ভ্যাকসিন কর্মসূচি শুরু করল জাপান
জাপান আজ বুধবার থকে করোনার ভ্যাকসিন কর্মসূচি শুরু করেছে। শুরুতে দেশটির স্বাস্থ্যকর্মীরা ভ্যাকসিন গ্রহণের সুযোগ পাবেন। এ কারণে, জাপানের সাধারণ জনগণের ভ্যাকসিন পেতে আরও অপেক্ষা করতে হবে।
ভ্যাকসিন কর্মসূচিতে জাপানের একশ হাসপাতালের প্রায় ২০ হাজার স্বাস্থ্যকর্মী (ডাক্তার এবং নার্স) স্বেচ্ছায় এগিয়ে এসেছেন।
এর আগে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী কোনো তারো দেশব্যাপী ভ্যাকসিন কর্মসূচির বিস্তারিত তুলে ধরেন।
তিনি জানান, করোনার সম্মুখযোদ্ধাদের দিয়ে এই কর্মসূচি শুরু হবে। ভ্যাকসিনের উপকারিতা ও ঝুঁকির দিকগুলো বিবেচনা করে অনেকেই ভ্যাকসিন নেবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তরুণদের ভ্যাকসিন নেওয়ার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
করোনা ভ্যাকসিনের (ফাইজারের চার লাখ ডোজ) প্রথম চালান গত ১২ ফেব্রুয়ারি বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলস থেকে নারিতা এসে পৌঁছায়। ব্রাসেলসে ফাইজারের ভ্যাকসিন উৎপাদনের কারখানা আছে।
জাপান তিনটি প্রতিষ্ঠান থেকে ভ্যাকসিন সংগ্রহ করছে। এগুলো হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের ফাইজার, মডার্না ও যুক্তরাজ্যের অ্যাস্ট্রাজেনেকা।
জাপানের প্রায় ১২ কোটি ৬০ লাখ জনসংখ্যার জন্য ২৯ কোটি ডোজ ভ্যাকসিনের মূল্য আগেই দিয়ে রেখেছে জাপান। দেশটির সবাইকে বিনামূল্যে দুইবার ভ্যাকসিন দেওয়া হবে।
জাপানে বসবাসরত বিদেশি নাগরিকদেরও বিনামূল্যে ভ্যাকসিন প্রদানের সুবিধার আওতায় আনা হয়েছে।
প্রাথমিকভাবে জাপানের ভ্যাকসিন গ্রহণকারী ৪০ হাজার স্বাস্থ্যকর্মীকে পর্যবেক্ষণের ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে আগামী মার্চ মাসে ৩৭ লাখ সম্মুখসারির স্বাস্থ্যককর্মীকে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। এরপরের ধাপে আছে বয়স্করা। দেশটির ২৬ শতাংশ মানুষের বয়স ৬৫ কিংবা তারও বেশি। সংখ্যার দিক থেকে প্রায় ৩ কোটি ৬০ লাখেরও বেশি। এরপর পর্যায়ক্রমে সবাইকে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে।
জাপানে করোনার ভ্যাকসিন সংরক্ষণে কিছু জটিলতা দেখা দিয়েছিল। কিন্তু, পরে ভ্যাকসিন সংরক্ষণে দেশটির ভ্যাকসিন বুথগুলোতে ২০ হাজার আলট্রাকুল ফ্রিজার স্থাপন করা হয়েছে। কারণ, ফাইজারের ভ্যাকসিন মাইনাস ৭৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করতে হয়। এজন্য উন্নত দেশ এবং আধুনিক প্রযুক্তি থাকা সত্ত্বেও অন্যান্য দেশের তুলনায় জাপান একটু দেরিতে ভ্যাকসিন কর্মসূচি শুরু করেছে।
জাপানে সাধারণত নতুন কোনো ওষুধ কিংবা ভ্যাকসিনের ব্যবহারিক অনুমোদন পেতে প্রায় বছর দুয়েক সময় লেগে যায়। তবে, করোনা পরিস্থিতির আশঙ্কাজনক অবস্থা বিবেচনায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সেই সময় কমিয়েছে।
এ ছাড়াও, আরেকটি উল্লেখযোগ্য কারণ হচ্ছে- আগামী জুলাইয়ে জাপানে বিশ্ব ক্রীড়াজগতের সবচেয়ে বড় আসর টোকিও অলিম্পিক ও প্যারালিম্পিক ২০২০-এর আসর বসতে যাচ্ছে। তার আগেই সরকার করোনা নিয়ন্ত্রণে আনতে চায়।
উল্লেখ্য, জাপানে এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত ৪ লাখ ১৮ হাজারের বেশি জনকে শনাক্ত করা হয়েছে এবং করোনায় মারা গেছেন ৭ হাজার ২৪৫ জন।
বর্তমানে জাপানের রাজধানী টোকিওসহ ১০টি প্রিফেকচারে জরুরি অবস্থা চলছে, যা আগামী ৭ মার্চ পর্যন্ত বহাল থাকবে।
Comments