ইবিতে ৫ শিক্ষার্থীর কারণে সেশনজটে ৮১ জন

ছবি: সংগৃহীত

নিয়মতান্ত্রিক জটিলতায় পাঁচ শিক্ষার্থীর কারণে সেশনজটে পড়েছেন কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ৮১ জন শিক্ষার্থী। ফলে একই শিক্ষাবর্ষের অন্য বিভাগের শিক্ষার্থীরা তাদের থেকে প্রায় দেড় বছরের শিক্ষা কার্যক্রমে এগিয়ে গেছে।

ইবির ব্যবস্থাপনা বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের চার শিক্ষার্থী তৃতীয় বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষায় অকৃতকার্য হন। পরে তারা ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের সঙ্গে পুনরায় তৃতীয় বর্ষে ভর্তি হন। একইসঙ্গে ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের অকৃতকার্য হওয়া একজন শিক্ষার্থীও তাদের সঙ্গে পুনরায় ভর্তি হন। কিন্তু, ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষ থেকে বিভাগে নতুন কারিকুলাম যুক্ত হয়। এতে বছরে দুই সেমিস্টারে ১০টি কোর্সের আওতায় দুটি ভাইভায় ৬০ নম্বর ও ৩০ নম্বরের ইনকোর্স পরীক্ষায় অংশ নেন তারা। কিন্তু, আগের দুই শিক্ষাবর্ষের পাঁচ শিক্ষার্থী পূর্বের কারিকুলাম অনুযায়ী একটি ভাইভায় ৭০ ও ৩০ নম্বরের ইনকোর্স পরীক্ষা দিয়েছিলেন। এ ছাড়া, নতুন কারিকুলামের সঙ্গে পূর্বেরটির পাঁচটি কোর্সেরও অমিল রয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী পুনরায় ভর্তি হওয়া ওই পাঁচ জনের পরীক্ষা সম্পন্ন করে তাদেরকে চলমান ব্যাচের সঙ্গে নিয়মিত শিক্ষার্থী করতে হবে। কিন্তু, কারিকুলামের অমিল থাকায় সমস্যায় পড়তে হয় পরীক্ষা কমিটিকে। এ সমস্যা সমাধানে ২০২০ সালের ২৫ জানুয়ারি জরুরি সভায় বসে পরীক্ষা কমিটি। এতে ওই পাঁচ জনকে নিয়মিত ব্যাচের সঙ্গে পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব নয় বলে সিদ্ধান্তে গৃহীত হয়। ফলে তাদের আলাদা ব্যাচ করে ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের চার জন ও ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের একজনের জন্য আলাদা দুটি পরীক্ষা কমিটি করা হয়।

যখন এই সিদ্ধান্তগুলো একই বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুষদীয় একাডেমিক সভায় আলোচনা হয়, তখনই দেখা দেয় ঝামেলা। বলা হয়, নিয়মতান্ত্রিক কারণে ওই পাঁচ শিক্ষার্থীকে নিয়ে আলাদা ব্যাচ করার সুযোগ নেই। তাদের আলাদা পরীক্ষা নিয়ে নিয়মিত ব্যাচের সঙ্গে চালিয়ে নিতে বলা হয়। কিন্তু তাদের কারিকুলাম, কোর্স, পরীক্ষা পদ্ধতি ভিন্ন হওয়ায় সংকট তৈরি হয়। এর মাঝে করোনার কারণে ক্যাম্পাস বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।

গত ১৪ জানুয়ারি পাঁচ শিক্ষার্থীর বিষয়ে ১১৮তম একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। বিষয়টি সিন্ডিকেটে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক (সম্মান) ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের অন্যান্য বিভাগের শিক্ষার্থীরা চতুর্থ বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন। কিন্তু, ব্যবস্থাপনা বিভাগের একই শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা এখনো তৃতীয় বর্ষই পেরোতে পারেনি। তারা ২০১৯ সালের ১ অক্টোবর তৃতীয় বর্ষের প্রথম সেমিস্টারের পরীক্ষা সম্পন্ন করেছেন। এরপর দ্বিতীয় সেমিস্টারের ক্লাস শেষ হলেও পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি। এতে প্রায় দেড় বছরের সেশনজটে পড়েছেন তারা। করোনার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ায় আরও বিপাকে পড়েন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা।

এ বিষয়ে পরীক্ষা কমিটির সভাপতি মোর্শেদ আলম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘এখানে শিক্ষকদের আন্তরিকতার কোনো অভাব নেই। কিন্তু, আইনি জটিলতার কারণে সময়মতো পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়নি।’

ব্যবস্থাপনা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক এএসএম সরফরাজ নেওয়াজ ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমরা সিন্ডিকেট সভার জন্য অপেক্ষা করছি। আজ সেই সভা অনুষ্ঠিত হবে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার আতাউর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘সিন্ডিকেটের সভায় বিষয়টি উঠবে। আশা করছি তখন এই সমস্যার একটি সমাধানও আসবে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আব্দুস সালাম ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আজ যেহেতু সিন্ডিকেটের সভা হবে, আশা করছি এ বিষয়ে গ্রহণযোগ্য একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যাবে।’

Comments

The Daily Star  | English

Ishraque's supporters padlock Nagar Bhaban

Protesters began gathering around 9:00am, blocking the main gate and occupying nearby roads

10m ago