অনেক গল্পের ফিরে আসার দিনে সুজন ওপেনার, অফ স্পিনারও

মিডিয়াম পেস বোলিংয়ের সঙ্গে লোয়ার অর্ডারে ব্যাটিং। খালেদ মাহমুদ সুজনের দুই ভূমিকা সময়ে সময়ে হয়ে উঠত ভীষণ কার্যকর।
sujon
ছবি: সংগৃহীত

মিডিয়াম পেস বোলিংয়ের সঙ্গে লোয়ার অর্ডারে ব্যাটিং। খালেদ মাহমুদ সুজনের দুই ভূমিকা সময়ে সময়ে হয়ে উঠত ভীষণ কার্যকর। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের উত্থানের সময়ের একটি উদাহরণ তো অমলিন হয়ে থাকবে অনন্তকাল।

১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের ম্যাচ। নর্দাম্পটনে শিরোপাপ্রত্যাশী পাকিস্তানকে ৬২ রানে হারিয়ে সাড়া ফেলে দিয়েছিল প্রথমবারের মতো ক্রিকেটের সর্বোচ্চ আসরে খেলতে যাওয়া বাংলাদেশ।

ব্যাটে-বলে নৈপুণ্যে দেখিয়ে লাল-সবুজদের ঐতিহাসিক জয়ে ম্যাচসেরা হয়েছিলেন সুজন। ছয়ে নেমে ৩৪ বলে ২৭ রান করার পর নতুন বলে ১০ ওভারের কোটা পূরণ করে মাত্র ৩১ রানে তিনি নিয়েছিলেন ৩ উইকেট।

স্মৃতিকাতর হয়ে গেলে এটা জেনে একটু অবাক হতেই হয় যে, জাতীয় ও ঘরোয়া পর্যায়ের সাবেক ক্রিকেটারদের নিয়ে কক্সবাজারে আয়োজিত লিজেন্ডস চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সুজন ব্যাট হাতে নামলেন ওপেনিংয়ে! এরপর বোলিংয়ের সময় বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের বিপক্ষে কৌশল পাল্টে রূপান্তরিত হলেন অফ স্পিনারে!

শুক্রবার জাদুবে স্টার্সের বিপক্ষে এক্সপো রাইডার্সের ম্যাচে দেখা গেল এমন চমক জাগানিয়া দৃশ্য। ওপেনিংয়ে নেমে সুজন ৯ বলে ১৩ রান করে ফেরেন সাজঘরে। এরপর বোলিংয়ে দেখান ঝাঁজ। ২ ওভারে  ৮ রানে তিনি নেন ২ উইকেট। বাংলাদেশের সাবেক এই অধিনায়কের দল এক্সপোও পায় ৫৫ রানের বিশাল জয়।

সুজনের ওপেনিংয়ের নজির অবশ্য জাতীয় দলের জার্সিতেও রয়েছে। ক্যারিয়ারের ৭৭ ওয়ানডের একটিতে তিনি নেমেছিলেন ইনিংসের গোড়াপত্তন করতে। ওই ১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপেই। প্রতিপক্ষ ছিল অস্ট্রেলিয়া। গ্লেন ম্যাকগ্রা-ড্যামিয়েন ফ্লেমিংদের বিপক্ষে ১৯ বলে ৬ রান করে আউট হয়েছিলেন তিনি।

তাছাড়া, খেলোয়াড়ি জীবনে ঘরোয়া ক্রিকেটে অফ স্পিনও করেছেন ৪৯ পেরোনো সুজন। ২০০৪ সালে ঢাকা বিভাগের হয়ে ৫ উইকেটও নিয়েছিলেন তিনি। রংপুর ক্রিকেট গার্ডেনে তার ঘূর্ণির ভেলকিতে দিশেহারা হয়েছিল রাজশাহী বিভাগের ব্যাটসম্যানরা।

এমন পুরনো অনেক গল্পের ফিরে আসার দিনে সুজন বললেন, ‘মাঠে অবশ্যই আমরা লড়াইয়ের চেষ্টা করি।... এখন তো বয়স হয়ে গেছে, আগের মতো আর পারা যায় না। তবু চেষ্টা থাকে লড়াই করার। শরীর সেভাবে অনুমতি দেয় না। কিন্তু মানসিকভাবে তো তাড়না আসেই।’

এদিন শুরুতে মিডিয়াম পেসই করছিলেন সুজন। কিন্তু বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের বিপক্ষে অফ স্পিনার আনানোর বাংলাদেশের যে চিরায়ত নিয়ম, তা এখানেও কাজে লাগান তিনি। তাতে সাফল্যও এসেছে। হুমায়ূন কবিরের স্টাম্প উপড়ে ফেলেন তিনি।

পরের ব্যাটসম্যান ডানহাতি হওয়ায় তিনি ফেরত যান মিডিয়াম পেসে। সেখানেও মেলে উইকেট। এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পড়ে তার দ্বিতীয় শিকার হন জুয়েল হাবিবি। ফিল্ডিং করার সময় লং অনে দারুণ একটি ক্যাচও নেন তিনি।

অফ স্পিন কেন করলেন জানতে চাইলে চওড়া হাসি দিয়ে সুজন জবাব দিলেন, ‘আমি তো অফ স্পিনার ছিলাম না। কিন্তু প্রথম শ্রেণিতে আমার অফ স্পিনে পাঁচ উইকেট আছে, রাজশাহীর বিপক্ষে। তবে বাঁহাতি ব্যাটসম্যান আসলে অফ স্পিন করতে পছন্দ করি। কারণ, বাঁহাতির জন্য কঠিন হয় খেলা।’

সব ধরনের স্বীকৃত ক্রিকেটকে সুজন বিদায় দিয়েছেন প্রায় দেড় যুগ হয়ে গেল। তবে নিছক বিনোদনের জন্য মাঠে নামলেও ক্রিকেটীয় সত্ত্বা তো লালন করেন। সেকারণে এখনও প্রতিদ্বন্দ্বিতার মনোভাবটা চলেই আসে তার মতো সাবেক তারকাদের!

Comments

The Daily Star  | English

Teesta floods bury arable land in sand, leaving farmers devastated

40 unions across 13 upazilas in Lalmonirhat, Kurigram, Rangpur, Gaibandha, and Nilphamari are part of the Teesta shoal region

1h ago