ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে চাঁদা নেওয়ার অভিযোগে ২ পুলিশসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা

মাদারীপুরে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে এক বিকাশ এজেন্টের কাছ থেকে চাঁদা নেওয়ার অভিযোগে দুই পুলিশ সদস্যসহ তিন জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে মাদারীপুর জেলার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সাইদুর রহমানের আদালতে মামলাটি করেন বিকাশ এজেন্ট সুজন শেখ।

আদালতে শুনানি শেষে বিচারক মামলাটি গ্রহণ করেন এবং পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দেন। আগামী ২৫ মার্চ মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।

অভিযুক্ত আসামিরা হলেন- দত্তপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মাহাবুব রহমান ও কনস্টেবল সোহাগ এবং শিবচরের সূর্যনগর এলাকার টুম্পা টেলিকম অ্যান্ড মোবাইল কর্নারের প্রোপাইটর টোকন ব্যাপারী।

মামলার এজাহারে বলা হয়, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি দুপুর তিনটার দিকে পদ্মা সেতু ভ্রমণ শেষে মোটরসাইকেলে বাড়িতে ফিরছিলেন সুজন। মাদারীপুরের শিবচরের সূর্যনগর এলাকায় পৌঁছালে সুজনের মোটরসাইকেল থামিয়ে সাদা পোশাকে থাকা দত্তপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এএসআই মাহাবুব ও কনস্টেবল সোহাগ কাগজপত্র দেখতে চান। সুজন কাগজপত্র দেখালে তা সঠিক নয় উল্লেখ করে দুই পুলিশ সদস্য মোটরসাইকেলটিকে চোরাই বলে দাবি করেন। পরে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। সুজন চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাকে ক্রসফায়ারের ভয় দেখান। এসময় সুজনের বিকাশ অ্যাকাউন্ট থাকা ১ লাখ ১০ হাজার টাকা পাশের টোকন ব্যাপারীর দোকান থেকে তুলে নেন তারা। পরে এ ঘটনা কাউকে না বলার শর্তে সুজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

মামলার বাদী সুজন শেখ অভিযোগ করে বলেন, ‘কোনো কারণ ছাড়াই মুঠোফোন থেকে বিকাশের মাধ্যমে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা তুলে নেন ওই দুই পুলিশ সদস্য। আমি আদালতে মামলার নথিতে এর প্রমাণ দিয়েছি।’

অভিযুক্ত এএসআই মাহাবুব রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘এ ঘটনার সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। এটি একটি বানোয়াট ঘটনা।’

অভিযুক্ত কনস্টেবল সোহাগ মিয়া দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘ঘটনার দিন বিকেলে আমাদের ডিউটি ছিল না। আমরা চা খেতে ওই বাজারে গিয়েছিলাম। আমি চায়ের দোকানে চা খাচ্ছিলাম। তখন সেখানে একটি মোটরসাইকেল এসে থামলে আমার স্যার চালকের সঙ্গে কথা বলছিলেন। একপর্যায়ে তাদের মাঝে কথা কাটাকাটি হয়। কিন্তু, আমি কারো সঙ্গে কথা বলিনি। আমি দূর থেকে দেখছিলাম। এর বেশি আমি জানি না। প্রায় ১০ মিনিট পরে মোটরসাইকেলের চালক চলে যান। আজ মামলার বিষয়টি জেনে আমি অবাক হয়েছি।’

দত্তপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ এমদাদুল হক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমি মন্তব্য করতে চাচ্ছি না। বিষয়টি আমাদের ঊর্ধ্বতনরা দেখছেন।’

শিবচর থানার ওসি মো. মিরাজ হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে এখনো কিছুই জানি না।’

মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) মো. আবদুল হান্নান সাংবাদিকদের বলেন, ‘কারো ব্যক্তিগত কোনো দায়ভার বাংলাদেশ পুলিশ নেবে না। যাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, মামলার কপি হাতে পেলে তাদের বিরদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Comments