কাদের মির্জার গ্রেপ্তারের দাবিতে নোয়াখালীতে হেফাজতের সমাবেশ
![abdul-kader-mirza_collected_0.jpg abdul-kader-mirza_collected_0.jpg](https://bangla.thedailystar.net/sites/default/files/styles/big_202/public/feature/images/abdul-kader-mirza_collected_0_0.jpg?itok=GkI5YHhE×tamp=1611391688)
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই ও নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার গ্রেপ্তার ও মেয়র পদ থেকে বহিষ্কারের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ।
আজ বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে জেলা শহরের মাইজদীর বড় মসজিদ মোড়ে এই বিক্ষোভ সমাবেশ ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
হেফাজত সূত্রে জানা গেছে, কাদের মির্জার ইসলাম বিদ্বেষী ও অশালীন বক্তব্য প্রত্যাহার, ধর্মীয় নেতাদের নিয়ে মিথ্যা বক্তব্য ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং মাদরাসা বন্ধের প্রতিবাদে এই বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে হেফাজতে ইসলাম।
সমাবেশে হেফাজতে ইসলাম ছাড়াও জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডসহ (বেফাক) অন্যান্য ইসলামী সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নেন।
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নোয়াখালী জেলা আমির শিব্বির আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক।
হেফাজতের নেতা আজিজুল হক প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, ‘আপনার দলের সাধারণ সম্পাদকের ছোট ভাই আবদুল কাদের মির্জা ধর্মীয় নেতাদের গায়ে হাত তুলেছেন। তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি ও অপমান করেছেন। কিন্তু, ওবায়দুল কাদের সাহেব এ ব্যাপারে মুখ খোলেননি এবং কোনো বক্তব্য দেননি। ওবায়দুল কাদের সাহেব আপনি আপনার অবস্থান ক্লিয়ার করুন। না হলে আমরা ধরে নেব আপনিও মির্জা কাদেরের অপকর্মের সঙ্গে জড়িত। মির্জা কাদেরকে যদি গ্রেপ্তার করে বিচার করা না হয়, তাহলে দেশের ধর্মীয় নেতারা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘মির্জা কাদের ধর্মীয় নেতাদের গায়ে হাত তুলে প্রমাণ করেছেন তিনি দেশ ও আইনের শত্রু। অথচ তারা সাংবিধানিক স্বীকৃতি নিয়ে দেশে ধর্ম প্রচার করছে। তারা সরকারকে সহযোগিতা করছে। সেক্ষেত্রে মির্জা কাদের তাদের গায়ে হাত তুলে বড় অন্যায় করেছেন।’
মির্জা কাদেরের উদ্দেশে হেফাজতের এই নেতা বলেন, ‘আপনি ওবায়দুল কাদেরের ক্ষমতার বলে বিভিন্ন অপকর্ম করে চলছেন। ডিসি, এসপি, জনপ্রতিনিধি ও এমপিদের বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট ও কল্পনাপ্রসূত একের পর এক বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন। ওবায়দুল কাদের চিরদিন ক্ষমতায় থাকবেন না। আপনার বাহাদুরিও বেশিদিন চলবে না। শুধু একবার বলেন খেলা হবে। তখন বুঝিয়ে দিব খেলা কাকে বলে।’
বিক্ষোভকারীরা নোয়াখালী জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপিও প্রদান করেন।
হেফাজতের সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন- নিজাম উদ্দিন মীরওয়ারিশ পুরী, ছিদ্দিকুর রহমান, ইয়াছিন আরাফাত, ছিদ্দিক আহমদ নোমান, কবির আহমদ, রুহুল আমিন চৌধুরী, আতিক উল্যাহ, গিয়াস উদ্দিন প্রমুখ।
এ বিষয়ে কথা বলতে আবদুল কাদের মির্জার সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
তবে, তার ব্যক্তিগত সহকারী নাসিরউদ্দিন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘উনি মিটিংয়ে ব্যস্ত আছেন। এজন্য তার মোবাইল বন্ধ আছে। এই মুহূর্তে তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব নয়।’
নোয়াখালী জেলা প্রশাসক মো. খোরশেদ আলম বলেন, ‘হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সমর্থকরা বুধবার সন্ধ্যায় আমার কাছে একটি স্মারকলিপি দিয়েছেন।’
উল্লেখ্য, গত বুধবার রাতে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নিজ উপজেলা কোম্পানীগঞ্জের বড় রাজাপুর গ্রামের ছিদ্দিকিয়া নুরানী মাদরাসা কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে একটি ওয়াজ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বসুরহাট পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক কমিটির সহসভাপতি আবদুল কাদের মির্জা। ওই ওয়াজ মাহফিলে উস্কানিমূলক বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে আবদুল কাদের মির্জা ওয়াজ মাহফিলের বক্তা মো. ইউনুছ ও ইমরান হোসেনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন। থানা পুলিশ আটকৃতদের বক্তব্য পর্যালোচনা করে গত বৃহস্পতিবার ৫৪ ধারায় আটক দেখিয়ে নোয়াখালী চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠান। শুনানি শেষে আদালত তাদের জামিনে মুক্তি দেন। এই ঘটনায় হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশসহ অন্যান্য ধর্মীয় সংগঠনের নেতারা মির্জা কাদেরের ওপর ক্ষুব্ধ হন।
Comments