সীমান্তের ওপারের গ্রামে ভারতীয় বাসিন্দাদের কাছে আমরা জেনেছি রোববার রাতে ওমর ফারুক নামে ওই পুলিশ সদস্যসহ মোট তিন জনের সঙ্গে ভারতীয় মাদক ব্যবসায়ীদের বাকবিতণ্ডা হয়। এসময় তারা একজন মাদক ব্যবসায়ীর হাতে হাতকড়া পড়াতে গেলে ভারতীয়রা ক্ষুব্ধ হয়ে তাদের ধাওয়া দিয়ে ওমর ফারুককে আটক করে নিয়ে যায়। এসময় ওমর ফারুকের সঙ্গে থাকা অপর দুজন পালিয়ে আসতে সামর্থ্য হয়।’
‘শুনেছি আটকের পর ওই পুলিশ সদস্যকে বেধড়ক মারধর করে বিএসএফের চানাকিয়া ক্যাম্পের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করলে তাকে ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়,’ বলে যোগ করেন তিনি।
হাড়িভাসা ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ইউসুফ আলী বলেন, ‘রোববার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ওমর ফারুক নামে ওই পুলিশ সদস্যসহ তিন জন মমিনপাড়া এলাকায় ভারতীয় সীমান্তের কাছে যান। এ সময় তাদের সঙ্গে ভারতীয় কয়েকজন নাগরিকের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে ভারতীয়রা ওমর ফারুককে মারধর করে ধরে নিয়ে যেতে উদ্যত হলে অপর দুজন পালিয়ে আসে। পরে রাতেই খবর পেয়ে বিজিবি ও পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। স্থানীয় টেনশন মার্কেট নামের বাজারে রাখা ওমর ফারুকের মোটরসাইকেলটি নিয়ে গেছে পুলিশ।’
নীলফামারী ৫৬ বিজিবির আওতাধীন ঘাগড়া সীমান্ত ফাঁড়ির কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার নুরুল আমিন বলেন, ‘রোববার রাতে মমিনপাড়া এলাকায় এক ব্যক্তিকে ভারতীয়রা ধরে বিএসএফের হাতে তুলে দিয়েছে বলে আমরা স্থানীয়দের কাছে জানতে পারি। পরে রাতেই বিএসএফের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা যায়, তার নাম ওমর ফারুক। তবে তিনি পুলিশ সদস্য কি না তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।’
আজ সোমবার সকাল থেকে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানার জন্য বিএসএফের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে বলে যোগ করেন তিনি।
পঞ্চগড়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইউসুফ আলী আজ দুপুরে বলেন, ‘এ ঘটনায় তদন্ত চলছে। বিজিবির মাধ্যমে পুরো ঘটনা জানার চেষ্টা করছি আমরা। পুরোপুরি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলা যাচ্ছে না।’
Comments