শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলায় ১০ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল

দেশটাকে তো জাহান্নাম বানিয়ে ফেলেছেন
স্টার ফাইল ফটো
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার মামলায় ১০ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন আদালত। আজ বুধবার বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. বদরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
 
রায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত এক আসামি ও ১৪ বছর করে কারাদণ্ডপ্রাপ্ত তিন আসামির মধ্যে একজনকে খালাস দিয়েছেন আদালত।
 
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন— ওয়াসিম আখতার ওরফে তারেক, রাশেদ ওরফে আবুল কালাম, ইউসুফ ওরফে মোশাব মোড়ল, শেখ ফরিদ ওরফে মাওলানা শওকত ওসমান, হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর, মাওলানা আবু বক্কর ওরফে হাফেজ সেলিম হাওলাদার, হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আবদুল হাই ও মাওলানা আবদুর রউফ ওরফে আব্দুর রাজ্জাক।
 
আদালত যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মেহেদী হাসান ওরফে আব্দুর ওয়াদুদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল রেখেছেন। সেই সঙ্গে আনিসুল ইসলাম ও মহিবুল্লাহকে নিম্ন আদালতের দেওয়া ১৪ বছরের কারাদণ্ড বহাল রেখেছেন। তবে ইতোমধ্যে ১৪ বছর কারাভোগ করায় হাইকোর্ট বিভাগ তাদের মুক্তি দিতে কর্তৃপক্ষকে আদেশ দিয়েছেন।
 
রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মো. মোরশেদ ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. মো. বশির উল্লাহ। আসামিপক্ষে শুনানি করে রাষ্ট্র নিয়োগকৃত আইনজীবী অমূল্য কুমার সরকার। এ ছাড়া আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. নাসির উদ্দিন ও মোহাম্মদ আহসান।
 
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, অভিযুক্তরা গুরুতর এবং ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ করেছেন। তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ৭৬ কেজি ওজনের বোমা পুঁতে রেখেছিলেন। সেই বোমাটির বিস্ফোরণ হলে ২০০৪ সালের ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার মতো ভয়াবহ ঘটনা ঘটতো।
 
আসামি পক্ষের আইনজীবীরা বলেন, বিচারিক আদালত শুধুমাত্র হুজি নেতা মুফতি আব্দুল হান্নানের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির ওপর ভিত্তিতে করে এই সাজা দিয়েছিলেন।
 
২০০০ সালের ২১ জুলাই গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় শেখ লুৎফর রহমান সরকারি আদর্শ কলেজ মাঠে প্যান্ডেল তৈরির সময় ৭৬ কেজি ওজনের একটি শক্তিশালী বোমা পাওয়া যায়। সেনাবাহিনীর একটি দল বোমাটি উদ্ধার করে। পরের দিন সেখানে অনুষ্ঠেয় জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য দেওয়ার কথা ছিল। ওই ঘটনায় কোটালীপাড়া থানার পুলিশ হত্যাচেষ্টা এবং বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা করেছিল। পরবর্তী রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা হয়।
 
২০০১ সালের ৮ এপ্রিল অপরাধ তদন্ত বিভাগ মুফতি হান্নানসহ ২৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। তাতে ৮৩ জনকে সাক্ষী করা হয়। ওই বছরের ২ জুলাই গোপালগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালত ২৫ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। পরবর্তীতে মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয়।
 
২০১৭ সালের ২০ আগস্ট ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২ জঙ্গি সংগঠন হুজি’র ১০ নেতাকে মৃত্যুদণ্ড দেন।
 
এরা হলেন— ওয়াসিম আখতার ওরফে তারেক, রাশেদ ওরফে আবুল কালাম, ইউসুফ ওরফে মোশাব মোড়ল, শেখ ফরিদ ওরফে মাওলানা শওকত ওসমান, হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর, মাওলানা আবু বক্কর ওরফে হাফেজ সেলিম হাওলাদার, হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আবদুল হাই ও মাওলানা আবদুর রউফ ওরফে আব্দুর রাজ্জাক।
 
এ ছাড়া, মেহেদী হাসান ওরফে আব্দুর ওয়াদুদকে যাবজ্জীবন এবং আনিসুল ইসলাম ওরফে আনিস, মোহিবুল্লাহ ওরফে মোফিজুর রহমান এবং সারওয়ার হোসেন মিয়াকে ১৪ বছরের কারাদণ্ড দেন বিচারিক আদালত।
 
অভিযুক্তদের মধ্যে ১৩ জন কারাবন্দি এবং ১১ জন পলাতক ছিলেন। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ১০ জনকে আদালত খালাস দেন।

Comments

The Daily Star  | English

Depositors leave troubled banks for stronger rivals

Depositors, in times of financial uncertainty, usually move their money away from troubled banks to institutions with stronger balance sheets. That is exactly what unfolded in 2024, when 11 banks collectively lost Tk 23,700 crore in deposits.

10h ago